ঈদ আসলেই বাস ভাড়া বেড়ে যায়। কখনও তা দ্বিগুণ হয়, কখনও-বা তারও বেশি। এত টাকা কিংবা স্বাভাবিক ভাড়া দিয়ে উত্তরবঙ্গের বড় একটা অংশের মানুষের পক্ষে বাড়ি ফেরা অসম্ভব হযে পড়ে। নিরুপায় হয়ে তাদের বাড়ি ফিরতে হয় ট্রেনের ছাদে কিংবা দাঁড়িয়ে।
Advertisement
শুক্রবার (৯ আগস্ট) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বিমানবন্দর স্টেশনে অবস্থান করে দেখা যায়, উত্তরবঙ্গগামী ট্রেনগুলোতেই সবচেয়ে ভিড় বেশি। রেলওয়ের সেবা এখনও উত্তরবঙ্গের দরিদ্রপীড়িত মানুষের জন্য সুখকর হতে পারেনি। রাজধানী থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে যে সব ট্রেন ছেড়ে যাচ্ছে, তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি দেরিতে ছাড়ছে উত্তরবঙ্গের ট্রেনগুলো।
শুক্রবার দুপুর সোয়া ১২টায় বিমানবন্দর রেলওয়ের তথ্য অনুযায়ী, নীলসাগর এক্সপ্রেস সকাল ৮টা ৩৫ মিনিটে এ স্টেশনে আসার কথা থাকলেও তখন পর্যন্ত আসেনি। তবে ট্রেনটি তখন ঢাকায় অবস্থান করছিল। রংপুর এক্সপ্রেস সকাল ৯টা ২৭ মিনিটে বিমানবন্দর স্টেশনে থাকার কথা থাকলেও দুপুর ১টার পরে ট্রেনটি আসে। লালমনি ঈদ স্পেশাল সকাল ৯টা ৪২ মিনিটে বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনে আসার কথা থাকলেও দুপুর সোয়া ১২টা পর্যন্ত ট্রেনটি ঢাকাতেই পৌঁছায়নি।
এদিকে রাজধানী থেকে অন্য গন্তব্যে ছেড়ে যাওয়া ট্রেনগুলো কিছুটা দেরি করলেও একেবারে বিপর্যয়ের মধ্যে এ সময়ে পড়তে দেখা যায়নি। গত রমজানের ঈদেও একই চিত্র দেখা যায় রেলওয়ে সেবায়। বরাবরের মতো এবারও ভোগান্তির শিকার উত্তরবঙ্গবাসী।
Advertisement
বিমানবন্দর স্টেশনের বিপরীত পাশের প্ল্যাটফর্মে ফ্লোরের মাঝে শুয়ে-বসে ছিলেন গাইবান্ধাগামী ১৫ থেকে ১৬ যাত্রী। তাদের মধ্যে পুরুষরা রিকশা চালান আর নারীরা বাসাবাড়িতে রান্নার কাজ করেন।
তাদের একজন হামিদুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘গাইবান্ধা যামু। সকাল ৮টায় আসছি, এখন বাজে ১টা। ট্রেনের কোনো খবর নাই।’
তিনি বলেন, ‘কাউন্টারে টিকিট কাটতে গেছিলাম, সিট নাই। বিনা সিটে টাকা নষ্ট করে লাভ আছে? আমরা টিকিট কাটি নাই, ছাদে করে যামু।’
দুপুর সোয়া ১২টার দিকে স্টেশনে পঞ্চগড়গামী একতা এক্সপ্রেস এসে দাঁড়ায়। ট্রেনটির ভেতর ও ছাদ যাত্রীতে পূর্ণ থাকায় অনেক চেষ্টা করেও কোনো মানুষ তাতে উঠতে পারেননি। না উঠতে পারাদের মধ্যে মো. আশিক আলী ও জুলেয়। ট্রেনটি ছেড়ে দেয়ার সময় তারা কিছুক্ষণ দরজায় ঝুলে ছিলেন, কিছুক্ষণ চলার পর ট্রেন থেকে নেমে পড়েন।
Advertisement
এ বিষয়ে আশিক আলী বলেন, ‘ছুটি কবে পাব, জানতাম না। তাই টিকিট কাটিনি। বাসের টিকিট না পেয়ে রেলওয়ে স্টেশনে আসলাম। আমরা চারজন একসঙ্গে ছিলাম। তার মধ্যে দু’জন ট্রেনে উঠতে পারেছে, আমরা দু’জন পারিনি। ঝুঁকি নিয়ে ঝুলে গেলাম না। তাই নেমে পড়লাম আমরা।’
পিডি/এনডিএস/পিআর