‘আমরা যুবলীগের ক্লাব ঘরে আড্ডা দিচ্ছিলাম। হঠাৎ তার পোড়ার গন্ধ। কিছুক্ষণ পর আগুন ও ধোঁয়া বেড়ে যায়। যেভাবে পারছি ক্লাব থেকে বের হয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করি। কিন্তু আগুন না নিভে বরং বেড়ে যাওয়ায় ৯৯৯ এ ফোন করে আগুনের খবর জানাই। এরপর ফায়ার সার্ভিস আসে।
Advertisement
বলছিল আগুনে ৯৫ শতাংশ পুড়ে যাওয়া বস্তির বাসিন্দা মেহেদী হাসান নামের এক কিশোর। মিরপুর শহীদ পুলিশ স্মৃতি স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র মেহেদী বলছিল, ‘মা হাজেরা বিবিকে নিয়ে শুধু পিএসপির সার্টিফিকেট ও কিছু জামা-কাপড় নিয়ে বের হতে পারছি।’
মেহেদীর মা কাঁদছিলেন আর বলছিলেন, ‘সব শেষ হয়ে গেলো। দীর্ঘ দিনের জমানো টাকা, সাজানো সংসার ছেড়ে খালি হাতে বের হয়েছি। আমার জায়গা এখন রাস্তায়। আর কিছুক্ষণ দেরি হলে হয়তো মারাই যেতাম।’
মেহেদীর বাবা শেখ ফরিদম তিনি পেশায় সবজি ব্যবসায়ী।
Advertisement
রাজধানীর মিরপুর সেকশন-৭ রূপনগর থানার পেছনে চলন্তিকা মোড়ে বস্তিতে ২০ থেকে ২৫ হাজারের মতো ঘর ছিল, তার প্রায় সবই পুড়ে গেছে।
সুমনা বেগম নামে আরেক নারী টিভি ঘাড়ে করে নিয়ে বেরিয়ে আসেন বস্তি থেকে। তিনি আহাজারি করতে করতে বলেন, আল্লাহ গো, গরিবের ঘরেই কেন বারবার আগুন লাগে? দয়া করো। বাঁচাও। আমার বাচ্চার খোঁজ এখনও পাই নাই।
শুভ নামে ৭ বছরের ছেলের সঙ্গে দেখা হয়নি মা সুমনা বেগমের।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা ২২ মিনিটে ওই ভয়াবহ আগুন লাগে। পরে সাড়ের তিন ঘণ্টা পর রাত ১০টা ৩০ মিনিটের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ফায়ার সার্ভিসের ২৪টি ইউনিট।
Advertisement
রুহুল আমিন ‘মা মোটরসাইকেল সার্ভিসিং সেন্টারে’ কাজ করেন। এক বাচ্চা ও স্ত্রীকে নিয়ে ওই বস্তিতে থাকেন। আগুনের খবরে দৌড়ে বস্তিতে যান। স্ত্রী, বাচ্চাকে উদ্ধার করেন। মালামাল আনতে গিয়ে আহত হন তিনি।
জেইউ/জেডএ