দেশজুড়ে

টাঙ্গুয়ার হাওরে এখনও আদায় হচ্ছে গলাকাটা নৌকা ভাড়া

সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওর। এই হাওরের সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিনিয়ত বাড়ছে পর্যটকের সংখ্যা। তাছাড়া শুক্র ও শনিবার হাওরে ভিড় জমে কয়েকগুন। তবে প্রাকৃতিক সৌন্দের্যের এই লীলাভূমির সৌন্দর্য উপভোগ করতে পর্যটকদের গুনতে হচ্ছে দ্বিগুন অর্থ। বিভিন্ন অনলাইন ভিত্তিক ট্যুর গ্রুপ ও নৌ মালিকের সিন্ডিকেটকে এর জন্য দায়ী করা হচ্ছে। আর এতে করে এ হাওর পর্যটক হারাতে পারে বলে আশঙ্কা স্থানীয়দের।

Advertisement

জানা যায়, গত ১০ আগস্ট নৌ মালিকদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করে একটি সুনির্দিষ্ট নৌকা ভাড়া ঠিক করা হয়। তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসিফ ইমতিয়াজের নির্দেশনায় প্রতিটি নৌকায় নির্দিষ্ট ভাড়ার চার্ট লাগানো হলেও তা মানতে নারাজ নৌ-মালিক ও অনলাইন ভিত্তিক ট্যুর গ্রুপগুলো। প্রশাসনের নির্ধারিত ভাড়া তোয়াক্কা না করেই মনগড়া ভাড়া নিচ্ছে তারা। এমনকি শুক্র ও শনিবার সরকারি ছুটি থাকায় পর্যটকদের কাছ থেকে দ্বিগুন ভাড়া আদায় করছে গ্রুপগুলো।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন ফেসবুক ভিত্তিক গ্রুপ ও নৌ-মালিকরা প্রশাসনের ভাড়া মানতে রাজি না। তাদের দাবি প্রশাসন তাদের সঙ্গে কোনো বৈঠক না করেই নৌকা ভাড়া নির্ধারণ করেছে।

এ ব্যাপারে ‘সিন্দাবাদ তরীর’ সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে কিরণ নামের একজন দাবি করেন, তাদের নৌকা সবচেয়ে বড় এবং এর ভাড়া দুই দিন একরাতে ১৬ হাজার টাকা। কিন্তু উপজেলা প্রশাসনের নির্ধারিত ভাড়ার সঙ্গে এটার কেন মিল নেই জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওটা আমাদের নয়, ছোট নৌকার ভাড়া। আমাদেরটার ভাড়া ১৬ হাজার টাকা। অন্যদিকে ‘ভবগুরে’ ট্যুর গ্রুপের মালিক পরাগ আহমেদ বলেন, আমরা ঢাকা থেকে ইভেন্টের মাধ্যমে পর্যটকদের নিয়ে আসি। আমাদের নিজস্ব নৌকা রয়েছে। একটি নৌকায় ৪ জন মানুষ কাজ করে। তাছাড়া আমাদের নৌকায় বিভিন্ন রকমের সুযোগ সুবিধা রয়েছে। কিন্তু প্রশাসন যে ভাড়া নির্ধারণ করেছে তা অযৌক্তিক এবং এজন্য আমাদের কিংবা নৌকা মালিকের সঙ্গে কথা বলেনি। আমরা এই ভাড়া মানি না।

Advertisement

অন্যদিকে তাহিরপুরের বিভিন্ন নৌঘাটসহ ৬টি স্পটে টাঙিয়ে দেয়া হয়েছে নির্ধারিত নৌকা ভাড়ার চার্ট। টাঙ্গুয়ার হাওরে চলাচলকারী নৌকাগুলোকে তিনটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে, যা উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে নৌকার মালিকদের বৈঠকে চূড়ান্ত করা হয়। এই হিসাবে সর্বাধিক ৪০ জন যাত্রী ধারণে সক্ষম নৌকার দুই দিন আর একরাতের জন্য ভাড়া নির্ধারণ করা হয় ১২ হাজার টাকা। স্থানীয় নৌকার মালিকরা এটা মেনে নিলেও এই নির্দেশনা আমলে নিচ্ছেন না ঢাকা থেকে পরিচালিত নৌকার মালিকরা।

এ ব্যাপারে তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসিফ ইমতিয়াজ বলেন, প্রশাসনের নির্ধারিত ভাড়া যদি কোনো নৌ মালিক না মানেন তাহলে তাকে জরিমানার সম্মুখীন হতে হবে। যদি কোনো পর্যটক প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দেন তাহলে আমরা সঙ্গে সঙ্গে উপজেলা ভূমি অফিসারের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করে জরিমানা করব। মোসাইদ রাহাত/এফএ/জেআইএম