প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে কার না মন চায়। সবাই চায় পরিবার-পরিজনের সঙ্গে উৎসব উদযাপন করতে। কিন্তু যাদের মা-বাবা, ভাই-বোন, আদরের সন্তান কিংবা অন্যকেউ চিরবিদায় নিয়েছেন উৎসবের দিন এলেই তাদের শূন্যতা অনুভব হয়। নিজের অজান্তেই কেঁদে ওঠে মন। তাইতো এ আনন্দের দিনে প্রিয়জনের রুহের মাগফিরাত কামনা করতে আজিমপুর কবরস্থানে ছুটে এসেছেন অনেকে।
Advertisement
ঈদের দিন সোমবার সকালে এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপ হয় রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা আনু মিয়ার।
তিনি জানান, ৩ বছর আগে তার মা মারা গেছেন। এরপর থেকে প্রতিবছর ঈদের নামাজ পড়ে আজিমপুর কবরস্থানে মায়ের কবর জিয়ারত করতে চলে আসেন আনু মিয়া।
কবরস্থানে দাঁড়িয়ে মোবাইলে তার ভাইকে আনু মিয়া বলেন, ‘নামাজ পইড়া আজিমপুর কবরস্থানে মার কবর জিয়ারত করতে আইছি। কবর জিয়ারত কইরা তোমার বাসায় আমু।’
Advertisement
আনু মিয়ার মতো আরও অনেকে নামাজ শেষে আজিমপুর কবরস্থানে স্বজনের কবর জিয়ারত করতে ছুটে এসেছেন। কেউ এসেছেন সপরিবারে, কেউবা একা। নীরবে-নিবৃত্তে দাঁড়িয়ে সুরা পাঠ করছেন কেউ কেউ। আবার কেউবা কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে দু’হাত তুলে মোনাজাত করছেন।
সরেজমিন পরিদর্শনকালে দেখা গেছে, কবরস্থানের বিভিন্ন স্থানে দাঁড়িয়ে অসংখ্য লোকজন কবর জিয়ারত করছেন।
ঈদের খুশির মধ্যেও কারও কারও জন্য দিনটি দুঃখের হয়ে এসেছে। রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরের বড় গ্রামের বাসিন্দা এক গৃহবধূ গতকাল রোববার দিবাগত রাতে রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
স্বজনরা জানান, মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সম্পূর্ণ সুস্থ ছিলেন। ঈদের ঠিক আগের দিন দুটি অবুঝ শিশুকে রেখে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন। লাশ দাফনের জন্য আসা সবাই বলছিলেন, মৃত্যু অনিবার্য কিন্তু কিছু কিছু মৃত্যু মেনে নেয়া কঠিন হয়ে যায়। ঈদের আগের দিন এভাবে তরতাজা একটা মানুষ মারা যাবে-তা কেউ কল্পনাও করেননি।
Advertisement
এদিকে ঈদের দিন আয় রোজগার ভালো হবে এ আশায় আজিমপুর কবরস্থানের ভেতরে-বাইরে অসংখ্য ভিক্ষুক ভিড় করেছেন। যারা কবর জিয়ারত করতে আসছেন তারা বের হওয়ার সময় দান-খয়রাত করছেন।
আজিমপুর কবরস্থানের একজন গোর খোদক জানান, ঈদ রোজা বলে কথা নেই, বছরের ৩৬৫ দিনই এ কবরস্থানে লাশ দাফন হয়।
এমইউ/এনডিএস/এমএস