চুপ না থেকে শিশু-নারী ধর্ষণ ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে নারীদের অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন নারী সংহতি। সারাদেশে শিশু-নারী ধর্ষণ-নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ এবং পাড়া-মহল্লা-প্রতিষ্ঠানে যৌন নিপীড়নবিরোধী কমিটি গঠনেরও আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।
Advertisement
শুক্রবার (২৩ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরের সামনে ‘ইয়াসমিন দিবস’ ও নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস’ উপলক্ষে ধর্ষণ-যৌন নিপীড়নবিরোধী সভা থেকে এ আহ্বান জানানো হয়। ২৪ আগস্ট ১৯৯৫ সালে দিনাজপুরে কিশোরী ইয়াসমিন পুলিশ সদস্যদের দ্বারা গণধর্ষণ ও হত্যার শিকার হন। প্রতিবাদে ওই দিনটি ‘ইয়াসমিন দিবস’ হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।
নারী সংহতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তাসলিমা আখতারের সভাপতিত্বে প্রতিবাদী অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সাংগঠনিক সম্পাদক জান্নাতুল মরিয়ম।
বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অপরাজিতা চন্দ, নারায়ণগঞ্জ শাখার সংগঠক আফরীন আহমেদ হিয়া, মান্দাইলের সংগঠক লিপি বেগম এবং উত্তরা শাখার সংগঠক সামিয়া রহমান। সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন গণসংহতি আন্দোলনের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল, ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি গোলাম মোস্তফা, পাঠশালা সাউথ এশিয়ান মিডিয়া ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী ও আলোকচিত্রী মাহবুবা মেহজাবীন মৌরী।
Advertisement
সভায় উপস্থিত ছিলেন নারী সংহতির সভাপতি শ্যামলী শীল, রাজনৈতিক শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদকসহ সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা। সভায় সংহতি জানান গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘পাহাড়ে-সমতলে-ঘরে-বাইরে-প্রতিষ্ঠানে-রাস্তায়-পরিবহনে কোথাও আজ নারী নিরাপদ নয়। জনগণের নিরাপত্তা প্রদানে ব্যর্থ এ রাষ্ট্রে শিশুর কোনো শৈশব নেই, সায়মা-আয়েশা-কৃত্তিকার মৃত শৈশব পড়ে থাকে নির্লিপ্ত রাষ্ট্রের সামনে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মেয়ে ও ছেলে শিশুরা হচ্ছে যৌন নিপীড়নের শিকার।’
নারী সংহতি মনে করে, নারীর প্রতি পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গিই ধর্ষণকে টিকিয়ে রাখতে ভূমিকা রাখে।
সভায় সংগঠনের সভাপতি তাসলিমা আখতার বলেন, ২৪ বছর আগে দিনাজপুরের ইয়াসমিন যেমন পুলিশ বাহিনীর হাতে ধর্ষণ ও হত্যার শিকার হয়েছিলেন, এখনও সে অবস্থার পরিবর্তন হয়নি, বরং অবনতি হয়েছে। ‘সর্বাধিক নিরাপদ’ হিসেবে বিবেচিত সেনানিবাস এরিয়ার ভেতরেও নারী ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা ঘটছে। সম্প্রতি খুলনায় পুলিশ কর্তৃক ধর্ষণের শিকার হয়েছেন একজন নারী। বিচারহীনতার সংস্কৃতি, নির্বাচন-পরবর্তী জবাবদিহিতাহীন একদলীয় শাসন-ব্যবস্থার অস্থিরতা এবং নৈরাজ্য ধর্ষণকে পুষ্টি যোগাচ্ছে। তাই ধর্ষণ, যৌন নিপীড়ন কিংবা গণপিটুনির বিরুদ্ধে জনগণকে সংঘবদ্ধ হতে হবে, আইনি ও সাংস্কৃতিক এই দুই ময়দানেই লড়তে হবে।’
Advertisement
এফএইচ/এসআর/এমকেএইচ