জাতীয়

কুকুরের কামড়ে ক্ষতবিক্ষত নবজাতক : চিকিৎসায় মেডিকেল বোর্ড গঠন

কুকুরের কামড়ে ক্ষতবিক্ষত সেই হতভাগ্য নবজাতকের মুখ, নাক, ঠোঁট ও হাতের আঙ্গুলসহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গে মৃদু কামড় ও আঁচড়ের দাগ চিহ্নিত করেছেন চিকিৎসকরা। নবজাতক কন্যা শিশুটির উন্নত চিকিৎসার জন্য শিশু বিভাগের অধ্যাপক ডা. আবিদ হোসেন মোল্লাকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। বর্তমানে স্পেশাল বেবি কেয়ার ইউনিটে ওই নবজাতকের চিকিৎসা চলছে। মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর উত্তর কাফরুলের ডোরিন গার্মেন্টসের দক্ষিণ পাশে পুরাতন বিমানবন্দর এলাকার রানওয়ের পাশ থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় এই নবজাতক শিশুটি উদ্ধার হয়। মেডিকেল বোর্ড প্রধান ডা. আবিদ হোসেন মোল্লা বুধবার সকালে জাগো নিউজকে জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় হাসপাতালে ভর্তির পর পরই নবজাতককে বেসিক লাইফ সাপোর্টে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। উচ্চমাত্রার অ্যান্টিবায়োটিকসহ প্রয়োজনীয় ইনজেকশন ও ওষুধসহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হচ্ছে। তবে নবজাতক শিশুটির শারীরিক অবস্থা ঝুঁকিমুক্ত নয়। কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, মুখ, নাক ও ঠোঁট শরীরের অত্যন্ত স্পর্শকাতর স্থান ও মস্তিষ্কের কাছাকাছি। তাই কুকুর কামড়ানোর ফলে মস্তিষ্কে সংক্রমণ ঘটার ঝুঁকি রয়ে গেছে। তবে তারা নবজাতকের সর্বোত্তম চিকিৎসার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান। শিশুটির ওজন ২ দশমকি ৫ কিলোগ্রাম বলে জানা গেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নবজাতক ও শিশু বিভাগের চিকিৎসকদের সমন্বয়ে পাঁচ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠিত হলেও শিশু বিভাগের অধ্যাপকরা নবজাতকের অধিকতর সুষ্ঠু চিকিৎসার জন্য পরামর্শ নিতে শিশু সার্জারি, নাক, কান ও গলা, প্লাস্টিক সার্জারি ও মহাখালী সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালের কনসালটেন্টকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। সকলের সম্মিলিত পরামর্শে নবজাতককে চিকিৎসা দেয়া হবে বলে জানা গেছে। মঙ্গলবার দুপুর আনুমানিক আড়াইটায় রাজধানীর উত্তর কাফরুলের ডোরিন গার্মেন্টসের দক্ষিণ পাশে পুরাতন বিমানবন্দর এলাকার রানওয়ের পাশ থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় ওই নবজাতককে উদ্ধার করা হয়। ওই সময় সেখানে কয়েকজন শিশু খেলাধুলা করছিল। হঠাৎ করেই তাদের চোখে পড়ে অদূরে ঝোঁপের ভিতর একটি কুকুর মুখ দিয়ে কি যেন কামড়ে ধরার চেষ্টা করছে। কৌতুহলবশত সামনে এগিয়ে যেতেই রক্তমাখা এক নবজাতককে দেখে ভয়ে আঁতকে উঠে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করে তারা। পরবর্তীতে জাহানারা নামে এক নারী শিশুটিকে উদ্ধার করে প্রথমে শিশু হাসপাতাল ও পরে ঢামেক  হাসপাতালে ভর্তি করেন। জাহানারা বেগম বুধবার সকালেই স্বামীকে সাথে নিয়ে নবজাতক শিশুটিকে দেখতে ঢামেক হাসপাতালে ছুটে আসেন। এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে জাহানারা বেগম জানান, দূর থেকে একনজর শিশুটিকে দেখেছেন। আগের দিনের চেয়ে কিছুটা সুস্থ মনে হয়েছে। তিনি জানান, তার ঘরে দুই ছেলে ও তিন কন্যা সন্তান রয়েছে তবুও তিনি এই নবজাতককে মেয়ে হিসেবে গ্রহণ করতে চান। মাতৃত্ববোধ থেকেই তিনি শিশুটিকে উদ্ধার করেছেন বলে জানান। # রাখে আল্লাহ মারে কে?এমইউ/এসএইচএস/পিআর

Advertisement