জাতীয়

লাখো মুসল্লির জন্য প্রস্তুত জাতীয় ঈদগাহ

পবিত্র ঈদুল আজহা আগামী সোমবার। প্রতিবারের মতো এবারও চলছে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানের সৌন্দর্য বর্ধন ও সাজসজ্জার কাজ। এখানে অনুষ্ঠিত হবে ঈদুল আজহার প্রধান জামাত। সকাল আটটায় এ জামাত অনুষ্ঠিত হবে। আবহাওয়া অনুকূলে না থাকলে জাতীয় ঈদগাহে সকাল আটটার পরিবর্তে প্রধান জামাত জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে সাড়ে আটটায় অনুষ্ঠিত হবে।

Advertisement

জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে রাষ্ট্রপতি, প্রধান বিচারপতি, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিগণ, মন্ত্রিপরিষদের সদস্যগণ, বিদেশি কূটনৈতিক, সরকারের বিভিন্ন বাহিনীর প্রধান, রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিসহ সাধারণ মুসল্লিরা ঈদের নামাজ আদায় করবেন।

এরই ধারাবাহিকতায় এবারও ঈদুল আজহার লাখো মুসল্লি জাতীয় ঈদগাহে নামাজ আদায় করবেন বলে সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। সে লক্ষ্যে সর্বদিক থেকে জাতীয় ঈদগাহ ময়দান মুসুল্লিদের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে বলে জাগো নিউজকে জানান ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা উত্তম কুমার রায়।

তিনি জানান, জাতীয় ঈদগাহে মুসল্লিদের নামাজের জন্য ঢাকা দক্ষিণ সিটির পক্ষ থেকে যত ধরনের কাজ ছিল তা সফলতার সাথে শেষ করে নামাজের উপযোগী করে প্রস্তুত করা হয়েছে।

Advertisement

মাঠের ঘাস কেটে পরিষ্কার করে, উঁচু-নিচু ভরাট, বাঁশ দিয়ে পুরো ময়দানে ত্রিপল টাঙানো মাইক ও সিসি ক্যামেরা লাগানোসহ সব কাজ নিরলসভাবে শেষ করেছেন শ্রমিকরা। সংস্কার শেষে ঈদের নামাজের জন্য চূড়ান্তভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট সংলগ্ন এই ময়দান। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ঈদের দিন সকাল আটটায় এখানে দেশের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে। তা না হলে, সাড়ে আটটায় জাতীয় মসিজিদে ঈদুল আজহার প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে।

সরেজমিনে ঈদগাহ প্রাঙ্গণে দেখা যায়, শ্রমিকরা বাঁশ দিয়ে অবকাঠামো নির্মাণ, গেট মেরামত ও সামনের (মেহরাব) মিনারের কাজ সম্পন্ন করেছে। অবকাঠামো তৈরির পর বৃষ্টি নিরোধক ত্রিপল (ছামিয়ানা) লাইট, ফ্যান ও নিরাপত্তার জন্য ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা বসানোসহ সাজসজ্জার কাজ শেষ করা হয়েছে।

এর আগে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানের ঘাস কাটার সঙ্গে বিভিন্ন স্থানের উঁচু-নিচু মাটি কেটে সমান করছেন শ্রমিকরা। গণপূর্ত অধিদফতরের তত্ত্বাবধানে মাটি সমান এবং গাছে রঙ করার কাজ করা হয়েছে। প্যান্ডেল তৈরির কাজ করছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পিয়ারু সরদার অ্যান্ড সন্সের কয়েকজন প্রতিনিধি। মূলত ঈদগাহের প্যান্ডেল তৈরি, সামিয়ানা ও ত্রিপল টাঙানো এবং ঈদগাহ ময়দান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার কাজটি করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি)।

সরেজমিনে আরও দেখা যায়, বর্ষাকালে কখনও প্রখর রোদ আর প্রচুর বৃষ্টি উপেক্ষা করে শ্রমিকরা মেরামত ও সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ করছেন।

Advertisement

এসএসএফের সঙ্গে পরামর্শ করে প্রতিবারের মতো এবারও ঈদগাহে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। সিটি কর্পোরেশন ছাড়াও আলাদা ক্যামেরা ও কন্ট্রোল রুম স্থাপন করবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। নিরাপত্তা দেবে র‌্যাবের বোম ডিসপোজাল ইউনিট এবং ডগ স্কোয়াড। ঈদগাহের চারপাশে সাদা পোশাকের গোয়েন্দারাও থাকবেন।

জনসংযোগ কর্মকর্তা উত্তম কুমার রায় আরও বলেন, ঈদের নামাজের জন্য ঈদগাহ প্রস্তুত করা এবং নামাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত পুরো প্রক্রিয়ার কাজ বিভিন্ন সংস্থা মিলে করে। আমরা সিটি কর্পোরেশন শুধু প্যান্ডেল তৈরি, সামিয়ানা ও রেইন প্রুফ কাভার অর্থাৎ ত্রিপল, মোবাইল টয়লেট স্থাপন এবং ঈদগাহের ভেতরে ও বাইরে সার্বিক সৌন্দর্য ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করি।

নিরাপত্তার কাজ করবে পুলিশ, র‌্যাব ও অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, মাইকিংয়ের কাজ করবে তথ্য মন্ত্রণালয়- এভাবে প্রস্তুত করা হয় ঈদগাহ ময়দান। আবার আবহাওয়া যদি অনুকূলে থাকে তাহলে ঈদের জামাত আমাদের তত্ত্বাবধানেই হবে। সাধারণত ঈদের জামাত সকাল ৮টায় অনুষ্ঠিত হয়। তবে আবহাওয়া অনুকূলে না থাকলে জামাতের বিষয়টি ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ারে চলে যায়।

তিনি বলেন, ৯০ হাজার থেকে এক লাখ মুসল্লির জন্য নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এছাড়া মাঠের পূর্ব ও দক্ষিণ কোণে পর্দার ভিতরে পাঁচ হাজার নারী মুসল্লির জন্য আলাদাভাবে নামাজ আদায়ের বিশেষ ব্যবস্থা থাকছে। অজুর পানি ছাড়াও খাওয়ার পানির জন্য ওয়াসাকে বলা হয়েছে। এছাড়া কাকরাইল, মৎস্য ভবন, প্রেস ক্লাব, দোয়েল চত্বর ও এর আশপাশের র‌্যাবের ওয়াচ টাওয়ারসহ, পুলিশ ও গোয়েন্দা সদস্যরা নিরাপত্তার জন্য নিয়োজিত থাকবে।

এফএইচ/এমএসএইচ/জেআইএম