ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে কলেজছাত্র মো. ইকরাম হোসেন (১৭) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। ভাগনিকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করার জেরে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তাকে খুন করা হয়। এ হত্যাকাণ্ডে ইকরামের এক ভাগিনাও সম্পৃক্ত আছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
Advertisement
এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এরা হলেন সরাইল উপজেলার বড্ডাপাড়া এলাকার আবুল ফজলের ছেলে ও নিহত ইকরামের ভাগিনা ইমরানুল হাছান সাদী (১৯), বারজীবিপাড়া এলাকার মৃত মোতালিব মিয়ার ছেলে নাজিম উদ্দিন (৫৫) ও রফিক মিয়ার স্ত্রী নাজমা বেগম (৪০)।
ক্ষোভ থেকেই মামা ইকরামকে হত্যার মিশনে অংশ নেয়ার কথা জানিয়ে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবিন্দ দিয়েছেন ভগিনা সাদী।
মঙ্গলবার দুপুরে জেলা পুলিশের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানা গেছে।
Advertisement
এতে জানানো হয়, নিহত ইকরাম হোসেন সরাইল উপজেলার বর্ডার বাজার এলাকার শহিদ মিয়ার ছেলে। তিনি সরাইল ডিগ্রি কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন। উপজেলার বারজীবিপাড়ায় খালাতো বোন লাভলি আক্তারের বাড়িতে থেকে পড়ালেখা করতেন ইকরাম। লাভলির মেয়ে সুমাইয়া ইয়াসমিনও ইকরামের সঙ্গেই কলেজে পড়েন। সুমাইয়াকে প্রতিবেশী রবিউল্লার ছেলে মো. শিমুল প্রায়ই উত্ত্যক্ত করত। ইকরাম এর প্রতিবাদ করার পর গত বছরের ১৩ অক্টোবর তৎকালীন সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে ইসরাত বখাটে শিমুলকে আট মাসের কারাদণ্ড দেন। তখন থেকেই ইকরামের প্রতি ক্ষোভ তৈরি হয় শিমুলের। গত ঈদুল ফিতরের আগে সাজা ভোগ করে কারামুক্ত হন শিমুল।
আর নিহত ইকরাম কোনো এক সময় তার খালাতো বোনের ছেলে সাদীকে মারধর করেছিল বিধায় তার ওপর ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। সাদী প্রায়ই ইকরামের সঙ্গে ঘুমাতো। তাই প্রতিশোধ নেয়ার জন্য শিমুল সাদীকে উসকানি দেন। মাস দুয়েক আগে তারা দুইজন স্থানীয় একটি বিলে দেখা করে ক্ষোভ মেটানোর জন্য ইকরামকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
পরিকল্পনা মতে গত ১০ আগস্ট রাতে দিবাগত রাত ৩টার দিকে সাদী ঘরের দরজা খুলে দিলে শিমুল ও তার ভাই সোহাগ দা, ছুরি এবং বস্তাসহ ঘরে ঢুকে। সাদী তার ঘুমন্ত মামা ইকরামের পা চেপে ধরেন আর শিমুল ও সোহাগ দা, ছুরি এবং ঘরে থাকা বটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। পরবর্তীতে মরদেহ গুম করার জন্য প্লাস্টিকের বস্তায় বেধে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়। তবে ভোরের আলো ফোটার কারণে মরদেহ গুম করতে না পেরে ঘরেই লুকিয়ে রাখেন। পরে ইকরামকে ঘুম থেকে জাগানোর জন্য লাভলি ঘরের দরজা খুলে দেখেন মেঝেতে বস্তাবন্দি দুই পা বের হয়ে আছে। এ সময় লাভলি চিৎকার শুরু করলে আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে এসে ইকরামের মরদেহ দেখতে পান।
এ ঘটনায় নিহত ইকরাকের বাবা শহিদ মিয়া বাদী হয়ে ১১ আগস্ট সরাইল থানায় মামলা দায়ের করে। পরবর্তীতে পুলিশ তিনজন গ্রেফতার করে।
Advertisement
আজিজুল সঞ্চয়/এমবিআর/জেআইএম