দেশজুড়ে

ছোট হয়ে যাচ্ছে সুন্দরবন

সীমানা সংক্রান্ত জটিলতার কারণে সুন্দরবনকে যথাযথ নিরাপত্তার আওতায় আনতে পারছেনা বন বিভাগ। আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও বন সংলগ্ন স্থানীয় ভূমিহীন নামধারী প্রভাবশালীদের বাধায় বিশ্ব ঐতিহ্য ম্যানগ্রোভ সুন্দরবনকে রক্ষায় এক প্রকার হিমশিম খাচ্ছের বনরক্ষীরা। পাশাপাশি পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা ও চাঁদপাই রেঞ্জের আওতাধীন ভোলা নদী ভরাট হওয়ায় বন সংলগ্ন এলাকায় ব্যাপক জনবসতি গড়ে ওঠায় সুন্দরবন সুরক্ষা বর্তমানে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। যে কারণে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছেনা অপরাধ কার্যক্রম। বন সুরক্ষায় সরকার সংশ্লিষ্টরা যতই তৎপর হচ্ছে, পাচারকারী চক্র ততই মাথাচারা দিয়ে উঠছে। এ ছাড়া দীর্ঘদিন ধরে সুন্দরবনের ভিতর দিয়ে জাহাজ চলাচল ও বন ঘেঁষে গড়ে ওঠা ব্যাপক জনবসতির কারণে বনের পরিবেশ দিন দিন বিপর্যয়ের দিকে যাচ্ছে বলে মনে করছেন পরিবেশবাদীরা।সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সুন্দরবনের শরণখোলা ও চাঁদপাই রেঞ্জের আওতাধীন ২ লাখ ৪৩ হাজার ৪৭ হেক্টর বন ভূমি থাকলেও বনের ভিতর দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে পণ্যবাহী জাহাজ চলাচলের কারণে উভয় রেঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি এক সময়ের উত্তাল ভোলা নদী ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণে ভূমিহীন নামধারীরা (ডিসিআর) এর নামে চর দখলের প্রতিযোগিতায় নেমে পড়েছে। উভয় সংকটের কারণে ধীরে ধীরে ছোট হয়ে আসছে সুন্দরবনের মানচিত্র।পরিচয় গোপন রাখার শর্তে এক বন কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বলেন, বন সংলগ্ন এলাকায় ব্যাপক জনবসতি গড়ে ওঠায় সুন্দরবনের সুরক্ষা দিন দিন কঠিন হয়ে যাচ্ছে। ভূমিহীন নামধারীরা এক প্রকার বনের মধ্যেই বসবাসসহ ব্যবসা-বাণিজ্য গড়ে তোলায় বন্যপ্রাণির স্বাভাবিক চলাফেরা বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। এবং সুযোগ পেলেই বনরক্ষীদের চোখ এড়িয়ে জনসাধারণ জঙ্গলে প্রবেশ করে পাচার কার্যক্রমে জড়াচ্ছে। মাঝে মধ্যে ২/১ জন ধরাপড়লেও প্রভাবশালীদের চাপের মুখে ছেড়ে দিতে হয়। অন্যথায় অনেক ক্ষেত্রে চাকরি ও জীবন নিয়ে শংকায় থাকতে হয়। স্বাধীন ভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারছে না বন সংশ্লিষ্টরা।এ বিষয়ে পরিবেশ বাদী সংগঠন বেলার খুলনাস্থ বিভাগীয় সমন্বয়কারী মো. মাহ্ফুজুর রহমান মুকুল জাগো নিউজকে বলেন, ভরাট হওয়া ভোলা নদী খনন করার পাশাপাশি বন ঘেঁষে গড়ে ওঠা অবৈধ জনবসতিদের বিকল্প স্থানে সরিয়ে নেয়া না গেলে সুন্দরবন সুরক্ষা সম্ভব নয়। শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. কামাল আহ্মেদ বলেন, বন সুরক্ষায় বনরক্ষীদের আধুনিকভাবে গড়ে তোলাসহ তাদের সমস্যাগুলো দূর হওয়া প্রয়োজন। এবং বনের সম্পদ রক্ষায় জাহাজ চলাচলসহ সব ধরনের পাস পারমিট বন্ধ করে বনকে বিশ্রাম দেয়া উচিত। পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের ডেপুটি ফরেস্ট অফিসার মো. সাইদুল ইসলাম জানান, সুন্দরবনের সীমানা নির্ধারণ ও সুরক্ষার জন্য তিনি জেলা প্রশাসকের (ডিসি) সঙ্গে শিগগিরই বৈঠক করবেন। এবং বন ঘেঁষে গড়ে ওঠা অবৈধ জনবসতিদের অপসারণের জন্য প্রশাসনের সহয়তায় উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। এমএএস/পিআর

Advertisement