দেশজুড়ে

৪৪ ঘণ্টায়ও পৌঁছায়নি আরিফের স্বাস্থ্য পরীক্ষার আদেশ

আরিফের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য আদালতের দেয়া আদেশের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ৪৪ ঘণ্টা পার হলেও তা কারাগারে পৌঁছায়নি। ফলে আদেশ না পৌঁছায় সংশ্লিষ্টদের মধ্যে কৌতুহলের সৃষ্টি হয়েছে।আদালত সূত্রে জানা যায়, রোববার বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলার শুনানি চলাকালে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের বরখাস্তকৃত মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী স্বাস্থ্যগত বিষয়টি আদালতকে অবহিত করেন তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ লালা। চিকিৎসার্থে তিনি আরিফুল হককে সিলেট, ঢাকা অথবা দেশের বাইরের কোনো হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করানোর জন্য আদালতের নির্দেশনা কামনা করেন। জবাবে ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মকবুল আহসান আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আরিফের চিকিৎসা সিলেটে করানো সম্ভব কিনা-স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রিপোর্ট আদালতে দাখিল করতে কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। কিন্তু আদেশ দেয়ার ৪৪ ঘণ্টায়ও আদালতের আদেশের কপিটি সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে পৌঁছায়নি। যদিও কারা কর্তৃপক্ষের প্রতিবেদন পাওয়ার পর আদালত এ বিষয়ে নির্দেশনা দেয়ার কথা রয়েছে।এর আগে রোববার আলোচিত এ মামলার চার্জ গঠনের দিনে আরিফুল হক চৌধুরীকে অসুস্থ দেখা গেছে। তিনি একা চলাফেরা করতে অক্ষম ছিলেন। পুলিশ সদস্যরা তাকে কারা অ্যাম্বুলেন্সে করে আদালতে নিয়ে আসেন। অ্যাম্বুলেন্স থেকে তাকে একটি হুইল চেয়ারে করে আদালতের এজলাসে নেয়া হয়। এ সময় তার আইনজীবীরা দাবি করেন আরিফুল হক চৌধুরী মারাত্মক অসুস্থ। অবিলম্বে তার উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। চার্জ গঠনের পর পরই আরিফের আইনজীবীরা আদালতের কাছে তার উন্নত চিকিতসার জন্য একটি আবেদন করেন। এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সিলেট বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আদালত কারা কর্তৃপক্ষকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আরিফুল হক চৌধুরীর স্বাস্থ্য পরীক্ষার নির্দেশ দেন। স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রতিবেদনও ওই সময়ের মধ্যে আদালতে দাখিল করার নির্দেশ দেন। কিন্তু কারা কর্তৃপক্ষের কাছে এখনো আদালতের আদেশের লিখিত কপি পৌঁছায়নি।এ ব্যাপারে জানতে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ জেল সুপার মো. ছগির মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, আরিফুল হক চৌধুরী সর্ম্পকিত আদালতের কোনো আদেশ কারাগারে আসেনি। আদালতের আদেশ পাওয়া মাত্র নির্দেশনা অনুযায়ী জেল কর্তৃপক্ষ কাজ করবে।প্রসঙ্গত, ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জ সদরের বৈদ্যের বাজারে এক জনসভায় গ্রেনেড হামলায় নিহত হন সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়াসহ ৫ জন। আহত হন শতাধিক নেতাকর্মী। এ ঘটনায় তৎকালীন হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মজিদ খান হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা করেন। তিন দফায় আলোচিত এই হত্যা মামলার তদন্ত শেষে গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর সিআইডি সিলেট জোনের সিনিয়র এএসপি মেহেরুননেছা সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বিএনপি নেতা আরিফুল হক চৌধুরী ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ নতুন করে আরো ১১ জনকে যুক্ত করে মোট ৩২ জনের বিরুদ্ধে হবিগঞ্জের হাকিম আদালতে চার্জশিট দেন। গত ১১ জুন হবিগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ আদালত থেকে মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে এই মামলার চার্জ গঠনের তারিখ নয়বার পেছানোর পর অবশেষে গত রোববার অভিযুক্ত ৩২ জনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন আদালত।ছামির মাহমুদ/এসএস/এমএস

Advertisement