গণমাধ্যম

নবম ওয়েজবোর্ড : প্রেস ক্লাবের গেটে সাংবাদিকদের বিক্ষোভ

নবম ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়নসহ কয়েকটি দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের প্রধান গেটে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে সাংবাদিকরা।

Advertisement

রোববার দুপুরে এই সমাবেশ করেন তারা। এ সময় নবম ওয়েজবোর্ডের রোয়েদাদের গেজেট প্রকাশের বিরুদ্ধে নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (নোয়াব) মামলার প্রতিবাদ, গণমাধ্যমকর্মী আইন পাস, ছাঁটাই বন্ধসহ সাংবাদিকদের নিরাপত্তার দাবি নিয়ে আলোচনা করেন তারা।

সমাবেশটি আয়োজন করে সাংবাদিক শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি মোল্লা জালাল। এ সময় তিনি বলেন, অনেকে বলেছেন নোয়াবের বিরুদ্ধে আদালতে যেতে। আমি বলব, নোয়াব মামলা করেছে সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে, সরকারের বিরুদ্ধে। সরকার এ বিষয়টি দেখবে, আমরা সরকারকে চাপ প্রয়োগ করব।

তিনি বলেন, আগামীকাল সোমবার মন্ত্রিসভার মিটিং। আজ আমরা স্মারকলিপি দেব যাতে সরকার জানে যে আমাদের পকেটে কী আছে।

Advertisement

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী বলেন, ওয়েজবোর্ড তৈরি নিয়ে যতগুলো সভা হয়েছে তার মধ্যে পাঁচটিতে নোয়াবের প্রতিনিধি ছিল। যদিও মহার্ঘ ভাতা দেয়ার সিদ্ধান্তের বৈঠকে তারা বয়কট করেছেন। তবে অন্য সভায় সংবাদপত্রের মালিকপক্ষের প্রতিনিধি, প্রকাশক ও একটি সংবাদপত্র সংশ্লিষ্ট সংগঠনও উপস্থিত ছিল। ওয়েজবোর্ড নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করার সময় কিছু না বললেও গেজেট প্রকাশের আগ মুহূর্তে তারা মামলা করে পিঠ দিয়ে ছুরি মারলো।

এ সময় নোয়াবের সভাপতি ও প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানকে 'মামলাবাজ' উল্লেখ করে তাকে ভবিষ্যতে অবাঞ্ছিত ঘোষণার হুমকি দেন সাংবাদিকরা।

সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ফেডারেল ইউনিয়ন অব নিউজপেপার প্রেস ওয়ার্কার্সের সভাপতি মো. আলমগীর হোসেন খান, মহাসচিব কামাল উদ্দিন, বাংলাদেশ সংবাদপত্র কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি মো. মতিউর রহমান তালুকদার, মহাসচিব মো. খায়রুল ইসলামসহ বিভিন্ন সংঠনের সদস্য ও নেতারা।

সমাবেশ শেষে সাংবাদিক ও নেতারা একটি বিক্ষোভ মিছিল করে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের বরাবর একটি স্মারকলিপি দেন।

Advertisement

স্মারকলিপিতে সাংবাদিকদের ১৪টি দাবি উপস্থাপন করা হয়। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে নবম ওয়েজবোর্ডের গেজেট প্রকাশ, চলতি সংসদ অধিবেশনে গণমাধ্যমকর্মী আইন পাস, টেলিভিশন চ্যানেলে কর্মরত সাংবাদিকদের জন্য আলাদা ওয়েজবোর্ড গঠন, পত্রিকার রেট কার্ড ও বাস্তবচিত্র নিয়ে পুনঃতদন্ত, সাংবাদিকতায় যোগদানের ন্যূনতম যোগ্যতা স্নাতক অথবা পিআইবির সাংবাদিকতা ডিপ্লোমা কোর্স সম্পন্ন বাধ্যতামূলক করা, দৈনিক পত্রিকার সম্পাদক হওয়ার ন্যূনতম যোগ্যতা ১৫ বছর করা।

উল্লেখ্য, গত কয়েক বছর ধরে নবম ওয়েজবোর্ড ঘোষণার দাবিতে আন্দোলন করছেন গণমাধ্যমকর্মীরা। কিন্তু নোয়াব নবম ওয়েজ বোর্ডের রোয়েদাদ প্রস্তাব বাস্তবসম্মত নয় দাবি করে তার গেজেট না করতে হাইকোর্টে রিট আবেদন করে।

সেই রিটের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৬ আগস্ট নবম ওয়েজ বোর্ডের সুপারিশের গেজেট প্রকাশে দুই মাসের স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে রুলসহ আদেশ দেন হাইকোর্ট।

তবে রাষ্ট্রপক্ষ হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করার পর তা ১৯ আগস্ট আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান চেম্বার বিচারপতি।

গত বছরের ১৯ জানুয়ারি আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি মো. নিজামুল হককে প্রধান করে ১৩ সদস্যের নবম ওয়েজবোর্ড গঠন করে সরকার।

এআর/জেএইচ/এমএস