পতনের ধারা কাটিয়ে কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় ফিরেছে দেশের শেয়ারবাজার। গত সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে চার কার্যদিবসেই ঊর্ধ্বমুখী ছিল বাজার। ফলে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা বাজার মূলধন ফিরে পেয়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে সবকটি মূল্য সূচক। তবে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ।
Advertisement
গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৮৮ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা। যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৩ লাখ ৮৬ হাজার ৬২৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ১ হাজার ৮১৪ কোটি টাকা।
বাজার মূলধনের বাড়ার পাশাপাশি গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৫৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের মধ্যে ২১২টির দাম আগের সপ্তাহের তুলনায় বেড়েছে। অন্যদিকে দাম কমেছে ১৩০টির। আর দাম অপরিবর্তিত রয়েছে ১৩টির।
বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দাম বাড়ার ফলে ডিএসইর সব সূচকও বেড়েছে। গত সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৩৫ দশমিক ৪৩ পয়েন্ট বা দশমিক ৬৮ শতাংশ। আগের সপ্তাহে এ সূচকটি বাড়ে ২ দশমিক ৫৬ পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ।
Advertisement
অপর দুটি সূচকের মধ্যে গত সপ্তাহে ডিএসই-৩০ আগের সপ্তাহের তুলনায় বেড়েছে ১২ দশমিক ২৬ পয়েন্ট বা দশমিক ৬৭ শতাংশ। আগের সপ্তাহে এ সূচকটি বাড়ে ৬ দশমিক ৬১ পয়েন্ট বা দশমিক ৩৬ শতাংশ। আর গত সপ্তাহে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক বেড়েছে ১৪ দশমিক ৬৩ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ২৩ শতাংশ। আগের সপ্তাহে এ সূচকটি কমে ২ দশমিক ৪১ পয়েন্ট বা দশমিক ২১ শতাংশ।
মূল্য সূচক বাড়লেও কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। গত সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৪৬০ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৪৭৩ কোটি ৯১ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ১৩ কোটি ২২ লাখ টাকা বা ২ দশমিক ৭৯ শতাংশ।
আর গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৩০৩ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় ২ হাজার ৩৬৯ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। সে হিসাবে মোট লেনদেন কমেছে ৬৬ কোটি ১৩ লাখ টাকা বা ২ দশমিক ৭৯ শতাংশ।
গত সপ্তাহের মোট লেনদেনের মধ্যে ‘এ’ গ্রুপের প্রতিষ্ঠানের অবদান দাঁড়িয়েছে ৮০ দশমিক ৭২ শতাংশ। এছাড়া মোট লেনদেনের ১১ দশমিক ১৭ শতাংশ ছিল ‘বি’ গ্রুপের দখলে। মোট লেনদেনে ‘জেড’ গ্রুপের প্রতিষ্ঠানের অবদান ১ দশমিক ৫ শতাংশ। আর ‘এন’ গ্রুপের অবদান ৭ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ।
Advertisement
গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশনের শেয়ার। কোম্পানিটির ১৬৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা সপ্তাহজুড়ে হওয়া মোট লেনদেনের ৭ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা খুলনা পাওয়ারের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৮১ কোটি ১৪ লাখ টাকা, যা সপ্তাহের মোট লেনদেনের ৩ দশমিক ৫২ শতাংশ। ৭০ কোটি ৪৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনে তৃতীয় স্থানে রয়েছে জেএমআই সিরিঞ্জ।
লেনদেনে এরপর রয়েছে- ওরিয়ন ইনফিউশন, ফরচুন সুজ, মুন্নু সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিজ, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন, বিকন ফার্মাসিউটিক্যাল, সিলকো ফার্মাসিউটিক্যাল এবং কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজ।
এমএএস/জেএইচ/পিআর