খেলাধুলা

বিশ্ব ফুটবলে লাল-সবুজের বিজ্ঞাপন তারা

এপ্রিলের ৩০ তারিখ থেকে ২১ আগস্ট- এই ১১৪ দিনে তিন তিনবার বাংলাদেশের ফুটবল নিয়ে হৈচৈ পড়েছে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে। ফুটবলের অনিন্দম সুন্দর যে গোল, সেই গোল করে আলোচনায় এসেছেন লাল-সবুজ জার্সিধারী ৩ ফুটবলার।

Advertisement

দেশের ফুটবলের কিছু নেই বলে যারা নাক সিটকান তাদের ভুল ভেঙ্গে দিতেই হয়তো কখনো মনিকা চাকমা, কখনো মামুনুল-সোহেল রানারা পায়ের দৃষ্টিনন্দন শটে নিজেদের এবং দেশকে নিয়ে যান আন্তর্জাতিক অঙ্গনের আলোচনায়। সেরা হয়ে নিজের ক্যারিয়ারে যোগ করে বিশাল অর্জন। সেই সঙ্গে ওপরে তোলেন বাংলাদেশের ফুটবলের সম্মান।

নারী ফুটবলার মনিকা চাকমা গত ৩০ এপ্রিল বঙ্গমাতা অনূর্ধ্ব-১৯ আন্তর্জাতিক নারী গোল্ডকাপের সেমিফাইনালে মঙ্গোলিয়ার বিরুদ্ধে করেছিলেন দুর্দান্ত এক গোল। ৩-০ ব্যবধানের জয়ের প্রথম গোলটি করেছিলেন এ পাহাড়ী কিশোরী। বিরতির বাঁশির ঠিক আগে মাঝমাঠ থেকে ক্রস দিয়েছিলেন সানজিদা। মনিকা হেডে বল নামান মাটিতে।

বল মাটি থেকে লাফিয়ে উঠতে মনিকার বা পায়ের যাদুকরী শট বাঁক খেয়ে মঙ্গোলিয়ার জালে। দর্শকদের চোখে আঠার মতো লেগে থাকা সেই গোল এড়ায়নি ফিফার দৃষ্টি। মনিকার ওই গোল জায়গা করে নিয়েছিল ফিফার দর্শক জরিপে সেরার তালিকায়। বিশ্ব ফুটবলের অভিভাবক সংস্থা ফিফা তাদের ওয়েবসাইটে গোলটির ভিডিও আপলোড করে শিরোনাম দিয়েছিল ‘ম্যাজিক্যাল চাকমা।’

Advertisement

বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামেই গত জুনে এএফসি কাপে নেপালের মানাং মার্সিয়াংদি ক্লাবের বিরুদ্ধে আবাহনীর মামুনুল ইসলামের শেষ মুহুর্তে করা গোলটি হয়েছিল এশিয়ার সপ্তাহসেরা। ম্যাচটি আবাহনী জিতেছিল ৫-০ গোলে। শেষ গোলটি করেছিলেন মামুনুল। ডি বক্সের বাইরে থেকে মামুনুলের বা পায়ের দর্শণীয় শটে পরাস্ত হয়েছিলেন নেপালের ক্লাবটির গোলরক্ষক।

আর সর্বশেষ আবাহনীর মিডফিল্ডার সোহেল রানা। আগের মনিকা ও মামুনুলের গোলের মতো ২১ আগস্টও সোহেলের গোলের স্বাক্ষী হয়েছেন বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের দর্শকরা। আজ (শুক্রবার) দর্শকদের ভোটে তিন প্রতিদ্বন্দ্বিকে হারিয়ে সোহেল রানার গোল হয়েছে এশিয়ার সপ্তাহসেরা।

৫ বছর আগে মামুনুল ইসলামের একটি গোল জায়গা করে নিয়েছিল এশিয়ার সপ্তাহসেরার তালিকায়। ২০১৪ সালে ইনচিয়ন এশিয়ান গেমস ফুটবলে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে প্রায় ৩৫ গজ দুর থেকে দর্শণীয় গোল করেছিলেন মামুনুল।

দর্শণীয় গোল করে এশিয়ার সেরা হয়ে এবং বিশ্বের সেরার তালিকায় মনোনয়ন পান তখন দেশের ফুটবলের বিজ্ঞাপনটা ফুটে ওঠে। মনিকার গোল যেমন বাংলাদেশের মেয়েদের ফুটবল এগিয়ে যাওয়ার প্রতীক তেমন মামুনুল ও সোহেল রানার গোলও ফুটবলের জন্য ইতিবাচক খবর।

Advertisement

সদ্য সমাপ্ত বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ হয়েছিল বেশ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। এ লিগেও দর্শক দেখেছে ভালো কিছু ম্যাচ, ভালো কিছু গোল। ঘরে হওয়া জমজমাট লিগই ফুটবলারদের প্রতিদ্বন্দ্বিতার মনোভাব বাড়িয়েছে, আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে। সুন্দর গোলগুলো সবচেয়ে বেশি চওড়া করছে জাতীয় দলের কোচ জেমি ডে’র মুখের হাসি।

আরআই/এসএএস/জেআইএম