পৃথিবীর সবচেয়ে সত্য ও স্বাভাবিক ঘটনা মৃত্যু। কিন্তু মানুষ এটাকে মানতে নারাজ। মৃত্যু নিয়ে মানুষের ভেতর একটা আতঙ্ক কাজ করে। এ কারণে অনেকেই বলে থাকেন, মৃত্যু দিনক্ষণ নির্ধারণ করে আসে না, হুট করে আসে। আবার অনেকে আশা করে বলেন, মৃত্যু কবে হবে জানতে পারলে মন্দ হতো না।
Advertisement
তবে জার্মানির বিজ্ঞানীরা এবার সে ব্যবস্থায় করতে যাচ্ছেন। তারা একটি রক্ত পরীক্ষার পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন, যার মাধ্যমে জানা যাবে, আগামী ১০ বছরের ভেতর কারও মৃত্যু ঝুঁকি আছে কিনা। অর্থাৎ রক্ত পরীক্ষা করে মানুষের মৃত্যুর পূর্বাভাস পাওয়া যাবে। বিজ্ঞানীদের দাবি, এটা শতকরা ৮০ ভাগ নির্ভুল।
৪৪ হাজার মানুষের ওপর এ পরীক্ষা চালিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তারা রক্তের ১৪টি বায়োমার্কার উদঘাটন করেছেন, যা মানুষের মৃত্যু ঝুঁকিকে প্রভাবিত করে। বায়োমার্কারগুলো সংক্রমণমুক্ত এবং গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণ থেকে শুরু করে চর্বি এবং শরীরের প্রদাহ সম্পর্কিত সবকিছুর সঙ্গে যুক্ত।
একটি বায়োমার্কারের পরীক্ষায় দেখা গেছে, আগামী ২ থেকে ১৬ বছরের মধ্যে কোন সময়টাতে একজন মানুষ মারা যাবে তা জানা যাবে। এবং এটা ৮৩ ভাগ নিশ্চিত।
Advertisement
তবে এটা প্রচলিত রক্ত পরীক্ষা, যেমন কোনো মানুষের শরীরে ইনফেকশন দেখা দিয়েছে তিনি যে রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে এটা নিশ্চিত হবেন, সে ধরনের রক্ত পরীক্ষার মতো এই পরীক্ষা এখনও চালু হয়নি।
বিজ্ঞানীদের আশা, চিকিৎসার জন্য একদিন এ রক্ত পরীক্ষা চালু হবে। যেমন : কোনো বয়স্ক ব্যক্তির অস্ত্রোপচারের জন্য খুব দুর্বল কি না, তা এই রক্ত পর্রীক্ষার মাধ্যমেও জানা যাবে।
সাধারণত, রক্তচাপ এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা পরীক্ষা করে কোনো ব্যক্তি আগামী বছরের মধ্যে মারা যাবে কি না, সে সম্পর্কে চিকিৎসকরা ধারণা করতে পারেন। কিন্তু ১০ বছর কিংবা তারও বেশি সময়ের মধ্যে মারা যাওয়ার বিষয়ে জানতে পারেন না।
ন্যাচার কমিউনিকেশন নামে এক জার্নালে এই রক্ত পরীক্ষার গবেষক টিম লিখেছেন, ১০ বছরের মধ্যে কোনো ব্যক্তির মৃত্যু ঝুঁকির বিষয়ে ধারণা করা কষ্টকর।
Advertisement
জার্মানির অ্যাজিংয়ের বায়োলজির ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা ১৮ থেকে ১০৯ বছর বয়সী ১ হাজারেরও বেশি মানুষের রক্ত পরীক্ষা করেছেন। অংশগ্রহণকারীদের সবাই ইউরোপীয় বংশোদ্ভূত ছিলেন। তাদের ওপর মোট ১২টি পরীক্ষা চালানো হয়।
সূত্র : ডেইলি মেইল
এমএসএইচ/এমকেএইচ