আত্মহননের পথই বেছে নিলেন সাবেক ভারতীয় এবং তামিল নাড়ুর ওপেনার ভিবি চন্দ্রশেখর। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চেন্নাইয়ের মাইলাপুরে নিজের বাসভবনে পাখার সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায় চন্দ্রশেখরের প্রাণহীন দেহ। ৫৮তম জন্মদিন পালনের চেয়ে মাত্র ৬ দিন দুরে ছিলেন তিনি।
Advertisement
কেন নিজেই আত্মহননের পথ বেছে নিলেন চন্দ্রশেখর? সে ব্যাপারে এখনও কিছু জানা যায়নি। তদন্তকারী পুলিশ অফিসার সেন্থিল মুরুগান জানিয়েছেন, ‘৫৭ বছর বয়সি চন্দ্রশেখর কোনও সুইসাইড নোট লিখে যাননি।’
চন্দ্রশেখরের স্ত্রী সৌম্য পুলিশকে জানিয়েছেন, বিকাল পৌনে ৬টা নাগাদ পরিবারের সবার সঙ্গে চা খেয়ে বাড়ির দো’তলায় এই সাবেক ক্রিকেটার নিজের বেডরুমে চলে যান। সন্ধ্যায় দরজায় ধাক্কা দিয়ে কোনও সাড়া না মিললে তিনি জানালায় উঁকি দিয়ে চন্দ্রশেখরকে পাখার সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। সৌম্য এও জানিয়েছেন যে, সম্প্রতি নিজের ক্রিকেট ব্যবসায় ক্ষতির মুখ দেখতে পাওয়ায় চন্দ্রশেখর মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন।
তামিলনাড়ু প্রিমিয়ার লিগের ফ্র্যাঞ্চাইজি ভিবি কাঞ্চি বিরান্সের মালিক ছিলেন চন্দ্রশেখর। এছাড়া ভিবি’স নেস্ট নামে ভেলাচেরিতে একটি ক্রিকেট একাডেমিও চালাতেন সাবেক ভারতীয় তারকা। চন্দ্রশেখরের মরদেহ রয়াপেত্তা সরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য।
Advertisement
ভারতীয় জাতীয় দলে চন্দ্রশেখরের ক্যারিয়ার স্থায়ী হয়েছিল কেবল ৭টি ওয়ানডের জন্য। এছাড়া এই ওপেনার নিয়মিতই তামিলনাড়ুর হয়ে ইনিংস ওপেন করতেন। আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের জন্য বেশ পরিচিতি পেয়েছিলেন তিনি।
৮১টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে ৪৯৯৯ রান করেছেন তিনি। ১৯৮৭-৮৮ মৌসুমে রঞ্জি ট্রফি জয়ী তামিলনাড়ু দলের সদস্য ছিলেন চন্দ্রশেখর। সেবার কোয়ার্টার ফাইনালে উত্তর প্রদেশের বিপক্ষে ১৬০ রানের ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। ফাইনালে রেলওয়ের বিপক্ষে খেলেছিলেন ৮৯ রানের ইনিংস।
শুধু তামিলনাড়ুর হয়েই নয়, চন্দ্রশেখর ঘরোয়া ক্রিকেট খেলেছেন গোয়ার হয়েও। পরে জাতীয় নির্বাচক, রাজ্য দলের কোচ, ক্রিকেট প্রশাসক ও ধারাভাষ্যকার হিসেবেও কাজ করেছেন। ২০০৮ সালে আইপিএল চালু হওয়ার পর চেন্নাই সুপার কিংস ফ্রাঞ্চাইজির প্রথম অপরেশন ডিরেক্টর ছিলেন চন্দ্রশেখরই।
স্বাভাবিকভাবেই চন্দ্রশেখরের এই অকাল প্রয়াণে স্তম্ভিত তামিলনাড়ু এবং পুরো ভারতের ক্রিকেটমহল। চন্দ্রশেখরের আকস্মিক মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই), শচিন টেন্ডুলকার, অনিল কুম্বলে, ভিভিএস লক্ষ্মণ, স্টিফেন ফ্লেমিং, এস বদ্রিনাথ, কৃষ্ণমাচারি শ্রীকান্ত, সুরেশ রায়না, অভিনব মুকুন্দ, অনিরুদ্ধ চৌধুরীর মত ক্রীড়া তারকারা।
Advertisement
১৯৮৮ সালে ইরানি ট্রফিতে অবশিষ্ট ভারত একাদশের বিরুদ্ধে মাত্র ৫৬ বলে সেঞ্চুরি করেছিলেন চন্দ্রশেখর। ২০১৬ সালে রিশাভ পান্ত রঞ্জি ট্রফিতে ৪৮ বলে শতরান করার আগে পর্যন্ত চন্দ্রশেখর ছিলেন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট দ্রুততম শতরানকারী ভারতীয় ব্যাটসম্যান।
আইএইচএস/এমকেএইচ