দেশজুড়ে

অনন্ত হত্যা : ৫ আসামি ৭ দিনের রিমান্ডে

সিলেটে ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশ হত্যা মামলায় গ্রেফতারকৃত ৫ জনকে ৭ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে সিআইডির ক্রাইম অর্গানাইজ টিম। বুধবার বেলা ১১ টায় তাদের সিলেট মহানগর ২য় হাকিম আদালতে হাজির করে ১৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে বিচারক আনোয়ারুল হক ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) পরিদর্শক আরমান আলী পাঁচজনকে ৭ দিনের রিমান্ড পাওয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন।এরা হলেন, তৌহিদুর রহমান ও আমিনুল মল্লিক, আরিফুল ইসলাম, জাকিরুল প্রকাশ ও সাদেক আলিম মিঠু।এর আগে সাদেক আলম মিঠুকে এই হত্যা মামলায় শ্যোন এরেস্ট দেখানোর আবেদন করলে আদালতে তা গৃহীত হয়। গত ৮ সেপ্টেম্বর বাকী ৪ জনকে এই মামলায় শ্যোন এরেস্ট দেখানো হয়।বুধবার রিমান্ডে নেয়া পাঁচজনই ঢাকায় খুন হওয়া ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যা মামলার আসামি। পাঁচজনই জঙ্গি সংগঠন আনসারউল্লাহ বাংলা টিমের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে তাদের গ্রেফতারের পর জানিয়েছিলো র‌্যাব। জিজ্ঞাসাবাদে এরা অভিজিৎ হত্যার দায় স্বীকার করেছিলো বলেও জানিয়েছিলো র্যাব।গত ১৭ আগস্ট ঢাকা থেকে তৌহিদুর রহমান ও আমিনুল মল্লিককে আটক করে র‌্যাব। বিজ্ঞানমনষ্ক লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী ও জঙ্গি সন্দেহে তাদের আটক করে র‌্যাব। এর মধ্যে তৌহিদুর রহমান বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক ও আইটি বিশেষজ্ঞ। তিনি আনসারুল্লাহর আর্থিক দিকটি দেখাশোনা করতেন বলে জানায় র‌্যাব।অপরদিকে আমিনুল মল্লিকও আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সক্রিয় সদস্য। সংগঠনের যেসব সদস্য আত্মগোপনে ও পালিয়ে দেশের বাইরে যেতে চায় তাদের বিভিন্ন নামে পাসপোর্ট তৈরি করে দিতেন তিনি।র‌্যাবের আটকের পর অভিজিৎ রায় হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাদের রিমান্ডে নেয়া হয়। রিমান্ডে সিলেটে খুন হওয়া ব্লগার অনন্ত বিজয় রায় হত্যার সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততার খোঁজ মিলে। এরপর অনন্ত বিজয় হত্যা মামলায় জঙ্গি সন্দেহে আটক পাঁচজনকে শ্যোন এরেস্টে দেখানোর আবেদন করে সিআইডি পুলিশ।এদের গ্রেফতারের পর সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব দাবি করেছিলো, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তৌহিদ ও সাদেক অভিজিৎ ও অনন্ত হত্যার পরিকল্পনা এবং হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন। আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের প্রধান জসীমউদ্দিন রাহমানীর কাছ থেকে হত্যার নির্দেশনা পেতেন সাদিক ও তার ছোট ভাই আবুল বাশার। সে অনুযায়ী তৌহিদুর হত্যার পরিকল্পনা করতেন। সাদিকসহ আরো ৪-৫ জন হত্যাকাণ্ডে অংশ নেন।গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে সে সময় র‌্যাব আরো জানায়, অভিজিৎ রায় ও অনন্ত বিজয় হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের ৫ জন সক্রিয় সদস্য সরাসরি কিলিং মিশনে অংশগ্রহণ করে। এদের মধ্যে ছিলেন গ্রেফতারকৃত সাদেক। অন্যরা হলেন, রমজান ওরফে সিয়াম, নাঈম, জুলহাস বিশ্বাস ও জাফরান আল হাসান। তাদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে বলে জানায় র‌্যাব।সাদেক আলী ও তৌহিদুর রহমান র‌্যাবকে জানায়, তাদের গ্রুপই সিলেটে অনন্ত বিজয় দাশ হত্যায় অংশ নেয়। এই হত্যাকাণ্ডের পরই তৌহিদুর রহমানের নির্দেশে সাদেকসহ জুলহাস ও জাফরান অনলাইনের মাধ্যমে বিভিন্ন নামে (আনসারুল্লাহ বাংলা টিম) দায় স্বীকার করে।প্রসঙ্গত, গত ১২ মে সকালে সিলেট নগরের সুবিদবাজারে নূরানী আবাসিক এলাকায় নিজ বাসার সামনে বিজ্ঞানমনষ্ক লেখক ও ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করে অজ্ঞাত সন্ত্রাসীরা। এর আগে এই হত্যা মামলায় ফটোসাংবাদিক ইদ্রিস আলী, শাবি ছাত্র মান্নান রাহি ও তার ভাই মোহাইমিন নোমান এবং আবুল খায়েরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এর মধ্যে মান্নান রাহি আদালতে অনন্ত বিজয় হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। ছামির মাহমুদ/এসএস/পিআর

Advertisement