নিজের পরিচয়, বাড়ির ঠিকানা কোনও কিছুই বলতে পারছিল না ১২ বছরের মেয়েটি। বার বার জিজ্ঞাসা করা হলে শুধু দুটো শব্দই বলছিল, ‘খুরজা’ ও ‘জিতন’। এই দুটো শব্দে নির্ভর করেই অনুসন্ধানের কাজ শুরু করে দিল্লি পুলিশ।
Advertisement
অবশেষে গুগল ম্যাপের সাহায্যে খুরজা গ্রামের খোঁজ পেয়ে শুক্রবার তাকে পরিবারের হাতে তুলে দেয়া হয়।
মাস চারেক আগে চিকিৎসা করাতে এসে দিল্লিতে হারিয়ে গিয়েছিল মেয়েটি। হোলির দিন রাতে দিল্লির কীর্তিনগর থেকে রিকশায় উঠেছিল। কোথায় যাবে ঠিক মতো বলতে পারছিল না। পরে চালক তাকে সোজা পুলিশের কাছে নিয়ে যান।
ঠিকানা-পরিচয় জিজ্ঞাসা করলে সে পুলিশকে জানায়, তার গ্রামের নাম খুরজা, বাবার নাম জিতন। আরও জানায়, পিন্টু নামে তার এক কাকার সঙ্গে ট্রেনে করে দিল্লিতে এসেছিল সে। ট্রেনের ওয়াশরুমে তার পোশাক খুলে নেয় পিন্টু। তারপর তাকে ফেলে রেখে চলে যায়। অনুসন্ধান চালানোর জন্য এই তথ্যটুকুই ছিল দিল্লি পুলিশের কাছে।
Advertisement
পুলিশ প্রথমে আশপাশের এলাকায় খুরজা গ্রামের খোঁজ করে। কিন্তু ওই নামে কোনও গ্রাম দিল্লিতে নেই বলে জানতে পারে তারা। খুরজার কাছাকাছি নাম হওয়ায় খাজুরি খাস ও খুরেজি এলাকাতেও খোঁজ চালায় পুলিশ। কিন্তু তাতেও কোনও সুরাহা হয়নি।
পরে পুলিশ খুরজা গ্রামের খোঁজ পায় উত্তর প্রদেশে। মেয়েটিকে সেখানেও নিয়েও যায় উত্তরপ্রদেশ ও দিল্লি পুলিশের একটি দল। কিন্তু ওই গ্রামে জিতন বলে কেউ থাকে না বলে জানিয়ে দেন গ্রামবাসীরা। শুধু তাই নয়, মেয়েটিকেও কোনও দিন ওই গ্রামে দেখেননি তারা এমনটাও জানিয়ে দেন গ্রামবাসীরা। ফলে আরও সমস্যায় পড়েন তদন্তকারীরা। কিন্তু হাল ছাড়েননি।
কিশোরীর কাছে ফের তার গ্রাম এবং আশপাশের কোনও একটা এলাকার নাম জানতে চান তদন্তকারীরা। তখন সে পুলিশকে জানায়, সোনবারসায় তার মামাবাড়ি। সাকাপার নামে একটি গ্রামও আছে পাশে। এরপরই পুলিশ গুগল ম্যাপের সাহায্য নেয় সোনবারসার অবস্থান জানতে। ম্যাপ থেকে পুলিশ জানতে পারে সোনবারসা, সাকাপার এই দুটো গ্রামই উত্তর প্রদেশের সিদ্ধার্থনগর জেলায়। সেখানে গিয়ে খুরজা গ্রামেরও খোঁজ পান তদন্তকারীরা। তারপরই কিশোরীটির পরিবারের খোঁজ পেয়ে তাকে তাদের হাতে তুলে দেয় পুলিশ।
এএ
Advertisement