জাতীয়

হুইল চেয়ারে বসে অভিযানে মেয়র আতিকুল

ওয়ার্ড ভিত্তিক এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংসকরণ ও বিশেষ পরিচ্ছন্নতায় চিরুনি অভিযান পরিচালনা শুরু করেছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)। আর চিরুনি অভিযান উদ্বোধন হয় গুলশানস্থ ডা. ফজলে রাব্বী পার্ক থেকে।

Advertisement

সকাল থেকে সেখানে পরিচ্ছন্নতাকর্মী, মশক নিধন কর্মী, ডিএনসিসির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের থেকেই অপেক্ষা। মেয়র আসবেন উদ্বোধনে। অপেক্ষার পালা শেষে পার্কে উপস্থিত হন মেয়র। কিন্তু দৃশ্যটা কিছুটা ভিন্ন। গাড়ি থেকে নেমে হুইল চেয়ারে বসে এগিয়ে আসছেন মেয়র। মেয়র হুইল চেয়ারে কেন? সবার কৌতুহলি দৃষ্টি তখন মেয়রের দিকেই। অনুষ্ঠান স্থলে এসে স্ক্র্যাচে ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে চিরুনি অভিযানের উদ্বোধন করেন তিনি।

উদ্বোধন শেষে এডিস মশার লার্ভার ধ্বংসের অভিযানে অংশ নেন মেয়র আতিকুল। হুইল চেয়ারে বসেই ঢুকে পড়েন ফজলে রাব্বী পার্কের পাশেই ১/এ নম্বর ৭ তলা বাড়িতে। প্রথমে হুইল চেয়ার পরে স্ক্র্যাচে ভর করে লিফটে উঠে যান ৭ তলায়। সেখানে সন্ধান পান ফেলে রাখা পরিত্যাক্ত কমডে এডিস মশার লার্ভা। এছাড়া ফুলের টবগুলোতেও পাওয়া যায় এডিস মশার লার্ভা। এটি একটি বাড়ি হলেও পুরো ভবনেই বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। আর দেরি না করে মেয়র সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন জরিমানা করতে।

বাসার কেয়ারটেকারকে ডেকে সঙ্গে জরিমানা করেন আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হেমায়েত হোসেন। এ সময় ভবন মালিককে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। অনাদায়ে এক মাসের জেল।

Advertisement

পরে মেয়র ওই বাড়িতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে এমন স্টিকার লাগিয়ে দেন।

কেন মেয়র হুইল চেয়ারে বসে অভিযানে এমন প্রশ্নে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, সোমবার (২০ আগস্ট) ডিএনসিসির মহাখালী এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। সে সময় ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া রোগের বাহক এডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় পারটেক্স গ্রুপকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। আর সেই অভিযানে গিয়েই পা মচকে যায়। ডাক্তার বলেছেন পুরো রেস্টে থাকতে, কিন্তু আমি তো বসে থাকতে পারি না। তাই হুইল চেয়ারে বসেই এডিস মশার লার্ভা ধ্বংসের অভিযানে এসেছি।

এদিকে এডিস মশা নির্মূলে ডিএনসিসি ‘ওয়ার্ড ভিত্তিক এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংসকরণ ও বিশেষ পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে চিরুনি অভিযান শুরু করেছে।

অভিযানটি আজ ১৯ নম্বর ওয়ার্ড (গুলশান ও বনানী এলাকা) থেকে শুরু হয়। এ ওয়ার্ডকে ১০টি ব্লকে ভাগ করে প্রতিটি ব্লককে ১০টি সাব-ব্লকে ভাগ করা হয়। প্রতিদিন ১টি ব্লকের ১০টি সাব-ব্লকের প্রতিটি বাসা-বাড়ি, প্রতিষ্ঠান, খোলা জায়গা ইত্যাদি সম্পূর্ণরূপে পরিষ্কার ও এডিস মশার লার্ভা ধ্বংস করা হবে। এভাবে ১০ দিনে এ ওয়ার্ডটি সম্পূর্ণরূপে পরিষ্কার এবং এডিস মশার লার্ভা নির্মূল করা হবে। ডিএনসিসির অন্য ওয়ার্ডেও পর্যায়ক্রমে এ অভিযান পরিচালনা করা হবে।

Advertisement

ফজলে রাব্বী পার্কের পাশেই ১/এ নম্বর ৭ তলা বাড়িতে অভিযান পরিচালনা শেষে আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হেমায়েত হোসেন বলেন, আমরা এ বাড়িতে ছাদের উপরে পরিত্যাক্ত কমডে এডিস মশার প্রচুর লার্ভা পেয়েছি। চারেদিকে ডেঙ্গুর এত আতঙ্ক, প্রচার প্রচারণার পরও এই ভবনের মালিক সচেতন হয়নি। সে কারণে আমরা সিটি কর্পোরেশনের আইন অনুযায়ী ভবন মালিককে এক লাখ টাকা জরিমানা করেছি। অনাদায়ে এক মাসের জেল দিয়েছি।

এএস/ এএইচ/এমকেএইচ