বাংলাদেশ পুলিশের ভূমিকার প্রশংসা করে জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল অতুল খারে বলেছেন, ‘যখন মানবতা প্রয়োজন, তখন আপনারা অত্যন্ত মানবিক; যখন শক্তি প্রয়োজন, তখন সেটাতেও পিছিয়ে থাকেননি। জনশৃঙ্খলা রক্ষায় অত্যন্ত দক্ষ। বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা সত্যিই পেশাদার’। মঙ্গলবার সকালে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হকের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন তিনি। এসময় তিনি বাংলাদেশ পুলিশের শান্তিরক্ষা মিশনে অতুলনীয় ভূমিকা রাখায় ভূয়সী প্রশংসা করেন। জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল অতুল খারে বলেন, তিনটি ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পুলিশকে ধন্যবাদ না দিলেই নয়। তাহল, আড়াই দশক ধরে বিশ্ব শান্তিরক্ষায় দক্ষ ও পেশাদার বাংলাদেশ পুলিশের অবদান, নারী পুলিশ প্রেরণ এবং বাংলাদেশে কর্মরত জাতিসংঘের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরাপত্তা। অতুল খারে বলেন, বাংলাদেশের পুলিশ পৃথিবীর নানা দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠায় অনবদ্য অবদান রাখছেন। নিজ দেশেও সমাজ ‘পরিবর্তনের প্রতিনিধি’ হিসেবে কাজ করছেন। জাতিসংঘের অধীনে নারীর প্রতি সহিংসতা, পারিবারিক সহিংসতা, নারী অধিকার নিয়ে কাজ করতে গিয়ে বিভিন্ন দেশের পুলিশের অভিজ্ঞতা তারা নিজ দেশে কাজে লাগাতে সক্ষম হচ্ছেন। দৃষ্টিভঙ্গি এবং আচরণ পরিবর্তনে এটা অত্যন্ত ইতিবাচক প্রয়াস বলে তিনি মন্তব্য করেন। পুলিশ সংস্কার কর্মসূচির (পিআরপি) কার্যক্রমে সন্তোষ প্রকাশ করে পিআরপির তৃতীয় পর্যায়ে অর্থায়নের ক্ষেত্রে সহায়তার আশ্বাস দেন তিনি। জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের অর্থায়নে বাংলাদেশ পুলিশের উদ্যোগে কিছু থানায় ‘নারী সহায়তা কেন্দ্র’ স্থাপনের প্রশংসা করে তিনি বলেন, লিঙ্গ ভিত্তিক অপরাধ দমন, নারীর ক্ষমতায়নে এসব কেন্দ্র কার্যকর ভূমিকা রাখবে। এসময় আইজিপি বলেন, বাংলাদেশের পুলিশ সদস্যগণের সক্ষমতা, নিষ্ঠা, আন্তরিকতা পরীক্ষিত। এমনকি আফ্রিকায় ‘ইবোলা ভাইরাস’ সংক্রমণের সময়ও আমরা শান্তি প্রক্রিয়া থেকে পিছপা হইনি। বর্তমান মিশনগুলোতে বাংলাদেশের পুলিশ মোতায়েন কমে গেছে। ইউএনপোল এবং এফপিইউ মিশনগুলোতে বাংলাদেশ পুলিশের নতুন ইউনিট নেয়ার বিষয়ে তিনি আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। ফ্রেঞ্চ ভাষাভাষী দেশে ভাষাগত দক্ষতা নিয়ে বাংলাদেশ পুলিশের একটি ইউনিট অপেক্ষমাণ রয়েছে বলে জানান আইজিপি। শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশ পুলিশের সংখ্যাবৃদ্ধির বিষয়টি যৌক্তিকতা স্বীকার করে তিনি বলেন, বিষয়টি ডিপার্টমেন্ট অব পিস কিপিং অপারেশন্সকে অবগত করা হবে। সাক্ষাৎকালে বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী রবার্ট ওয়াটসিন এবং বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি (এডমিন অ্যান্ড অপস্) মো. মোখলেসুর রহমান, অতিরিক্ত আইজিপি মইনুর রহমান চৌধুরী, ডিআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড প্লানিং) মো. লুৎফর রহমান মন্ডল, এআইজি (এমঅ্যান্ডপিআর) মো. নজরুল ইসলাম এবং এআইজি (ইউএন অ্যাফেয়ার্স) শেখ রফিকুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, বর্তমানে জাতিসংঘের ১০টি শান্তিরক্ষা মিশনে মোট ১১ শত ১২ জন পুলিশ সদস্য কর্মরত আছেন।জেইউ/এসএইচএস/পিআর
Advertisement