মান অক্ষুণ্ন রাখতে কোরবানির পশুর চামড়া আহরণে ১১টি সতর্কতা অবলম্বনের তাগিদ দিয়েছে সরকার। শনিবার সরকারি তথ্য বিবরণীতে এ তাগিদ দেয়া হয়। সোমবার (১২ আগস্ট) দেশে মুসলমানদের দ্বিতীয় বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ উদযাপিত হবে।
Advertisement
তথ্য বিবরণীতে বলা হয়, দেশের চাহিদার প্রায় ৮০ ভাগ চামড়া সংগ্রহ করা হয় কোরবানির পশু থেকে। কোরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহে অধিক সতর্কতা অবলম্বন করা একান্ত প্রয়োজন, যাতে চামড়ার কোনো ক্ষতি না হয়। কোরবানির সময় অসর্তকতা বা না-জানার কারণে বছরে প্রায় ৩৩০ কোটি টাকার চামড়া নষ্ট হয়। টেকসইভাবে পশুর চামড়া আহরণ ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা খুবই জরুরি।
সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ লেদার সার্ভিস সেন্টার নামক একটি প্রকল্পের মাধ্যমে কোরবানির চামড়া সংগ্রহের জন্য সচেতনতা সৃষ্টির উদ্দেশে একটি ভিডিওচিত্রসহ প্রয়োজনীয় প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। পশুর চামড়া অক্ষত এবং মান অক্ষুণ্ন তথা টেকসই চামড়া আহরণে ১১টি বিষয় বিবেচনায় রাখা প্রয়োজন। বিবেচ্য বিষয়গুলো হলো-
• কোরবানির আগে পশুকে গোসল করিয়ে গা ভালোভাবে শুকিয়ে নিতে হবে।• কোরবানির আগে পশুকে প্রচুর পরিমাণে পানি খাওয়াতে হবে।• পশুকে পরিষ্কার ও সমতল জায়গায় জবাই করতে হবে। যাতে চামড়ার কোনো ক্ষতি না হয় এবং চামড়ায় ময়লা না লাগে।• জবাই করার স্থানে পশুর রক্ত গড়িয়ে পড়ার জন্য একটি গর্ত করতে হবে। পরে তা ভালোভাবে মাটি দিয়ে ঢেকে দিতে হবে।• পশুকে শোয়ানোর জন্য পা বেঁধে খুব সাবধানে শোয়াতে হবে, যাতে চামড়ার ক্ষতি না হয়।• কোরবানির পশু জবাইয়ের পর নিস্তেজ হলে চামড়া ছাড়ানো শুরু করতে হবে।• চোখা মাথার ধারালো ছুরি দিয়ে পশুর বুকের ওপর দিয়ে লেজের গোড়া পর্যন্ত লম্বালম্বিভাবে এবং এক পা থেকে অন্য পা পর্যন্ত চামড়া ফেড়ে ফেলতে হবে।• বাঁকানো মাথার ধারালো ছুরি দিয়ে পশুর দেহ থেকে চামড়া ছাড়াতে হবে। চোখা মাথার ছুরি দিয়ে চামড়া ছাড়ানো যাবে না। এতে চামড়া ফুটো হয়ে যেতে পারে।• চামড়া ছাড়াতে তাড়াহুড়া না করে স্বাভাবিক গতিতে পশুর দেহ থেকে চামড়া ছাড়াতে হবে।• চামড়া টানাহেঁচড়া না করে বালতি বা পাত্রে করে নিতে হবে এবং রোদ-বৃষ্টি পড়ে না, এমন শুকনো খোলা জায়গায় রাখতে হবে। টানাহেঁচড়া করলে, রোদে পুড়লে, বৃষ্টিতে ভিজলে চামড়ার ক্ষতি হবে। চামড়ায় রক্ত লাগলে সঙ্গে সঙ্গে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।• চামড়া বিক্রয় করতে দেরি হলে যথাযথ প্রক্রিয়ায় লবণ দিয়ে রাখতে হবে।
Advertisement
চামড়ার ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক এবং স্থানীয় বাজারদর বিবেচনায় রেখে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কোরবানির চামড়ার মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছে। গত বছরের ন্যায় এবারও গরুর কাঁচা চামড়ার মূল্য হবে ঢাকায় প্রতি বর্গফুট ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, ঢাকার বাইরে ৩৫ টাকা থেকে ৪০ টাকা। খাসির কাঁচা চামড়ার মূল্য সারাদেশে ১৮ থেকে ২০ টাকা এবং বকরির কাঁচা চামড়ার মূল্য হবে সারাদেশে ১৩ থেকে ১৫ টাকা।
আরএমএম/বিএ/এমএস