প্রবাস

ইতালিতে আগাম নির্বাচনের তোড়জোড়

এক বছর পার হতেই আবারও সরকার সংকট দেখা দিয়েছে ইতালিতে। সরকারের মেয়াদ পাঁচ বছর উত্তীর্ণ হওয়ার আগেই দুবার সরকার সংকটে পড়ে দেশটি। এর ফলে আবারও আগাম নির্বাচনের আহ্বান করেছে ক্ষমতাসীন লেগা নর্দা।

Advertisement

গত বছর ৪ মার্চ ইতালিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু এককভাবে কেউ ভোটে বিজয়ী না হওয়ায় সরকার গঠন করতে না পেরে লেগা নর্দ ও ফাইস্টার মুভমেন্ট একটি কোয়ালিশন সরকার গঠনের মাধ্যমে দেশ পরিচালনার কার্যক্রম শুরু হয়।

পরে জোটের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী নিয়ে দ্বন্দ্ব থাকায় নিরপেক্ষ হিসেবে কোন্তিকে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন করা হয়। তিনিও অবশেষে পদত্যাগ করলেন।

এর আগে ২০১৬-২০১৮ পহেলা জুন অর্থাৎ নির্বাচনের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত দেশটির ৫৭তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পাওলো জেন্তুলোনি রাষ্ট্র পরিচালনা করেন। তিনি নানা সমস্যার কারণে রাষ্ট্রীয় পরিচালনার দায়িত্ব ছেড়ে দিলে রাষ্ট্রপতি সেরজো মাতারেল্লা সংসদ ভেঙে দেন। এরপর ৪ মার্চ ২০১৮ একটি জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে জুসেপ্পে কোন্তিকে দেশটির ৫৮তম প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করা হয়।

Advertisement

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী কোন্তি পদত্যাগ করেছেন। এর ফলে ইতালির রাজনীতি নতুন মেরুকরণে মোর নিচ্ছে। এদিকে ক্ষমতাসীনদের মধ্যে সমস্যা উত্তরণের জন্য নতুন আরেকটি নির্বাচনের কথা নিয়ে বেশ আলোচনা চলছে। যেকোনো সময় ঘোষিত হতে পারে ইতালির নতুন নির্বাচনের তারিখ।

সরকার দলের উপ-প্রধানমন্ত্রী লুইজি দি মাই এ ব্যাপারে বলেন, ‘নতুন নির্বাচনের জন্য তার দল ফাইভস্টার মুভমেন্ট প্রস্তুত রয়েছে। এ নিয়ে তার দল কোন ভয় পায় না ‘

লেগা নর্দ নেতা, উপ প্রধানমন্ত্রী ও বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাত্তে সালভিনি ইতালির ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য কাজ করতে চান। পাশাপাশি তিনি ইতালিকে আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিতে চান। দেশের কর্ম চাঞ্চল্য, জনগণের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাবেন তিনি। সেজন্য এমন একজন সরকার চান যেন টানা পাঁচ বছর টিকে থাকতে পারে।

মাত্তে সালভিনি স্থানীয় গণমাধ্যমে আগাম নির্বাচন করার জন্য একটি প্রস্তাব দেন। সম্ভাব্য তারিখ ১৩ অক্টোবর উল্লেখ করেন। সেজন্য ৯৪৫ সংসদ সদস্যকে রোমের চেম্বার অফিসে আসতে রেজিস্ট্রারর্ড চিঠি দিতে আহ্বান করেন তিনি। নির্বাচন ১৩ অক্টোবর সম্ভব না হলে ২০ অক্টোবরের জন্য প্রস্তাব দেন। তিনি বলেন, এক সপ্তাহ যদিও তেমন কিছু নয় তবে এর চেয়ে সময় বেশি নয়।

Advertisement

এদিকে মুভমেন্ট ফাইস্টার নেতা ও বর্তমান উপ-প্রধানমন্ত্রী মাইও দি লুইজি বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর পদ ত্যাগের জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে দোষারোপ করেন। স্থানীয় গণমাধ্যমে বৃত্তি, নাগরিকত্ব আয়সহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা সরকার পদত্যাগের কারণ উল্লেখ করেন তিনি। তবে অক্টোবরে নির্বাচন করতে ভয় পান না বলে গণমাধ্যমকে জানান তিনি।

গত এক সপ্তাহ ধরে আগাম নির্বাচন নিয়ে ইতালিতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে চলছে জোরালো আলোচনা। যেকোনো সময় নতুন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা আসতে পারে।

এ ব্যাপারে ইতালি বাংলাদেশ সমিতির সাবেক সভাপতি নুরে আলম সিদ্দিকী বাচ্চু বলেন, ‘সরকার পদত্যাগ করার পর দেশটিতে চরম সমস্যা দেখা দিয়েছে। তবে যেভাবে আলোচনা চলছে, খুব শিগগিরই নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন আরেকটি সরকার জনগণ পাবে।’

এসআর