দেশজুড়ে

ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয়ে চাঁদাবাজি, পুলিশের সোর্সকে গণধোলাই

নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলায় ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয়ে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে জনতার গণধোলাইয়ের শিকার হয়েছেন শামীম নামে পুলিশের এক সোর্স। এছাড়া চাঁদাবাজির সময় পুলিশের দুই এএসআই জনতার তোপের মুখে পালিয়ে যান।

Advertisement

শনিবার (১৭ আগস্ট) রাতে উপজেলার সাবদিতে ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসী জানায়, ঈদ উপলক্ষে বন্দরের সাবদী এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে অস্থায়ীভাবে অনেক দোকানপাট গড়ে ওঠে। আর এসব দোকানপাট থেকে ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয় দিয়ে পুলিশের সোর্স শামীম প্রতিদিনই টাকা নিতেন। আর তাকে সহযোগিতা করতেন বন্দর থানা পুলিশের এএসআই আমিনুল ও আনোয়ার।

প্রতিদিনের মতো এএসআই আমিনুল ও আনোয়ার এবং তাদের সোর্স শামীম শনিবার বিকেলে সাবদী এলাকার বিভিন্ন দোকান থেকে টাকা তুলতে যান। আর রাতে এএসআই আমিনুল হক, এএসআই আনোয়ার ও পুলিশের সোর্স শামীম ভ্রাম্যমাণ আদালতের কথা বলে বন্দরের সাবদী এলাকার নান্নুর মুদি দোকানে জরিমানা করেন। এ সময় স্থানীয় এলাকাবাসী ও আশপাশের লোকজন বিভিন্ন প্রশ্ন করলে তাদের কাছ থেকে সদুত্তর না পেয়ে ঘটনাস্থলে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।

Advertisement

এক পর্যায়ে সোর্স শামীমের ওপর চড়াও হন এলাকাবাসী। তাকে মারধর করেন তারা। এ সময় এএসআই আমিনুল ও আনোয়ার পার্শ্ববর্তী একটি বাড়িতে আশ্রয় নেন। পরে বন্দর থানার ওসি ও অতিরিক্ত পুলিশ এসে এলাকাবাসীর কাছ থেকে শামীমকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যান।

আশপাশের একাধিক দোকানি অভিযোগ করে বলেন, অভিযুক্ত দুই পুলিশ কর্মকর্তা ও সোর্স প্রায় সময়ই তাদের দোকানে আসেন এবং ভ্রাম্যমাণ আদালতের কথা বলে টাকা-পয়সা নিয়ে যান।

এর আগে জেলা গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) কর্মরত ছিলেন এএসআই আমিনুল হক। গত বছরের ২৬ আগস্ট রাতে শহরের খানপুর এলাকার ‘মাই লাইফ’ ফাস্টফুডের দোকানিদের সাথে ডিবির সংঘর্ষের ঘটনায় ফাস্টফুডের মালিক জালাল উদ্দিনের স্ত্রী রিনা ইয়াসমিনের মামলায় তাকেও আসামি করা হয়।

এ বিষয়ে বন্দর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ওই দোকানে গাঁজা ও লায়ন নামে নিষিদ্ধ যৌন উত্তেজক পানীয় বিক্রি হয় এমন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে পুলিশের নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালত চালাতে হলে তো ম্যাজিস্ট্রেট প্রয়োজন। আসলে অভিযান চালালে এলাকাবাসী উত্তেজিত হয়ে পড়ে। পরে আমি গিয়ে এলাকাবাসীকে নিভৃত করি এবং সোর্স শামীমকে পুলিশি হেফাজতে থানায় নিয়ে আসি। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

Advertisement

ওই দুই পুলিশ সদস্য ও সোর্সের বিরুদ্ধে এর আগেও অভিযানের কথা বলে দোকানিদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওসি বলেন, এমন কোনো অভিযোগ কেউ আমাদের কাছে করেনি। আমরা অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

এ বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপারের মিডিয়া উইংয়ের কর্মকর্তা (পরিদর্শক) মো. সাজ্জাদ রোমন বলেন, অভিযোগের বিষয়ে আমরা অবগত হয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে পুলিশ সদস্যকেও ছাড় দেয়া হবে না।

মো. শাহাদাত হোসেন/এমএসএইচ