‘(জোফরা) আর্চারের বলে স্টিভেন স্মিথ মাথায় আঘাত পাওয়ায়, তার বদলে দ্বিতীয় ইনিংসে নেমেছিলাম আমি। যথারীতি দ্বিতীয় ইনিংসে আমাকে প্রথম বলটাই করা হয়েছিল বুক বরাবর বাউন্সার। আমি অবাক হইনি যদিও’- কথাগুলো বলেছিলেন চলতি অ্যাশেজের লর্ডস টেস্টে স্মিথের পরির্বতিত খেলোয়াড় মার্নাস লাবুশেন।
Advertisement
ম্যাচের প্রথম ইনিংসে ৯২ রানের অসাধারণ এক ইনিংস খেলার পথে আর্চারের ৯৩ মাইল গতির এক বাউন্সার আঘাত হানে স্মিথের ঘাড়ে। ফলে মাঠ ছেড়ে যেতে হয় তাকে। পরে সে ইনিংসে ব্যাটিং করতে নামলেও, দ্বিতীয় আর খেলতে পারেননি তিনি।
যে কারণে পরিবর্তিত খেলোয়াড় হিসেবে নামার সুযোগ পান লাবুশেন। স্মিথের মতো তিনিও দ্বিতীয় ইনিংসে করেন হাফসেঞ্চুরি, ৫৯ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচ ড্র করতে রাখেন অসামান্য অবদান। শুধু স্মিথের মতো হাফসেঞ্চুরিতেই নয়, একের পর বাউন্সারের আঘাতও সহ্য করার দিকেও মিল ছিল লাবুশেনের।
সে ম্যাচের ফল ছাপিয়ে বড় হয়ে দেখা দেয় ইংলিশ বোলারদের বিশেষ করে আর্চারের খুনে মনোভাবের কথা। কেননা স্মিথ যখন তার বাউন্সারে মাটিতে পড়েছিলেন, তখন বোলিং মার্কে হাস্যোজ্জ্বল দেখা গিয়েছিলো তাকে। যা সমালোচনার জন্ম দেয় সারা ক্রিকেট বিশ্বে।
Advertisement
কিন্তু সেসবে কি আর মাঠের জবাব দেয়া যায়? সবার ভাবনা ছিলো হয়তো হেডিংলিতে সিরিজের তৃতীয় টেস্টে অস্ট্রেলিয়াও প্রস্তুত হবে একের পর এক বাউন্সারের অস্ত্র নিয়ে। যে কারণে দলে ফেরানো হতে পারে গতিতারকা মিচেল স্টার্ককে। যিনি দ্রুতগতির বাউন্সারে হেলমেট উড়িয়ে দিতে পারবেন ইংলিশ ব্যাটসম্যানদের।
তবে অসি কোচ জাস্টিন ল্যাঙ্গারের মাথায় রয়েছে ভিন্ন পরিকল্পনা। তার স্পষ্ট মন্তব্য হলো শুধু একের পর এক বাউন্সার করে আর ক্রিকেটারদের মাথা, ঘাড়ে, হাতে কালশিটে দাগ বসিয়ে ম্যাচ জেতা সম্ভব না। তার দল ইংল্যান্ডে গিয়েছে অ্যাশেজ জিততে, ক্রিকেটার মারার যুদ্ধে নামতে নয়।
তাই তো সংবাদ সম্মেলনে ল্যাঙ্গার বলেন, ‘ইংল্যান্ডকে হারানোর জন্য কোন পরিকল্পনা দরকার তা আমাদের জানা আছে। আমরা কখনোই এমন কিছু করবো যা আমাদের আবেগতাড়িত করে একের পর এক বাউন্সার করার জন্য উদ্বুদ্ধ করবে। আমরা এখানে টেস্ট জিততে এসেছি, কয়টা হেলমেট ভাঙতে পারলাম সে হিসেব করতে নয়। এটাই সত্যি, আমরা শুধু ম্যাচটাই জিততে চাই এবং সেজন্য আমাদের পরিকল্পনা মোতাবেকই এগুবো আমরা।’
এসময় বর্তমান অস্ট্রেলিয়া দলকে অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে ভিন্ন দাবী করে ল্যাঙ্গার বলেন, ‘মাইক আদারটন সেদিন দারুণ এক কথা বলেছেন। এই অস্ট্রেলিয়া দলটা আসলেই অন্যরকম। আগে দেখা যেতো আমরা আমাদের বক্ষ উদাম করে বোলিং করতাম, বড় মোচ রাখতাম এবং যত জোরে সম্ভব বোলিং করার চেষ্টায় থাকতাম। তবে বর্তমান দলটা এত কঠিন নয়। আমরা এখানে টেস্ট জিততে এসেছি। ব্যাটসম্যানদের হাতে, ঘাড়ে কালো দাগ ফেলে নিশ্চয়ই ম্যাচ জেতা যাবে না।’
Advertisement
আর এ কারণেই হেডিংলি টেস্টে গতির ঝড় বসানোর সম্ভাবনা নেই বললেই চলে অস্ট্রেলিয়ার। এর চেয়ে বরং নিজেদের পরিকল্পনায় থেকে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যেতে চায় তারা।
অসি কোচের ভাষ্যে, ‘আমরা এমনভাবে দল সাজাবো যাতে করে আমরা জিততে। এটা ভিন্ন মাঠ, উইকেট এখানে ধীরগতি হবে। অন্য মাঠের তুলনায় এখানে বল হাতে গতির ঝড় তোলা সহজ হবে না। আমি যা বুঝতে পেরেছি এখানের উইকেট দেখে, তা সবাইজে জানিয়েছি। তবে বাউন্সার অবশ্যই যেকোনো বোলারের বড় একটা অস্ত্র হবে। যদি এটা কোনো ব্যাটসম্যানকে আউট করতে সাহায্য করে, তাহলে আমরা অবশ্যই বাউন্সার করবো। অন্যথায় নিজেদের পরিকল্পনাতেই থাকবো।’
এসএএস/এমকেএইচ