মতামত

ঈদযাত্রা নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন হোক

এ বছর ২৫ সেপ্টেম্বর পবিত্র ঈদুল আজহা পালিত হবে। প্রতিবছরই বিপুল সংখ্যক মানুষ পরিবার পরিজনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করার জন্য শহর ছেড়ে গ্রামে যায়। এ বছরও ইতিমধ্যেই লোকজন শহর ছাড়তে শুরু করেছে। তাদের যাত্রা নিরাপদ এবং নির্বিঘ্ন করাটাই এখন সবচেয়ে বেশি জরুরি।মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি । দূরপাল্লার বাসের টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে আগেই। আজ বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে বিআরটিসির অগ্রিম টিকিট বিক্রি। কিন্তু প্রতিবছরের মত এবারও টিকিট ইতিমধ্যেই সোনার হরিণ হয়ে উঠেছে। বিক্রির শুরুর দিনই টিকিট সংকট দেখা দেয়। ট্রেন, লঞ্চ, বাস সবক্ষেত্রেই একই অভিযোগ। ট্রেনে কোটা পদ্ধতির কারণে সাধারণ যাত্রীরা বঞ্চিত হয়। অভিযোগ রয়েছে, এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ভিআইপিসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে বরাদ্দ দেওয়া টিকিট নিজেরাই কিনে নিয়ে উচ্চ দামে তা যাত্রীদের কাছে বিক্রি করে। এছাড়া টিকিট কালোবাজারির অভিযোগ তো অনেক পুরনো। দেখা যাচ্ছে সারারাত টিকিটের জন্য অপেক্ষা করেও যাত্রীরা টিকিট পাচ্ছে না। আবার বেশি মূল্য দিলেই ভিন্ন পথে তা পাওয়া যাচ্ছে। এই কালোবাজারি বন্ধ করতে হবে। যাত্রীরা যাতে সহজেই টিকিট পায় সেটি নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনে এ জন্য ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালাতে হবে। ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় রোধ করতে হবে।  এছাড়া সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে অরক্ষিত ও ঝুঁকিপূর্ণ রেললাইনের ব্যাপারে। ফিটনেসবিহীন লঞ্চ যাতে চলতে না পারে সেটি নিশ্চিত করতে হবে। লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করাও কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এক্ষেত্রে যাত্রী সচেতনতাও অত্যন্ত জরুরি। দূরপাল্লার বাসগুলো যাতে ঈদের সময় যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করতে না পারে সে ব্যাপারেও কর্তৃপক্ষকে নজরদারি চালাতে হবে। অননুমোদিত বাস চলাচলের ব্যাপারেও দৃষ্টি দিতে হবে। কারণ ঈদে মুনাফার লোভে লোকাল বাসও হাইওয়েতে চলে। এগুলোর ফিটনেস না থাকায় অনেক ক্ষেত্রেই রাস্তায় বিকল হয়ে পড়ে। তাৎক্ষণিকভাবে রাস্তা থেকে নষ্ট বাস সরানোর তেমন কোনো ব্যবস্থা থাকে না। এ কারণে দেখা দেয় তীব্র যানজট। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের অননুমোদিত বাস  যাতে চলতে না পারে সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন। কথা এই যে, কেবল নির্দেশ দিলেই হবে না, এটি যাতে পালন করা হয় তার দিকেও নজর রাখতে হবে। রাস্তার ওপর গরুর হাঁট বসার কারণেও দেখা দেয় তীব্র যানজট। রাস্তায় যাতে গরুর হাঁট বসতে না পারে সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে হবে। বিপুল সংখ্যক মানুষ যারা মাটির টানে প্রিয়জনের সান্নিধ্যে ঈদ করতে গ্রামে যাচ্ছেন তাদের আনন্দ যেন যাত্রাপথের ভোগান্তিতে নষ্ট না হয়ে যায় সেইদিকে নজর দেওয়াই এখনকার সবচেয়ে বড় দায়িত্ব। এ ব্যাপারে কোনো উদাসীনতা কাম্য নয়। এইচআর/এমএস

Advertisement