ধর্ম

মক্কা ও মদিনা থেকে দেশে ফেরার অপেক্ষায় থাকা হাজিদের করণীয়

গত ১০ আগস্ট যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে এবারের (১৪৪০ হিজরির) হজ। হজ শারীরিক ও আর্থিক সামর্থ্যবানদের জন্য ফরজ ইবাদত। হজ শেষে নিজ নিজ দেশে ফিরতে শুরু করেছেন হাজিরা। বিমানের শিডিউল অনুযায়ী দেশে ফিরবেন তারা।

Advertisement

হজের কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ার পর নিজ নিজ দেশে যাওয়ার অপেক্ষায় থাকা মক্কা ও মদিনায় অবস্থানকারী হাজিরা অবসর সময়ে ও ঘোরাফেরা না করে ইবাদত-বন্দেগিতে অতিবাহিত করবেন। আল্লাহর তাআলার নির্দেশও এমনই।

দেশে ফেরার আগে অবশ্যই তাওয়াফে বিদা তথা বিদায়ী তাওয়াফ করে নিতে হবে। এ তাওয়াফ প্রত্যেক হাজির জন্য ওয়াজিব। এ ছাড়া হাজিদের উচিত ইবাদত-বন্দেগিতে অতিবাহিত করা। তাহলো-

- বেশি বেশি জিকির-আজকার করা।- বেশি বেশি নফল নামাজ আদায় করা।- কাবা শরিফে প্রত্যেক ওয়াক্ত নামাজ জামাআতের সঙ্গে আদায় করা।- কাবা শরিফে অবস্থানকালীন অনুষ্ঠিত জানাজায় অংশগ্রহণ করা।- মক্কায় বেশি বেশি কাবা শরিফ তাওয়াফ করা।- কাবা শরিফের মুলতাযেম, হাতিমে কাবা ও মাকামে ইবরাহিমে দোয়া করা।- মদিনায় মসজিদে নববির জামাআতে অংশগ্রহণ করা।- মসজিদে নববিতে অনুষ্ঠিত জানাজায়ও অংশগ্রহণ করা।- মসজিদে নববির রিয়াজুল জান্নায় নামাজ ও দোয়া করা।- রিয়াজুল জান্নাহ ও রওজা শরিফ সংলগ্ন খুঁটিগুলোর পাশে দাঁড়িয়ে দোয়া করা।- মদিনায় অবস্থানকালে বেশি বেশি প্রিয় নবির দরুদ পড়া এবং রওজায় নিয়মিত সালাম দেয়া।

Advertisement

সর্বোপরি মসজিদে হারাম তথা কাবা শরিফ এবং মদিনার মসজিদে নববিতে সব সময় আমলে সালেহ তথা বেশি বেশি ভালো কাজ করা। কেননা মসজিদে হারামের প্রতি ওয়াক্ত নামাজে ১ লাখ রাকাআতের সাওয়াব পাওয়া যায়। ভালো কাজের সাওয়াব অনেকগুণ বেশি।

অন্যদিকে মদিনার মসজিদে নববিতে প্রতি রাকাআত নামাজের সাওয়াব ৫০ হাজার ওয়াক্তের সমান। সেখানে সব ইবাদতের ফজিলতও অনেকগুণ বেশি।

সতর্ক থাকতে হবে যেমক্কা ও মদিনায় কোনোভাবেই অন্যায় ও খারাপ কাজ করা যাবে না। এ থেকে সাবধানতা অবলম্বন করা জরুরি। কারণ ভালো কাজের প্রতিদান যেমন বেশি, তেমনি যদি মক্কা ও মদিনার হারামের সীমানায় কেউ অন্যায় কাজ করে তবে তার পরিণতিও অত্যন্ত গুরুতর হয়।

ভুলে গেলে চলবে না যেমক্কা ত্যাগ করার আগে অবশ্যই বিদায়ী তাওয়াফ সম্পন্ন করা জরুরি। তবে ঋতুবর্তী ও নেফাসওয়ালি নারীদের জন্য তা প্রযোজ্য নয়। হাদিসে এসেছে-

Advertisement

হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন ‘লোকদেরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে তাদের শেষ সময়টি যেন সমাপন হয় বায়তুল্লাহে কিন্তু হায়েজা ঋতুবর্তী নারীদের এ বিষয়ে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।’ (বুখারি ও মুসলিম)

উল্লেখ্য, চলতি বছর সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় মোট ১ লাখ ২৬ হাজার ৯২৩ জন হজে যান। ১৭ আগস্ট থেকে ফিরতি হজ ফ্লাইট শুরু হয়েছে। আগামী ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে দেশে আসবেন সব হাজি।

সৌদি আরবের পাসপোর্ট অধিদফতরের তথ্য মতে, এ বছর গত ৭ আগস্ট (বুধবার) পর্যন্ত সারাবিশ্ব থেকে ১৮ লাখ ৩৮ হাজার ৩৩৯ হাজি সৌদি আরব যান। বিমানে ১৭ লাখ ২৫ হাজার ৪৫৫ জন, সড়কপথে ৯৫ হাজার ৬৩৪ জন, নৌপথে ১৭ হাজার ২৫০ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেন।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সব হজ পালনকারীকে মক্কা ও মদিনায় অবস্থানকালে অবসর সময়গুলো নেক আমলের মধ্যমে অতিবাহিত করার তাওফিক দান করুন। মক্কা ও মদিনার মর্যাদার প্রতি লক্ষ্য রাখার তাওফিক দান করুন। নিরাপদে নিজ নিজ দেশে ফিরে আসার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/এমকেএইচ