আইন-আদালত

বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাস বিকৃতি : রিটকারী হাইকোর্টে

তথ্য গোপন রেখে বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাস বিকৃতি নিয়ে রিটকারী কাজী এরতেজাকে তলব করেছিলেন হাইকোর্ট। তলবের পরিপ্রেক্ষিতে আজ নির্ধারিত দিনে আদালতে রিটকারী এরতেজা আহমেদ উপস্থিত হয়েছেন তথ্য গোপন করার কারণ ব্যাখ্যা করার জন্য।

Advertisement

বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে উপস্থিত হয়েছেন তিনি।

এর আগে গত ১৯ জুন তাকে তলব করে আদেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। ওই দিন এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কোর্টের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আল আমিন সরকার বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাস’গ্রন্থটি প্রকাশের পরপরই এতে বেশকিছু ত্রুটি ধরা পড়ে। পরে ব্যাংকের গভর্নর গ্রন্থটি বিতরণ বন্ধের নির্দেশ দেন এবং এটি রিভিউয়ের জন্য একজন ডেপুটি গভর্নরের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নেয়া এই পদক্ষেপের বিষয়টি গোপন করে ড. কাজী এরতেজা হাসান রিট করেন।

Advertisement

গত ১৯ জুন বাংলাদেশ ব্যাংকের আইনজীবীরা আদালতের কাছে বিষয়টি তুলে ধরলে ওই বিষয়ে কাজী এরতেজা হাসানকে তলব করে তার ব্যাখ্যা জানতে চান হাইকোর্ট।

২০১৮ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি অন্তর্ভুক্ত না করায় ইতিহাস বিকৃত হয়েছে বলে প্রতিবেদন দাখিল করেছিল হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত তদন্ত কমিটি।

বইটি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার পর বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে এক ব্যাখ্যায় বলা হয়, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাস’ গ্রন্থের পাণ্ডুলিপি তৈরি ও প্রকাশনার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় ২০১৩ সালের জুন মাসে। এ বিষয়ে তখন উপদেষ্টা কমিটি ও সম্পাদনা নামে দুটি কমিটি গঠিত হয়। ওই কমিটি দুটি পাণ্ডুলিপি চূড়ান্তের পর গ্রন্থটি ২০১৭ সালের ডিসেম্বর প্রকাশিত হয়। গ্রন্থটি প্রকাশনার পরপরই এতে কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যত্যয় পরিদৃষ্ট হলে বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর গ্রন্থটির বিতরণ বন্ধের নির্দেশ দেন এবং গ্রন্থটি রিভিউয়ের জন্য একজন ডেপুটি গভর্নরের নেতৃত্বে রিভিউ কমিটি গঠন করেন।

এর মধ্যে কাজী এরতেজা হাসানের রিটের পর গত বছরের ২ অক্টোবর রুল জারি করে এ ঘটনা তদন্তে অর্থ সচিবকে একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এ আদেশ অনুসারে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (অর্থ বিভাগ) ড. মো. জাফর উদ্দীনকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়।

Advertisement

তদন্ত প্রতিবেদনের মতামত অংশে বলা হয়, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ ব্যাংকের নামকরণ করেন।...গ্রন্থটির দ্বিতীয় অধ্যায়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে। এ কারণে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি হিসেবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাস বইয়ে অন্তর্ভুক্ত করা অত্যাবশ্যক ছিল। বাংলাদেশ ব্যাংক সংশ্লিষ্ট বঙ্গবন্ধুর ছবি খুঁজে পাওয়া যায়নি-এ যুক্তিতে বঙ্গবন্ধুর ছবি বইয়ে অন্তর্ভুক্ত না করার বিষয়টি অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনভিপ্রেত। গ্রন্থটিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি অন্তর্ভুক্ত না করায় ইতিহাস বিকৃত হয়েছে মর্মে কমিটি মনে করে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গ্রন্থটিতে পকিস্তানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান এবং পূর্ব পাকিস্তান গভর্নর মোনায়েম খানের ছবি সংযোজন না করা শ্রেয় ছিল এবং সেটি সবার ভুল মর্মে বইটির সম্পাদক স্বীকার করেন।

এফএইচ/জেডএ/জেআইএম