জাতীয়

নিরাপত্তা বলয়ে ফাঁকা ঢাকা

রাত পোহালেই ঈদুল আজহা। এ উপলক্ষে ফাঁকা হয়েছে যানজটময় রাজধানী। নাড়ির টানে রাজধানী ছেড়ে কোটির বেশি মানুষ পাড়ি জমিয়েছে গ্রামের বাড়িতে। ফাঁকা রাজধানীর কোথাও যাতে অপরাধ সংঘটিত না হয়, সেজন্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে তৎপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

Advertisement

খুন, চুরি, ডাকাতি কিংবা যেকোনো বড় ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে পুলিশ। ফাঁকা ঢাকাকে নিরাপদ রাখতে দশ হাজারের বেশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য দায়িত্ব পালন করছে। পাশাপাশি র‌্যাব এপিবিএন সদস্যরাও নিরাপত্তায় থাকছে। ঈদের ছুটি শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ সতর্ক অবস্থান বলবৎ থাকবে।

এছাড়া রাজধানীর ঈদের জামাতকে ঘিরে নেয়া হয়েছে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা। রাজধানীর ঈদগাহ মাঠগুলোতে জামাত শুরুর আগেই নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে ডিএমপি। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশের পাশাপাশি মাঠে থাকবে র‌্যাব সদস্যরাও। স্ব স্ব এলাকায় থানা পুলিশ ছাড়াও গোয়েন্দাদের নজরদারি বাড়ানো হবে। নিরাপত্তা নিশ্চিদ্র করতে বাড়ানো হবে ‘ইন্টেলিজেন্স পুলিশিং’।

ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) ওবায়দুর রহমান বলেন, ‘ফাঁকা রাজধানীতে ডাকাতি, চুরি, ছিনতাই পুলিশ সদস্যরা কাজ করবেন। আশঙ্কা রয়েছে এমন এলাকাগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। বসানো হয়েছে নিরাপত্তা চৌকি। পাশাপাশি থাকছে টহল পুলিশও।

Advertisement

ঈদে নিরাপত্তা নিশ্চিতে কী ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে, জানতে যোগাযোগ করা হলে তেজগাঁওয়ের উপ-কমিশনার (ডিসি) আনিসুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, প্রত্যেকটি থানার ওসিকে নিরাপত্তা বাড়াতে বলা হয়েছে। আমাদের মোবাইল টিম, হুন্ডা পার্টি টহলে সার্বক্ষণিক নিয়োজিত রয়েছে। সাদা পোশাকেও পুলিশ সদস্যরা কাজ করছেন। প্রত্যেকটি বিটের প্রধানকে স্ব স্ব এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে থানার ওসিকে ব্রিফ করতে বলা হয়েছে। প্রত্যেকটি এলাকা আলাদাভাবে ঈদ উপলক্ষে ভাগ করে এডিসি ও এসিদের তত্ত্বাবধানে দেখভাল করতে বলা হয়েছে।

ঈদ জামাতের নিরাপত্তা সম্পর্কে ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ঈদুল আজহার জামাতে আগত মুসল্লীরা জায়নামাজ ও বৃষ্টি হলে ছাতা সাথে নিয়ে ঈদগাহে আসতে পারবেন। এর বাইরে কোনো কিছু সঙ্গে নিয়ে আসা যাবে না। নিরাপত্তার স্বার্থে মুসল্লিদের জায়নামাজ ও ছাতা তল্লাশির পর সেগুলো নিয়ে ঈদগাহে প্রবেশের অনুমতি দেবে পুলিশ। জামাতে দাহ্য পদার্থ থেকে শুরু করে ব্যাগ, ছুরি, দিয়াশলাই নিয়ে আসা যাবে না।

তিনি বলেন, জাতীয় ঈদগাহে ঈদ জামাতকে ঘিরে জাতীয় ঈদগাহ ও জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ৫ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে ডিএমপি। এর মধ্যে পোশাকধারী পুলিশ, সাদা পোশাকে ডিবি পুলিশ, সোয়াত, সিটিটিসি, বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট, ওয়াচ-টাওয়ার, আর্চওয়ে ও সিসিটিভি মনিটরিং ব্যবস্থা থাকবে। এর মধ্য দিয়েই মুসল্লিদের ঈদ জামাতে প্রবেশ করতে হবে।

ঈদ জামাতে প্রবেশে মানুষের চলাচল নির্বিঘ্ন করতে আব্দুল গণি রোড, দোয়েল চত্বর, মৎসভবন মোড়সহ কয়েকটি বেরিকেড থাকবে। এসব রাস্তা দিয়ে ঈদগাহের দিকে পায়ে হেটে আসতে হবে। এই বেরিকেডের ভেতর ভিভিআইপি ছাড়া কোনো গাড়ি চলাচল করতে পারবে না বলে জানান কমিশনার।

Advertisement

তিনি বলেন, সড়কে তল্লাশির পরও ঈদগাহের মেইন গেটে ঢোকার সময় মুসল্লিদের দৈবচয়নের ভিত্তিতে তল্লাশি করা হতে পারে। গোটা এলাকায় সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। পুলিশের কন্ট্রোল রুম থেকে এসব ক্যামেরার ফুটেজ রিয়েল টাইম নজরদারি করা হবে।

পুলিশের পাশাপাশি ঈদ নিরাপত্তায় কাজ শুরু করেছে পুলিশের এলিট ফোর্স র‌্যাব। র‌্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ বলেন, ঈদের সময় ঢাকার বিরাট অংশ ফাঁকা হয়ে যায়। ঢাকার এই ফাঁকা বাড়ি, মার্কেট ও ব্যাংকগুলোতে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করবে র‌্যাব। এছাড়া চুরি ছিনতাইসহ সব ধরনের অপরাধ রুখতে মাঠে কাজ করবে।

তিনি বলেন, লঞ্চ টার্মিনাল, বাস টার্মিনাল ও রেলকেন্দ্রিক আমাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যেকোনো ধরনের সহযোগিতা করতে আমরা প্রস্তত।

র‌্যাব মহাপরিচালক বলেন, ঈদের জামাতের নিরাপত্তায় ঢাকার ঈদগাহ মাঠে সিসি ক্যামেরা স্থাপনসহ সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

জেইউ/এমএসএইচ/জেআইএম