আন্তর্জাতিক

বিনা যুদ্ধেই জঙ্গি বিমান হারাচ্ছে ভারত, নিহত হচ্ছেন পাইলট

ভারতে চলতি বছরে বিনা যুদ্ধে পৃথক ১০টি ঘটনায় অন্তত ১১ যুদ্ধ বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। বিমান বিধ্বস্তের এ ঘটনায় প্রাণ গেছে কমপক্ষে ২২ জনের। সব মিলিয়ে ২০১৯ সাল ভারতীয় বিমান বাহিনীর জন্য একটি রক্তাক্ত বছরে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছে দেশটির একটি সংবাদ মাধ্যম।

Advertisement

সর্বশেষ ধারাবাহিক যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে ভারতের আসাম রাজ্যের তেজপুরে। গত ৮ আগস্ট রাতে আকাশে ওড়ার কয়েক মিনিটের মধ্যে একটি ধান ক্ষেতে বিধ্বস্ত হয় দেশটির বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান সুখোই এসইউ এমকেআই। দুই পাইলট সৌভাগ্যক্রমে বিমান থেকে বের হয়ে আসতে পেরেছিলেন। তবে একজন এ ঘটনায় মারাত্মক আহত হয়েছেন এবং ভবিষ্যতে আর বিমান চালাতে পারবেন না তিনি।

ভারতীয় বিমান বাহিনীর চলতি বছরটি শুরু হয়েছিল জাগুয়ার বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার মাধ্যমে। ২৮ জানুয়ারি উত্তর প্রদেশের কুশিনগর জেলায় এ ঘটনা ঘটে। এটিও আকাশে ওড়ার কয়েক মিনিটের মধ্যে বিধ্বস্ত হয়। গোরখাপুর বিমান ঘাঁটি থেকে ছক বাঁধা প্রশিক্ষণের জন্য আকাশে উড়েছিল বিমানটি। বিধ্বস্ত হওয়ার আগে পাইলট নিরাপদে বের হয়ে আসতে সক্ষম হয়েছিলেন।

কয়েকটি সূত্র বলছে, কারিগরি ত্রুটি আঁচ করতে পেরেছিলেন চালক। তাই বিমান থেকে জরুরিভিত্তিতে বের হয়ে আসার আগেই একে জনবহুল এলাকা থেকে দূরে সরিয়ে নেন তিনি।

Advertisement

পরবর্তী মাসটি ভারতের বিমান বাহিনীর জন্য বেশ তিক্ত হয়ে থাকবে। পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের বালাকোটে চালানো বিমান হামলাকে ভারত সফল হিসেবে দাবি করা সত্ত্বেও এ মাসটি বেশ তিক্ত হিসেবে গণ্য করা হয়।

১ ফেব্রুয়ারি পরীক্ষামূলক উড্ডয়নের সময় বিধ্বস্ত হয় ভারতীয় বিমান বাহিনীর মান-উন্নত মিরেজ ২০০০। এ ঘটনায় নিহত হন দুই পাইলট। ১২ ফেব্রুয়ারি রাজস্থানের জয়সালমারে বিধ্বস্ত হয় মিগ-২৭। তবে এ দুর্ঘটনায় ভারতীয় বিমান বাহিনীর পাইলট নিরাপদে বের হতে সক্ষম হয়েছিলেন।

১৯ ফেব্রুয়ারি ভারতীয় বিমান কসরত (অ্যাক্রোবেটিক) দল সূর্য কিরণের দু’টি বিমান বিধ্বস্ত হয়। এয়ার ইন্ডিয়া শোর মাত্র একদিন আগেই ব্যাঙ্গালুরের ইয়েলাহানকা বিমান ঘাঁটির কাছে বিমান দু’টি বিধ্বস্ত হয়। বিমান থেকে দু’জন পাইলট বের হয়ে আসতে সক্ষম হলেও একজন পাইলট শেষ পর্যন্ত নিহত হয়েছিলেন।

২৭ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান বিমান বাহিনীর সঙ্গে আকাশ যুদ্ধে ভারত অন্তত একটি মিগ-২১ হারায়। পাকিস্তান দাবি করেছে ভারতীয় দু’টি বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। এর একটি ভারতীয় সীমানার মধ্যে পড়েছে। তবে মিগ-২১’এর পাইলট অভিনন্দনকে আটক করতে সক্ষম হয়েছিল পাকিস্তান।

Advertisement

একই দিনে আরও একটি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। পাকিস্তানের সঙ্গে আকাশ যুদ্ধ যে এলাকায় হয়েছে সেখান থেকে অন্তত ১০০ কিলোমিটার দূরে এ ঘটনা ঘটে। ভারতীয় বিমান বাহিনীর এমআই-১৭ভি৫ হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে ভারতীয় বিমান প্রতিরক্ষা বিভাগের হামলায়। এ ঘটনায় ছয় সেনা সদস্য এবং ভূমিতে এক বেসামরিক নাগরিকসহ মোট সাতজন প্রাণ হারান।

৮ এবং ৩১ মার্চে ভারত হারায় দু’টি মিগ বিমান। রাজস্থানের বিকানারে বিধ্বস্ত হয় মিগ-২১। এটি পাখির আঘাতে ভূপাতিত হয়েছিল। আর যোধপুরে বিধ্বস্ত হয় মিগ-২৭। বিমান দুটির উভয় পাইলট নিরাপদে বের হয়ে আসতে পেরেছিলেন।

তিন মাস পরে গত ৩ জুন ১৩ আরোহীসহ নিখোঁজ হয়ে যায় ভারতীয় বিমান বাহিনীর এএন-৩২ পরিবহন বিমান। কয়েক দিনব্যাপী তল্লাশি অভিযান চালিয়ে বিধ্বস্ত বিমানটি উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছিল। চীন সীমান্তবর্তী আসামের জোরহাটের মেচুকা বিমান ক্ষেত্রে যাওয়ার পথে এটি বিধ্বস্ত হয়। পার্সট্যুডে।

এসআইএস/এমকেএইচ