স্বাস্থ্য

হলি ফ্যামিলিতে কমেছে ডেঙ্গু রোগী

রাজধানীর হলি ফ্যামিলি হাসপাতালের এক ও দুই নম্বর ওয়ার্ড। একটি নারী, অন্যটি পুরুষ ওয়ার্ড। দুই ওয়ার্ডেই চার-পাঁচজন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছে। বাকি শয্যাগুলো ফাঁকা। বুধবার (২১ আগস্ট) দুপুরে হাসপাতালের দৃশ্য এটি।

Advertisement

গত ২৩ জুলাই এ দুই ওয়ার্ডে দেখা যায়, রোগীতে ভর্তি ছিল ওয়ার্ডগুলো। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সে সময় জানায়, হাসপাতালের সব শয্যাই রোগীতে পূর্ণ। যাদের অধিকাংশই ডেঙ্গু আক্রান্ত।

এ দুই ওয়ার্ডে সেবিকার দায়িত্ব পালন করেন খোদেজা বেগম। ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর চাপ থাকলেও আগের চেয়ে কমেছে বলে জানান তিনি। জাগো নিউজকে খোদেজা বেগম বলেন, ‘এক ও দুই নম্বর ছিল গাইনি ওয়ার্ড। পুরুষ ওয়ার্ডে ডেঙ্গু রোগীর জায়গা না হওয়ায় দুই নম্বর গাইনি ওয়ার্ডকে পুরুষ ওয়ার্ড করা হয়। ওই সময় আমার অধীনে দুই ওয়ার্ডে মেডিসিন, গাইনি, ডেঙ্গুসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ৪৭ রোগী ভর্তি ছিল। এখন ডেঙ্গু রোগীর চাপ কমায় রোগীর সংখ্যা কমেছে। এ দুই ওয়ার্ডে আমার অধীনে এখন ১৭ রোগী ভর্তি রয়েছে। তাদের মধ্যে মাত্র তিনজন ডেঙ্গু আক্রান্ত। তাদের মধ্যে একজন গর্ভবতী রয়েছেন।’

রোগী কম থাকায় দুই নম্বর পুরুষ ওয়ার্ডটি আবার গাইনি ওয়ার্ড করার চিন্তা করা হচ্ছে বলেও জানান খোদেজা বেগম।

Advertisement

তথ্য মতে, এ বছর হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে ১৪৫২ রোগী ডেঙ্গুর চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের মধ্যে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে।

বুধবার (২১ আগস্ট) দুপুর পর্যন্ত ৮১ ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। যেখানে ২৩ জুলাই ভর্তি ছিলেন ১৬০ জন। সে হিসেবে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা কমলেও পরিস্থিতি এখনও ভয়াবহ বলেও মনে করছেন হাসপাতাল সংশ্লিষ্ট অনেকেই।

হাসপাতালের মেট্রন সেকশন থেকে জানানো হয়, আগের তুলনায় ডেঙ্গু রোগী কমেছে। তবে এখনও আশঙ্কাজনক অবস্থা রয়েছে। ডেঙ্গু পরিস্থিতি আরও ভালো বোঝা যাবে যখন গ্রামের বাড়ি থেকে সবাই কর্মস্থল ঢাকায় ফিরবে। কারণ অনেকেই ডেঙ্গু নিয়ে গ্রামে গেছেন। তাই ডেঙ্গু পরিস্থিতি বুঝতে আরও এক সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে।

বরিশালের শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনদিন ভর্তি ছিলেন ৩৬ বছর বয়সী সৈয়দ সোহেল। তার রক্তের প্লাটিলেট ১০ হাজারে নেমে এসেছিল। সেখানকার চিকিৎসকরা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন। কিন্তু ঢামেকে রোগীর ভিড় থাকায় হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে ভর্তি করায় তার পরিবার।

Advertisement

সৈয়দ সোহেলের ভাই নূর এ আলম জাগো নিউজকে বলেন, ‘তার শরীরের অবস্থা এখন মোটামুটি ভালো। রক্তের প্লাটিলেট ১০ হাজার থেকে বেড়ে ৭৮ হাজার হয়েছে।’

এতো দিনের ভয়াবহ অবস্থার বর্ণনা দিলেন হলি ফ্যামিলি হাসপাতালের সেবিকা সুরাইয়া খানম। তিনি বলেন, ‘এতদিন রোগীর চাপে চোখে কিছু দেখার সুযোগ পাইনি। পর্যাপ্ত ঘুমানোরও সুযোগ হয়নি। রোগীর চাপে ক্যানলা করবো নাকি অন্য কিছু করব ঠিক বুঝে উঠতে পারছিলাম না। একজনের রক্ত আরেকজনের শরীরে যাতে চলে না যায়, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হয়েছে। দ্বিতীয়বার যেন এমন ঝড় না আসে।’

পিডি/এএইচ/পিআর