জাতীয়

দায়িত্ব পালনের মাধ্যমেও জাতির পিতাকে শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা যায়

সততা, নিষ্ঠা ও দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা যায় বলে মন্তব্য করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৪তম শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

Advertisement

আলোচনা সভার শুরুতেই দুদক চেয়ারম্যান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় ১৫ আগস্টের শহীদসহ মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা প্রদর্শন ও তাদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন তিনি।

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, প্রতি বছরই জাতির পিতার মহাপ্রয়াণ দিবসে আমরা আলোচনা সভা করি, কবিতা আবৃতি হয়, তথ্যচিত্র দেখি, শপথগ্রহণ করি এবং কেন যেন মনে হয় কেউ কেউ শপথ ভঙ্গও করি। শপথ যদি ভঙ্গ না হয়, তাহলে নিজ নিজ দায়িত্ব সততা ও নিষ্ঠার সাথে পালন করার কথা, আমাদের সবার মানসিকতার পরিবর্তন হওয়ার কথা কিন্তু এগুলো সেভাবে অনুধাবন করা যাচ্ছে না। মহান আল্লাহকে হাজির-নাজির রেখে আপনারা বলুন, আপনাদের দায়িত্ব কি সঠিকভাবে পালন করছেন? এ ব্যাপারে আমার বেশ সংশয় রয়েছে।

রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য প্রতিটি দফতর বা সংস্থার বিভাজিত কর্ম রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা যদি নিজ নিজ বিভাজিত কর্ম সুচারুভাবে পালন না করে শুধু মিটিং-সিটিং নিয়ে নিজেদের ব্যস্ত রাখি তাহলে এসব আনুষ্ঠানিকতা হবে অর্থহীন। জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হলে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনের কোনো বিকল্প নেই।

Advertisement

কমিশনের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, আইন আপনারা কতটুকু মান্য করেন। প্রতিটি অনুসন্ধান বা তদন্ত সব ধরনের লোভ-লালসার ঊর্ধ্বে ওঠে মোহমুক্ত থেকে করেন কি না? এর উত্তর আমি প্রত্যাশা করব ‘হ্যাঁ’, তবে সমাজের অনেকেই উত্তর দেবেন ‘না’। এটা করার জন্য আমাদের সব ধরনের চাপ তা রাজনৈতিক হতে পারে, সামাজিক হতে পারে, পেশাগত হতে পারে- এসবের ঊর্ধ্বে থাকতে হবে। এমনকি ভবিষ্যৎ এবং বর্তমানের সব ধরনের লোভ-লালসাকে জলাঞ্জলি দিয়ে নির্মোহভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আমি কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে যোগদান করেই বলেছিলাম, প্রতিটি অভিযোগ নির্ধারিত সময়সীমার মধ্য থেকেই নিষ্পত্তি করতে হবে। তারপর অনেকেই সময় স্বল্পতার কথা বললেন। আমরা বিধি পরিবর্তন করে সময় বাড়িয়ে দিয়েছি। তারপরও নির্ধারিত সময়ে অনুসন্ধান বা তদন্ত শেষ করা যাচ্ছে না কেন? এ টাইম-লাইন না মানার কারণেই তদবিরবাজি হয়, ঘুষখোররা ঘুষ খাওয়ার সাহস পায় এবং সর্বোপরি কমিশনের ভাবমূর্তিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।

ইকবাল মাহমুদ বলেন, স্বাধীনতার স্বপ্নদ্রষ্টা, মহান স্থপিত এবং মানসিকতার পরিবর্তনের মহান দৃষ্টান্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ বাস্তবায়নে সততা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালনের জন্য মানসিকতার ইতিবাচক পরিবর্তন দরকার। যাদের মানসিকতার পরিবর্তন হয়েছে তাদের ধন্যবাদ, যাদের হয়নি তাদের প্রতি অনুরোধ নিজেকে পরিবর্তন করুন।

দুদক কমিশনার ড. মো. মোজাম্মেল হক খান বলেন, বঙ্গবন্ধু স্রষ্টার এক বিস্ময়কর সৃষ্টি, যিনি মাত্র ৫৫ বছর জীবনে কোটি কোটি মানব হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন। নবাব সিরাজ-উদৌলার খুনিরা যেভাবে অপঘাতে ঘৃণিত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছে, তেমনি বঙ্গবন্ধুর খুনিদেরও একই পরিণতি হয়েছে। আজও যারা এখনও বেঁচে আছে তারা দুর্বিষহ জীবন-যন্ত্রণা নিয়ে বেঁচে আছে।

Advertisement

আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে দুদক সচিব মুহাম্মদ দিলোয়ার বখ্ত, মহাপরিচালক এ কে এম সোহেল, পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন, মো. আক্তার হোসেন, উপপরিচালক সেলিনা আক্তার, সহকারী পরিচালক শেখ গোলাম মওলা প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

এমইউ/আরএস/এমকেএইচ