জাতীয়

ঢাকার রং লালদিঘীর স্পিরিট আন্দরকিল্লার লেভেলে বিদেশি মদ!

চট্টগ্রাম নগরের বিভিন্ন অভিজাত হোটেল থেকে বিদেশি মদের বোতল, লালদিঘী এলাকার হোমিওপ্যাথি দোকান থেকে কেনা স্পিরিট, ঢাকা থেকে আনা কেমিক্যাল ও রং এবং আন্দরকিল্লার প্রেস থেকে বানানো নকল লেভেল। এই চারে মিলে হয়ে যাচ্ছে বিদেশি নকল মদ!

Advertisement

গত সপ্তাহে চট্টগ্রামের আকবরশাহ থানা এলাকায় মদ খেয়ে তিন যুবকের মৃত্যুর ঘটনা অনুসন্ধানে নেমে এমন ভয়াবহ তথ্য পেয়েছে পুলিশ। এ যেন কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেড়িয়ে এলো!

এ ঘটনা নিয়ে বুধবার (২১ আগস্ট) দুপুরে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ (সিএমপি) সদর দফতরে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে সিএমপি বলেছে, পুলিশ নগরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে নকল মদ তৈরি চক্রের এক সদস্য ও তাদের চার সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে, যারা পরস্পর যোগসাজশে বেশ কয়েক বছর যাবত শহরের বিভিন্ন নামীদামি হোটেল থেকে বিদেশি মদের খালি বোতল ও আন্দরকিল্লার প্রেস থেকে নকল লেভেল, লালদিঘী এলাকার কয়েকটি হোমিওপ্যাথি ওষুধের দোকান থেকে স্পিরিট এবং ঢাকা থেকে মদ তৈরির কেমিক্যাল, রংসহ বিভিন্ন সামগ্রী মিশিয়ে নকল বিদেশি মদ তৈরি করে। এরপর তা বাজারজাত করে আসছিল। এ ধরনের বিষাক্ত মদ পান করার পর স্থায়ীভাবে বিকলাঙ্গসহ মৃত্যুবরণ করার ব্যাপক আশঙ্কা রয়েছে।

Advertisement

নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (পশ্চিম) ফারুক উল হক জানান, গত ১৪ আগস্ট আকবরশাহ থানাধীন মালিপাড়া এলাকায় ভেজাল মদপানে বিশ্বজিৎ মল্লিক, শাওন মজুমদার জুয়েল ও উজ্জ্বল বণিক নামের তিন যুবকের মৃত্যু হয়।

পরে ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, গত ১৩ আগস্ট বিশ্বজিৎকে দেড় হাজার টাকার বিনিময়ে মদ সরবরাহ করে নাছিম নামে একজন। সেই মদ পান করে তিনজনের মৃত্যু হয়। নাছিমসহ আরও কয়েকজন মিলে চট্টগ্রাম শহরে একটি সংঘবদ্ধ চক্র রয়েছে, যারা বিদেশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নকল মদ তৈরি করে।

গতকাল চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থান থেকে এ চক্রের সদস্য মো. নাছিম উদ্দিন (২৩), মো. ইকরামুল হক (৩২), স্বপন পাল (৫১), মো. ইমরান ফয়সাল (২১) এবং জাহেদুর রহমান আরজুকে (৩০) গ্রেফতার করা হয়। তখন তাদের কাছ থেকে স্পিরিট, নকল লেভেল, ভেজাল মদ তৈরির বিভিন্ন উপকরণ, বোতলের কর্ক জব্দ করা হয়।

ফারুক উল হক আরও জানান, এক বোতল নকল মদ তৈরিতে খরচ হয় মাত্র ২০০ টাকা। বোতলগুলো এমনভাবে প্যাকেট করা হয়, এতে বুঝার উপায় থাকে না এটি নকল নাকি আসল। এক বোতল নকল মদ তারা ১ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করে। মূলত অধিক লাভের আশায় তারা এসব কাজ করে আসছে বলে পুলিশকে জানিয়েছে। এ চক্রের সঙ্গে জড়িত অন্য সদস্যদের তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

Advertisement

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সিএমপির উপ-কমিশনার (সিটি এসবি) মোহাম্মদ আবদুল ওয়ারীশ, পাহাড়তলী জোনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার পংকজ বড়ুয়া, আকবরশাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী ও অভিযান পরিচালনা টিমের সদস্যরা।

জেডএ/পিআর