দেশজুড়ে

সিলেটের মোড়ে মোড়ে কোরবানির মাংস বিক্রির হাট

ঈদের দিন (সোমবার) বিকেলে সিলেট নগরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে বসেছে কোরবানির মাংস বিক্রির হাট। এসব হাটের বিক্রেতারা হলেন ভিক্ষুক কিংবা অসচ্ছল মানুষ। আর ক্রেতারা হলেন মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকজন, যারা কোরবানি দিতে পারেননি।

Advertisement

আবার কারও কাছ থেকে চেয়ে নিতে লজ্জায় বাইরে বের হননি, এমন লোকও আছে ক্রেতাদের ভেতর। এছাড়া রয়েছে হোটেল ব্যবসায়ীরা।

মাংস বিক্রেতারা সোমবার সারাদিন সিলেট নগরের বিভিন্ন বাসা-বাড়ি থেকে মাংস সংগ্রহ করেন। বিক্রেতাদের মধ্যে রয়েছেন একদিনের কসাই, যারা কোরবানির পশু কেটেকুটে বকশিস হিসেবে মাংস পেয়েছেন। আবার অনেকেই সচ্ছল আত্মীয়-স্বজনদের কাছে পাওয়া মাংস টাকার প্রয়োজনে বিক্রি করেছেন। এই ভ্রাম্যমাণ মাংসের হাটের ক্রেতারা কম দামে মাংস কিনতে পেরে বেশ খুশি।

সোমবার সিলেট নগরে ঘুরে দেখা গেছে, পাড়া-মহল্লা, বাজার, ফুটপাত জুড়ে যে যেখানে সুযোগ পেয়েছেন, সেখানেই বসে গেছেন মাংস নিয়ে। তবে পেশাদার কোনো মাংস ব্যবসায়ী এ হাট বসাননি। মৌসুমি কসাই, দিনমজুর, দুস্থ্, ভিক্ষুক-গরিব, শিশু যারাই কিছু মাংস জোগাড় করতে পেরেছেন, তা নিয়েই বসে গেছেন বিক্রি করতে। যারা আজকের দিনে শ্রম বিক্রি করেছেন, কোরবানিদাতাদের কাছ থেকে মাংস পেয়েছেন, তারাই এ মাংসের হাট বসিয়েছেন।

Advertisement

শুধু তাই নয়, নগরের বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে গরু জবাই ও মাংস প্রস্তুতের বিভিন্ন কাজ করা কসাইরাও বকশিস হিসেবে পাওয়া মাংস বিক্রি করে হাওরাঞ্চল সুনামগঞ্জের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা লোকজন বাড়ি ফিরেছেন হাসিমুখে। বাড়তি কিছু টাকার পাশাপাশি তারা প্রয়োজন মতো মাংসও নিয়ে গেছেন পরিবার-পরিজনের জন্য।

সিলেট নগরের সুবিদবাজার, দর্শনদেওরি, জেলরোড, বন্দরবাজারের বিভিন্ন স্থান, জিন্দাবাজার, সুরমা পয়েন্ট, হাউজিং স্টেইট গলির ভেতর, জালালাবাদ আবাসিক এলাকার মুখ, আম্বরখানা মোড়, দরগামহল্লা, সুবিদবাজারসহ বিভিন্ন মোড়ে পলিথিনের প্যাকেটে কিংবা খোলা অবস্থায় ভাগ করে পেপারের ওপর মাংসের পসরা সাজিয়ে বিক্রি করেছেন। প্রায় দুই কেজি ওজনের এই এক ভাগ মাংস বিক্রি হচ্ছে ৪৫০-৫০০ টাকায়।

বিক্রেতাদের একজন হারুন মিয়া জানান, সারাদিন ঘুরে ৪ থেকে ৫ কেজির মতো মাংস সংগ্রহ করেছেন তিনি। কিন্তু এসব মাংস রাখার জায়গা (ফ্রিজ) না থাকায় এবং কিছু টাকা লাভের আশায় সংগ্রহ করা মাংসের একটি অংশ তিনি বিক্রি করে দিয়েছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ক্রেতা বলেন, আমি কোরবানি দিতে পারিনি। এছাড়া যারা কোরবানি দেন তারা ঈদের দিন বাসা-বাড়িতে গিয়ে কাউকে কোরবানির মাংস দেন না। শুধু যারা বাসা-বাড়িতে গিয়ে হাত পেতে মাংস চায় কেবল তাদের কয়েক টুকরো মাংস দেয়া হয়। এমন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গিয়ে মাংস আনা সম্ভব না। তবে এখানে কম দামে মাংস ক্রয় করতে পেরে ভালো লাগছে।

Advertisement

ছামির মাহমুদ/এমএসএইচ