প্রতিবছরের মতো এবারও ঈদুল আজহায় সিলেট নগরের বিভিন্ন বাসা-বাড়ি থেকে প্রায় ৮২৬টি গরু ও ২২৭টি খাসির চামড়া সংগ্রহ করেছিলেন সিলেটের খাসদবির দারুস সালাম মাদরাসার শিক্ষার্থীরা। এ চামড়া বিক্রি করে যে টাকা আয় হতো তা দিয়ে মাদরাসার তিন শতাধিক এতিম ও দরিদ্র শিক্ষার্থীর কিছুটা খরচ চলতো।
Advertisement
কিন্তু এবার চামড়াগুলো সংগ্রহ করা হলেও ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় সেগুলো নগরের আম্বরখানা এলাকায় রাস্তায় ফেলে দিয়েছেন মাদরাসা কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হককে ডেকে এনে এগুলো অপসারণ করার অনুরোধ জানান তারা। মেয়র আরিফ তাদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে চামড়া সিন্ডিকেটের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের স্থানীয় কাউন্সিলর রেজওয়ান আহমদ জানান, সারাদিন বাসা-বাড়িতে ঘুরে আমাদের মাদরাসা শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ৮২৬টি গরু ও ২২৭টি খাসির চামড়াসহ মোট ১ হাজার ৫৩টি পশুর চামড়া সংগ্রহ করেন। পরে সোমবার (১২ আগস্ট) রাতে আম্বরখানায় চমড়াগুলো বিক্রি করতে নিয়ে গিয়েছিলেন মাদরাসা শিক্ষকরা। চামড়া ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট তৈরি করে চামড়ার দাম কল্পনাতীতভাবে কমিয়ে দেন। তারা মাত্র ২৫-৩০ টাকা দাম করছিলেন প্রতি পিস চামড়ার। এই দামের চেয়ে বেশি খরচ পড়েছে চামড়াগুলো সংগ্রহ করতে।
পরে মাদরাসা কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে চামড়াগুলো রাস্তায় ফেলে দেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। যেহেতু মাদরাসা কর্তৃপক্ষের আর কোনো টাকা-পয়সা নেই তাই তারা সিটি মেয়রকে খবর দেন। খবর পেয়ে তিনি এখানে এসেছিলেন।সিটি করপোরেশনের কর্মীদের দিয়ে চমড়াগুলো রাস্তা থেকে অপসারণের অনুরোধ করা হয় মেয়রকে।
Advertisement
এক পর্যায়ে কাউন্সিলর রেজওয়ান আহমদ আবেগ তাড়িত হয়ে বলেন, এখানে চামড়া ফেলে দিয়ে আমরা আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ জানাই, অসৎ এই সিন্ডিকেট চামড়া ব্যবসায়ীদের যেন তিনি বিচার করেন।
এদিকে, সিলেটের চামড়া ব্যবসায়ীরা বলছেন, গতবছর ঢাকায় দেয়া চামড়ার টাকাই এখনও ঢাকার ব্যবসীদের কাছ থেকে তারা পাননি। সেগুলো বকেয়া থাকায় এবার তারা সরকার নির্ধারিত দাম দিয়ে চামড়া কিনতে পারছেন না।
ব্যবসায়ীদের এমন অজুহাতের একপর্যায়ে মাদরাসার পক্ষ থেকে ব্যবসায়ীদের ন্যায্য দাম দেয়ার দাবি জানিয়ে বলা হয়, প্রয়োজনে বাকিতে চামড়াগুলো কিনে নিতে। ছয়মাস পরে টাকা দিলেও হবে। কিন্তু ব্যবসায়ীরা সেটিও মানেননি। পরে চামড়া ব্যবসায়ীদের গঠিত সিন্ডিকেটের প্রতিবাদে সহস্রাধিক চামড়া আম্বরখানায় ফেলে চলে যান দারুস সালাম মাদরাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
ছামির মাহমুদ/এমএসএইচ
Advertisement