প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূতের মতো ‘লাভজনক’ পদে থাকায় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সংসদ সদস্য পদ বাতিল চেয়ে উকিল নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী। সোমবার কল্যাণ পার্টির আইন বিষয়ক সম্পাদক মুবিনুল হক এই নোটিশ পাঠিয়েছেন বলে জানা গেছে। তিনি বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের শরীক দল কল্যাণ পার্টির এক নেতা।সংবিধানের ৬৬ (২), ৬৬ (৪) এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ১২ (১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী এরশাদের সদস্য পদ বাতিলের ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানানো হয়েছে এই নোটিসে। বলা হয়, “প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত পদটি লাভজনক। সংবিধান ও গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুসারে লাভজনক পদে থেকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদ সংসদ সদস্য পদে থাকবার যোগ্যতা হারিয়েছেন।”গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের অনুচ্ছেদ ১২-এ লাভজনক পদের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, “সরকারি বা সংবিধিবদ্ধ সংস্থায় ‘ফুলটাইম সার্ভিস’ পদধারীরা লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত বলে গণ্য হবে।”কল্যাণ পার্টির নেতা মুবিনুল হক বলেন, সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৬৬ (৩) রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী ছাড়া অন্য সব পদ লাভজনক বিবেচিত হবে। এক্ষেত্রে জাপা চেয়ারম্যান ‘সুষ্পষ্টভাবে সংবিধান ও আইন লঙ্ঘন’ করেছেন। তিনি আরো বলেন, নির্বাচন কমিশন আমার লিগ্যাল নোটিশ আমলে না নিলে আদালতের শরণাপন্ন হব। বিরোধী দল এখন মন্ত্রীসভায়ও রয়েছে। দেশের গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতার স্বার্থেই এ আইনি প্রতিকার চাইছি আমি।২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম সংসদ নির্বাচনে অনেক নাটকীয়কতার মধ্যে সিএমএইচে থাকা অবস্থায় রংপুর-১ আসনের সাংসদ নির্বাচিত হন সাবেক সামরিক কর্মকর্তা ও সামরিক সরকারের প্রধান হোসেইন মুহম্মদ এরশাদ। পরে সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেন এবং মন্ত্রী পদমর্যাদায় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূতের দায়িত্ব পান।সে সময় এরশাদ বলেছিলেন, আমি প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হয়ে নিজে কোনো সুযোগ-সুবিধা চাচ্ছি না। আমার সরকারি গাড়ি-বাড়িরও প্রয়োজন নেই। একজন সংসদ সদস্য হিসেবে আমার যেটুকু সুযোগ সুবিধা প্রাপ্য সেটুকু ভোগ করেই আমি বিশেষ দূতের দায়িত্ব পালন করতে চাই।ভোটের নয় মাস পর গত সেপ্টেম্বরে নির্বাচনী হলফনামায় শিক্ষাগত সনদ ও সম্পদের তথ্য জালিয়াতির অভিযোগে এরশাদের সংসদ সদস্যপদ বাতিল চেয়ে নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেন রংপুর-৩ আসনে এরশাদের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী জাসদ নেতা সাব্বির চৌধুরী। কমিশনের সাড়া না পেয়ে পরে তিনি আদালতেও যান। হাইকোর্টে করা ওই জাসদ নেতার রিট আবেদন কয়েকটি বেঞ্চে দেওয়ার পরেও কোনো বিচারক তা শুনতে চাননি। নির্বাচন কমিশন আইনি লড়াই না চালানোর সিদ্ধান্ত নিলেও বিষয়টি সেখানেই থেমে যায়।এফএইচ/আরএস/এমএস
Advertisement