দেশজুড়ে

নিজ নিজ গ্রামে চিরনিদ্রায় শায়িত সোহাগ-তানিয়া

ভারতের কলকাতায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত কাজী মাইনুল আলম সোহাগ ও ব্যাংক কর্মকর্তা ফারহানা ইসলাম তানিয়ার দাফন সম্পন্ন হয়েছে। এদের মধ্যে ঝিনাইদহ পৌর এলাকার ভুটিয়ারগাতি গ্রামের কাজী মাইনুল আলম সোহাগকে রোববার বাদ জোহর পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়। ফারহানা ইসলাম তানিয়াকে কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার বেতবাড়িয়া ইউনিয়নের চাঁদট গ্রামে দাফন করা হয়েছে।

Advertisement

সকালে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে সোহাগ ও তানিয়ার মরদেহ বাংলাদেশে আনা হয়।

বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সে সোহাগের মরদেহ বাড়িতে এসে পৌঁছায়। এ সময় তার বৃদ্ধ মা-বাবা, স্ত্রী, ভাই-বোনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। মরদেহ দেখতে ভিড় করেন এলাকাবাসী। তার চাচাতো ভাই জিহাদ মরদেহ গ্রহণ করেন।

অপরদিকে দুপুর পৌনে ১টার দিকে ব্যাংক কর্মকর্তা ফারহানা ইসলাম তানিয়ার মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্সটি উপজেলার বেতবাড়িয়া ইউনিয়নের চাঁদট গ্রামে পৌঁছলে সেখানে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। বিলাপ করতে থাকেন তানিয়ার মা খুশি বেগম।

Advertisement

নিহত সোহাগের মেজো ভাই কাজী দরলুল আলম জানান, সোহাগ গ্রামীণফোনের ঢাকার মতিঝিল এলাকার এরিয়া ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার স্ত্রী রুবাইয়া সুলতানা ও চার বছরের এক মাত্র সন্তান আরাশকে নিয়ে তিনি ঢাকাতেই থাকতেন। সোহাগ চোখের সমস্যা নিয়ে গত বুধবার কলকাতার অ্যাপোলো হাসপাতালে ডাক্তার দেখাতে গিয়েছিলেন।

নিহত তানিয়ার চাচা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাবুল আকতার জানান, বাবা-মা ও একমাত্র ছোট বোনকে নিয়ে ঈদের আগের দিন গ্রামের বাড়ি চাঁদটে আসেন ব্যাংক কর্মকর্তা ফারহানা ইসলাম তানিয়া। ঈদের একদিন পর বুধবার সকালে চিকিৎসার জন্য বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে যান। নিহত ফারহানা ইসলাম তানিয়া সিটি ব্যাংকের গুলশান শাখার সিনিয়র অফিসার পদে কর্মরত ছিলেন।

তানিয়ার বাবা সাবেক সেনা সদস্য আমিরুল ইসলাম জানান, চিকিৎসার জন্য ব্যাংকের সহকর্মীদের সঙ্গে তানিয়া ভারত গিয়েছিলেন। দুর্ঘটনার দেড় ঘণ্টা আগে মেয়ের সঙ্গে তার শেষ বারের মতো কথা হয়। কাজ শেষ করে রোববার রাতের ফ্লাইটে ঢাকায় ফেরার কথা ছিল তানিয়ার।

উল্লেখ্য, শুক্রবার মধ্যরাতে বৃষ্টির কারণে কলকাতার শেক্সপিয়র সরণির একটি পুলিশ বক্সে দাঁড়িয়ে ছিলেন কাজী মাইনুল আলম সোহাগ, ফারজানা ইসলাম তানিয়াসহ তিনজন। এ সময় প্রচণ্ড গতির একটি জাগুয়ার সজোরে ধাক্কা মারে একটি মার্সিডিজকে। এরপর জাগুয়ারটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা সোহাগ ও তানিয়াকে চাপা দেয়। সেখান থেকে তাদের গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

Advertisement

মাসুদ/সাগর/আরএআর/পিআর