মাগুরায় আওয়ামী লীগ নেতা আমিরুল ইসলামের মৃত্যুর ঘটনায় গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপ-পরিদর্শক ওলিয়ার রহমান ও সাত সদস্যসহ মোট ১৫ জনকে আসামি করে আদালতে হত্যা মামলা হয়েছে।
Advertisement
মাগুরার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নিহতের বড় ভাই বাহারুল ইসলাম রোববার (১৮ আগস্ট) দুপুরে বাদী হয়ে এই মামলা করেন।
মামলায় ডিবি পুলিশের এসআই ওলিয়ার রহমান, কনস্টেবল বুলবুল, বাহারুল বিশ্বাস, আক্তার বিশ্বাস, তছিয়ার বিশ্বাস, আল-আমিন বিশ্বাস, ইয়ামিন বিশ্বাস, সেলিম বিশ্বাস, মাছুম বিশ্বাস, রেজাউল মন্ডল, সাহেব আলী, সবুজ শেখ, খাইরুল মোল্যা, নুরোল শেখ ও আলী মোল্যাকে আসামি করা হয়।
মামলায় বিবরণীতে বাদী অভিযোগ করেন, ডিবি পুলিশের এসআই ওলিয়ার রহমান, কনস্টেবল বুলবুল আলমসহ ৭ সদস্যের একটি দল স্থানীয় জামায়াত-বিএনপি নেতাদের সঙ্গে গোপন আঁতাত করে, মোটা অংকেরর টাকার বিনিময়ে তার ভাই আমিরুল ইসলামকে হত্যার পরিকল্পনা করে।
Advertisement
বিরণীতে আরও বলা হয় গত ৬ আগস্ট বিকেলে তারা মামলার ৩ নম্বর আসামি ও স্থানীয় বিএনপি নেতা বাহারুল বিশ্বাসের বাড়িতে যায় এবং সেখানে মামলার অপর আসামিদের সঙ্গে মিলে আমিরুলকে হত্যার ষড়যন্ত্র ও পরিকল্পনা করে।
এরপর সেদিন বিকেলে আমিরুলকে স্থানীয় শ্রীকোল বাজারের একটি চায়ের দোকানে বসে থাকতে দেখে হত্যার উদ্দেশ্যে ধাওয়া করে আসামিরা। প্রাণ বাঁচাতে তখন আমিরুল দৌড়ে কুমার নদীতে ঝাঁপ দেয়। এ সময় এসআই ওলিয়ার রহমান নৌকায় করে আমিরুলের কাছে গেলে সে বাঁচার জন্য তার (এসআই ওলিয়ার) সাহায্য চায়। তখন এসআই ওলিয়ার নৌকার লগি দিয়ে আমিরুলের মাথায় আঘাত করেন। এরই এক পর্যায়ে আমিরুল নদীতে ডুবে যায় বলে অভিযোগ করেন বাহারুল ইসলাম।
এ সময় সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসা স্থানীয় মানুষদের গুলি করার ভয় দেখিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে চলে যায় ডিবি পুলিশের দল। পর দিন ৭ আগস্ট খুলনা থেকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল এসে নদী থেকে আমিরুলের লাশ উদ্ধার করে।
বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম জানান, বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট বুলবুল ইসলাম রোববার বাদীর বক্তব্য গ্রহণ করে আগামী ১৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এ বিষয়ে আর কোনো মামলা হয়েছে কি-না জানাতে শ্রীপুর থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
Advertisement
উল্লেখ্য গত ৬ আগস্ট বিকেলে মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার শ্রীকোল ইউনিয়ন ২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আমিরুল মোল্লা পুলিশি গ্রেফতার এড়াতে কুমার নদে ঝাঁপ দিয়ে নিখোঁজ হন। পরদিন সকালে খুলনা থেকে ডুবুরিরা এসে কুমার নদী থেকে আমিরুলের মরদেহ উদ্ধার করে।
এরপর নিহতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে তাৎক্ষণিক অভিযুক্ত এসআই ওলিয়ার রহমান ও কনস্টেবল বুলবুলকে সাময়িক ববরখাস্ত করে পুলিশ লাইনে ক্লোজড করা হয়।
মো. আরাফাত হোসেন/এমএমজেড/পিআর