ঈদুল আজহার নামাজ শেষ। রাজধানীর অধিকাংশ স্থায়ী বাসিন্দার ব্যস্ততা কোরবানির পশু জবাই নিয়ে। আত্মীয়-স্বজন প্রতিবেশী কিংবা পার্শ্ববর্তী গরিব-মিসকিনদের মধ্যে মাংস বিতরণও করতে দেখা যায় অনেককে। তবে এরমধ্যে অনেকেই বাড়ি ফিরছেন এই ঈদের দিনেও।
Advertisement
ত্যাগের মহিমার এই ঈদে সবাই যখন আনন্দ মেতেছেন আত্মীয় কিংবা প্রিয়জনদের বাসায় ঘুরতে বেড়িয়েছেন তখনও কিছু মানুষের ভিড় রাজধানীর গাবতলী ও কল্যাণপুরে। নাড়ির টানে রাজধানীতে ঈদের নামাজ শেষে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিতে দেখা যায় অনেককে। বাবা-মা-স্ত্রী-সন্তানসহ প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ আনন্দে অংশ নেয়াই তাদের উদ্দেশ্য।
কল্যাণপুর ও গাবতলী এলাকা সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, কেউ যাচ্ছেন গ্রামের বাড়ি, আবার কেউবা ঘুরতে।
ব্যক্তিগত গাড়িতে নিকট দূরত্বে কেউ যাচ্ছেন সপরিবারে কিংবা বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে ঘুরতে। আবার কেউ যাচ্ছেন সিএনজি’তে চড়েও। গণপরিবহনের সংখ্যা কম হওয়ায় রাইড শেয়ারিং এর যানেও যাচ্ছেন নিকট দূরত্বের গন্তব্যে।
Advertisement
আব্দুল মান্নান নামে কল্যাণপুর ১১ নং সড়কের একটি ভবনের কেয়ারটেকার বলেন, মালিকের একটি গরু ও দু'টি খাসি কোরবানি হলো। সকাল সাড়ে ৭টায় ঈদের নামাজ পড়েই কোরবানির কাজ শুরু করে দিতে হয়েছে। কোরবানির কাজ মোটামুটি শেষ। এখন নিজের বাড়ি যাচ্ছি মানিকগঞ্জে। মালিকের দেয়া ঈদ বোনাস, ঈদ বকশিশ ও সঙ্গে কোরবানির মাংস নিয়ে ফিরছি পরিবারের কাছে।
পাবনার বাসিন্দা মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, গতকাল সকালে ওঠার কথা ছিল দেশ ট্রাভেলসে। কিন্তু সড়কের অবস্থা আর শিডিউল বিপর্যয়ের কারণে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যাবো না। গতকাল আর যাইনি। কিন্তু আজ ঈদের নামাজ শেষে মা-বোনের ফোন। অনেক করে বলছিল ফিরতেই হবে বাড়ি। অবশ্য এখন রাস্তাও ক্লিয়ার। তাই ফের ব্যাগ গুছিয়ে টেকনিক্যাল শ্যামলী পরিবহনের কাউন্টারে আসলাম বাড়ি যাবো।
প্রায় সব পরিবহনই কমবেশি শিডিউল বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে এবার। যে কারণে অনেকে বেশ ক’টি শিডিউলের ঈদযাত্রার বাস বাতিলও করে দিয়েছিল। তবে ঈদের দিনের জন্য ২/৩টি করে বাস রিজার্ভ রেখেছেন। আগে আসলে আগে যাবেন সিস্টেমে বাস ছেড়ে যাচ্ছে গন্তব্যে।
দেশ ট্রাভেলস এর বাস কাউন্টারের সামনে দাঁড়িয়ে নাটোরের যাত্রী সালাউদ্দিন বলেন, বাড়ি যাবার কোনো সিদ্ধান্ত ছিল না। পড়াশুনা নিয়েই ব্যস্ত ছিলাম। কিন্তু নামাজের পর মন খারাপ লাগছিল। কাউকে কিছু বলিনি। সোজা ব্যাগ গুছিয়ে বাস কাউন্টারে। আকস্মিক বাড়ি পৌঁছলে খুশিও হবে সবাই।
Advertisement
আবার অনেকেই ঈদের ছুটি কাটাতে ঢাকা ছেড়ে যাচ্ছেন কক্সবাজার কিংবা সেন্টমার্টিনে। রাজধানীর রাজারবাগস্থ গ্রীনলাইন বাস কাউন্টারের সামনের ভিড় তাই স্পষ্ট করে।
আবু জাফর রাজু নামে এক যাত্রী বলছেন, গত ঈদের ন্যায় এবারও বেশ ক’দিনের ছুটি মিলেছে। বেসরকারি চাকরি করি। ঘোরার সুযোগ বিশেষ মেলে না। এই ঈদের ছুটিটাকে সুযোগ হিসেবে নিয়ে সপরিবারে যাচ্ছি কক্সবাজারে। আমার মতো আরও অনেকেই যাচ্ছে ভেবে ভালো লাগছে।
জেইউ/এসএইচএস/এমএস