আসন্ন ঈদুল আজহায় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মহাখালী পশু জবাইখানায় যারা কোরবানির পশু নিয়ে আসবেন, তাদের পশু জবাই ও মাংস প্রস্তুত বাবদ ২৫ শতাংশ খরচ বহন করবে নগর কর্তৃপক্ষ। গাড়িতে করে বাসায় মাংসও পৌঁছে দেবে ডিএনসিসি।
Advertisement
আজ বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) বিকেলে গুলশানের নগর ভবনে কোরবানির বর্জ্য অপসারণ বিষয়ক এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
ঈদুল আজহা উপলক্ষে ডিএনসিসির প্রস্তুতির কথা জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘এ বছর ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের অন্তর্ভুক্ত নতুন এলাকাসহ আনুমানিক ৩ লাখের বেশি পশু কোরবানি দেয়া হবে, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ৬৮ হাজার বেশি। কোরবানির পশু জবাই করার জন্য ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক এ বছর মহাখালী পশু জবাইখানাসহ ২৭৩টি স্থানে নগরবাসীকে পশু কোরবানি দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ছাড়া কোরবানি করা যাবে- এ রকম ৪০০টি স্থান চিহ্নিত করা আছে। কোরবানি উপলক্ষে আগত পশু থেকে উৎপন্ন বর্জ্য অপসারণ এবং কোরবানির পশুর হাট সার্বক্ষণিক পরিষ্কার রাখতে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কাজের সম্পৃক্ত অন্যান্য বিভাগ যেমন- প্রকৌশল বিভাগের যান্ত্রিক সার্কেল, ভান্ডার ও ক্রয় বিভাগ, পরিবহন বিভাগ, স্বাস্থ্য বিভাগসহ সমন্বয় সাধনের জন্য মোট ৭টি সমন্বয় সভা করা হয়েছে।’
আতিকুল ইসলাম জানান, কোরবানির বর্জ্য অপসারণের জন্য বিশেষ পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের আওতায় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব ২ হাজার ৪০০ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ১ হাজার ৪৩৫ জন পরিচ্ছন্নতা কর্মী কাজ করবে। এ ছাড়া আরও ১ হাজার ১০০ জন পরিচ্ছন্নতা কর্মী এবং বাসা-বাড়ি থেকে ভ্যান সার্ভিসের মাধ্যমে বর্জ্য সংগ্রহ করার জন্য পিডব্লিউসিএসপিএর প্রায় ৪ হাজার ৫০০ জন শ্রমিক কোরবানির বর্জ্য অপসারণে নিয়োজিত করা হয়েছে।
Advertisement
‘ঈদের দিন থেকে জবাইকৃত কোরবানির পশুর বর্জ্য তাৎক্ষণিকভাবে অপসারণ এবং কোরবানির পশুর সব হাট দ্রুত পরিষ্কারের জন্য ডিএনসিসির নিজস্ব বর্জ্যবাহী ট্রাক, ভারী যন্ত্রপাতি, ওয়াটার বাউজারের পাশাপাশি আউটসোর্সিং থেকে অতিরিক্ত গাড়ি নিয়োজিত করা হবে। ঈদ উপলক্ষে বর্জ্য পরিবহন সক্ষমতা কমপক্ষে ১০ হাজার টনে উন্নীতকরণে প্রয়োজনীয় যান-যন্ত্রপাতি নিয়োজিত করা হয়েছে। এজন্য ঈদের আগের দিন থেকে ঈদের পরবর্তী দুই দিন নিরবচ্ছিন্নভাবে বর্জ্য অপসারণের জন্য বর্জ্যবাহী ড্রাম্প ট্রাক ও খোলা ট্রাক ১৬৯টি, ভারী যান-যন্ত্রপাতি ২৮টি, পানির গাড়ি ১১টি, বেসরকারি ৮২টি এবং ভাড়ায় ১৪৮টি পিকআপ ভ্যানসহ সর্বমোট ৪৩৮টি গাড়ি নিয়োজিত থাকবে।’
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, কোরবানির পশুর বর্জ্য দ্বারা যাতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ সৃষ্টি না হয় সেজন্য জবাইয়ের স্থানে ১০টি ওয়াটার বাউজার দ্বারা তরল জীবণুনাশক মিশ্রিত পানি স্প্রে-করণের ব্যবস্থা এবং বর্জ্য ব্যাগ, ব্লিচিং পাউডারসহ অন্যান্য পরিচ্ছন্নতার জন্য ব্যবহৃত উপকরণ ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বর্জ্য ব্যাগ ৫ লাখ ৮০ হাজার, ব্লিচিং পাউডার ৪০ হাজার কেজি, তরল জীবণুনাশক ২ হাজার ৭২০ লিটার, ফিনাইল ৩১৫ লিটার।
মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘কোরবানি পশুর বর্জ্য অপসারণে মহাখালী আঞ্চলিক কার্যালয়ে অস্থায়ী কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ স্থাপন করা হয়েছে। নিয়ন্ত্রণ কক্ষের টেলিফোন নম্বর ৯৮৩০৯৩৬। তাছাড়া নতুন অন্তর্ভুক্ত অঞ্চলসহ ৫টি পুরাতন আঞ্চলিক কার্যালয় ও ৫৪টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের অফিস কন্ট্রোল রুম হিসেবে ব্যবহার করা হবে।’
এ সময় অন্যদের মধ্যে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল হাই, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন মঞ্জুর হোসেন, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাঈদ আহমেদ, ওয়ার্ড কাউন্সিলর জাকির হোসেন বাবুল, প্যানেল মেয়র আলেয়া সারোয়ার ডেইজি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
Advertisement
এএস/এসআর/পিআর