দেশজুড়ে

ফরিদপুরে ঈদে বাড়ি গিয়ে ৭৬ জন হাসপাতালে ভর্তি

গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে নতুন করে আরও ৭৬ জন রোগী ফরিদপুরের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন। শনিবার দুপুর ২টা পর্যন্ত জেলার সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৩১৭ জন ডেঙ্গু রোগী। ঈদের ছুটিতে বাড়ি গিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তারা।

Advertisement

এদিকে, শনিবার দুপুর ১২টার দিকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (ফমেক) পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক অতুল সরকার। পরিদর্শনকালে জেলা প্রশাসক হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগী ও তাদের স্বজন এবং চিকিৎসকদের সঙ্গে বলেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. এসএম খবিরুল ইসলাম, পরিচালক কামদা প্রসাদ সাহা, ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মো. আফজাল হোসেন ও সমাজসেবা উপ-পরিচালক এসএম আলী আহসান প্রমুখ।

পরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার সাহায্যার্থে সমাজসেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা এক হাজার পিস স্যালাইন জেলা প্রশাসক অতুল সরকারের হাতে তুলে দেন।

Advertisement

ফরিদপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো. এনামুল হক বলেন, গত ২২ দিনে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ফরিদপুরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫৯১ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরে গেছেন ২২৫ জন। ৪৭ জনকে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়েছে। মারা গেছেন দুইজন। বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৩১৭ জন।

এর মধ্যে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ২২৬ জন, ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে ২৩ জন, ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একজন, বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তিনজন, চরভদ্রাসন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একজন, আলফাডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একজন, মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১০ জন ভর্তি রয়েছেন।

এছাড়া বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ফরিদপুর ডায়াবেটিক হাসপাতালে ৩১ জন, আরোগ্য সদন হাসপাতালে ১৭ জন, পরিচর্যা হাসপাতালে দুইজন ও সমরিতা হাসপাতালে দুইজন ভর্তি আছেন।

ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক কামদা প্রসাদ সাহা বলেন, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় সব ধরনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কোনো ধরনের অবহেলা করা হচ্ছে না। তবে জনবল সংকটের কারণে রোগী বেশি হওয়ায় চিকিৎসক ও সেবিকাদের চিকিৎসা প্রদানে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

Advertisement

এর আগে ১ আগস্ট বৃহস্পতিবার বিকেলে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান শারমীন (২২) নামে এক তরুণী। তিনি মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলার টেকেরহাট এলাকার মো. রুবেলের মেয়ে।

এরপর ৭ আগস্ট বুধবার ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ (ফমেক) হাসপাতালে মারা যান আব্দুল জলিল সরদার (৫০) নামে এক ব্যক্তি। তিনি পেশায় একজন কৃষক। নগরকান্দা উপজেলার মুকুল সরদারের ছেলে তিনি।

গতকাল ১০ আগস্ট শুক্রবার ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ (ফমেক) হাসপাতালে মারা যান গৃহবধূ লিপি আক্তার (৩০)। তিনি গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার ডোমরাকান্দি গ্রামের মাহাবুব খলিফার স্ত্রী। তিনি একজন গৃহিণী। তার সাত বছরের একটি ও তিন বছরের একটি মেয়ে রয়েছে।

প্রসঙ্গত, ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা তিনজন, আর জেলায় মৃতের সংখ্যা আটজন। বাকি পাঁচজন ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।

বি কে সিকদার সজল/এএম/জেআইএম