জাতীয়

রাখে আল্লাহ মারে কে?

দুপুর আনুমানিক আড়াইটা। রাজধানীর উত্তর কাফরুলের ডোরিন গার্মেন্টসের দক্ষিণ পাশে পুরাতন বিমানবন্দর এলাকার রানওয়ের পাশে কয়েকজন শিশু খেলাধুলা করছিল। হঠাৎ করেই তাদের চোখে পড়ে অদূরে ঝোঁপের ভিতর একটি কুকুর মুখ দিয়ে কি যেন কামড়ে ধরার চেষ্টা করছে। কৌতুহলবশত সামনে এগিয়ে যেতেই রক্তমাখা এক নবজাতককে দেখে ভয়ে আঁতকে উঠে চিৎকার চেচামেচি শুরু করে।পরবর্তীতে শিশুরা দৌড়ে গিয়ে স্থানীয় ৬৬৮/২/সি বাড়ির বাসিন্দা জাহানারা নামে একজন নারীকে ডেকে আনে। এ সময় লিপি ও তানিয়া নামে আরো দুই নারী দয়াপরবশত নবজাতককে উদ্ধার করে ঢাকা শিশু হাসপাতালে ভর্তি করেন। খবর পেয়ে কাফরুল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) কৃষ্ণ বিশ্বাস সেখানে ছুটে যান। শিশু হাসপাতালের চিকিৎসকদের পরামর্শে নবজাতককে সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। বর্তমানে ওই নবজাতক ঢামেক হাসপাতালের ২১১ নম্বর স্পেশাল বেবি কেয়ার ইউনিটে (স্কাবো) চিকিৎসাধীন।কাফরুল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) কৃষ্ণ বিশ্বাস রাতে জাগো নিউজকে জানান, কে বা কারা নবজাতককে রানওয়ের পাশের ঝোঁপঝাড়ে ফেলে রেখে যায়। উদ্ধারের কয়েক ঘণ্টা আগেই নবজাতকের জন্ম হয়েছে। তার নাভির ফুল তখনো পড়েনি। তিনি বলেন, শিশুদের চিৎকার শুনে পার্শ্ববর্তী বাড়ির জনৈক জাহানারা বেগম নবজাতককে উদ্ধার করে শিশু হাসপাতালে নিয়ে যান। পরবর্তীতে তারা সকলে মিলে নবজাতককে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে আসেন।কৃষ্ণ বিশ্বাস জানান, নবজাতককে তার জন্মদাতা বাবা-মা হয়তো মেরে ফেলতে জঙ্গলে ফেলে যায়। কিন্তু রাখে আল্লাহ মারে কে? চিকিৎসকরা তাকে জানিয়েছেন, নবজাতকের ঠোটে ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। হয়তো কুকুরে টানাটানি করার সময় কেটে গেছে। তিনি জানান, নবজাতক শিশুটিকে কুকুরে কামড়ানোর ইনজেকশন দিতে তিনি মহাখালীতে যোগাযোগ করেছেন। সকালে সেখান থেকে চিকিৎসক এসে নবজাতককে ইনজেকশন দিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছে।জাহানারার স্বামী শাহাদাত হোসেন (সাগর) স্থানীয় অর্কিড ড্রাই ক্লিনার্সের মালিক। তিনি দুই ছেলে তিন মেয়ের জনক। নবজাতক তার স্ত্রীর পরিচিত কারও সন্তান কি-না, কেন তাকে উদ্ধার করলেন এমন প্রশ্নের জবাবে জাগো নিউজকে জানান, নিতান্তই মাতৃত্ববোধ থেকে তার স্ত্রী শিশুটির প্রাণ বাঁচাতে হাসপাতালে নিয়ে যান।এমইউ/বিএ

Advertisement