ঈদের প্রধান জামাত রাজধানীর হাইকোর্টসংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল আটটায় অনুষ্ঠিত এই প্রধান জামাতে রাষ্ট্রপতি মো.আবদুল হামিদ, প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হাসান, মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সংসদ সদস্য, সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বিভিন্ন মুসলিম দেশের কূটনীতিকসহ এতে অংশ নিয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশা ও বয়সের প্রায় লাখো মুসলমান।
Advertisement
এই জামাতে ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের জ্যেষ্ঠ ইমাম মাওলানা মুহাম্মদ মিজানুর রহমান।
দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ শেষে সমগ্র মুসলিম উম্মাহসহ দেশ ও জাতির কল্যাণ, সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
এরপর রাষ্ট্রপতি উপস্থিত সবার সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
Advertisement
এর আগে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে ঈদের প্রধান জামাত পড়তে মুসল্লিরা জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে প্রবেশ করেন।
পল্টন মোড় মৎস্য ভবন হাইকোর্টের সামনে দিয়ে তিনটি চেকপোস্টের মধ্য দিয়ে ঈদগাহ ময়দানে প্রবেশ করেন মুসল্লিরা।
ঈদ জামাতে প্রবেশের মুখে র্যাব-পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তীক্ষ্ণ নজরদারি ছিল। ঈদ জামাতে আসা মুসল্লিদের তিন জায়গায় তল্লাশি করার পরই ঈদগাহে প্রবেশ করতে দেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
তবে এ নিয়ে কারও মনে কোনো ক্ষোভ দেখা যায়নি। উল্টো কঠোর নিরাপত্তা গড়ে তোলায় দূর-দূরান্ত থেকে আসা মুসল্লিরাও সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
Advertisement
ঈদ জামাত পড়তে আসা রাজধানীর মতিঝিল এলাকার মহসিন জানান, জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে প্রধান জামাত পড়তে এসেছি। বছরের দু'টি ঈদেই আমি এখানে নামাজ পড়তে আসি। সবার সঙ্গে বড় জামাতে নামাজ পড়ার আনন্দই আলাদা। নিরাপত্তা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভালোই নিরাপত্তা। এতো বড় জামাত হবে এখানে নিরাপত্তার প্রয়োজন আছে। তবে কোনো সমস্যা হচ্ছে না বলে জানান তিনি।
সিটি কর্পোরেশন সূত্র জানিয়েছে, গতবারের মতো এবারও ৯০ হাজার থেকে এক লাখ মুসল্লির জন্য ঈদের নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা করা হয়। এর মধ্যে পাঁচ থেকে ছয় হাজার নারী মুসল্লির জন্য আলাদাভাবে পর্দা দিয়ে নামাজ আদায়ের বিশেষ ব্যবস্থা। নারীদের জন্য আলাদা প্রবেশ পথেরও ব্যবস্থা করা হয়।
গত ২৫ জুলাই থেকে ঈদগাহ ময়দান প্রস্তুতির কাজ শুরু হয়। প্রতিদিন গড়ে ১০০ থেকে ১২০ জন শ্রমিক দিনরাত কাজ করেন। এবার ৪৩ হাজার বাঁশ এবং প্রায় ৩শ’ মণ রশি দিয়ে ঈদগাহ ময়দানের প্যান্ডেল নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা হয়। ঈদ জামাতকে ঘিরে জাতীয় ঈদগাহ ও জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ৫ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
এদিকে জাতীয় ঈদগাহ ছাড়াও জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে মোট পাঁচটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জামাত হবে সকাল সাতটায়, দ্বিতীয় জামাত সকাল আটটায়, তৃতীয় জামাত সকাল নয়টায়, চতুর্থ জামাত সকাল ১০টায় এবং পঞ্চম ও শেষ জামাত সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে।
এ ছাড়া জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় সকাল সাড়ে সাতটায় ঈদ জামাতের আয়োজন করা হয়। মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, জাতীয় সংসদের হুইপ, সংসদ সদস্য, সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ এলাকার মুসল্লিরা এই নামাজে অংশ নেন।
এসআই/এসএইচএস/এমএস