শিল্প-কারখানা নির্মাণের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য দেশের দেশের দক্ষিণ ও উত্তরাঞ্চলে গ্যাস সংযোগ নেয়ার চিন্তা-ভাবনা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
Advertisement
বৃহস্পতিবার জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস উদযাপন উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী এ কথা জানান। তিনি বলেন, ‘যেভাবে আমাদের সম্ভাবনার জায়গা তৈরি হচ্ছে, সারা বিশ্বে এনার্জি ট্রানজিশন হচ্ছে, সেই ট্রানজিশনের কারণে আমরা কোন জায়গায় আছি? আমরা বিভিন্ন ক্ষেত্র বাছাই করে নিয়েছি; কয়লা, লিকুইড ফুয়েল, এলএনজি, নিজেদের ন্যাচারাল গ্যাস আমরা নিয়েছি। জ্বালানি হিসেবে রিনিউয়্যাবল এনার্জিকেও আমরা সাথে নিয়েছি।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আশপাশের দেশগুলোকে আমরা ইনক্লুড করছি। আমরা ভারত থেকে বিদ্যুৎ নিচ্ছি, আমরা জ্বালানি খাতে গ্যাসের সম্ভাবনা দেখছি ভারত থেকে নেয়ার জন্য। আমরা জ্বালানিকে সিকিউরড করার জন্য নিচ্ছি। আমরা যাতে পিছিয়ে না থাকি, পিছিয়ে থাকা মানে এক্সপেনসিভ।’
নসরুল হামিদ বলেন, ‘জ্বালানি ক্ষেত্রে সাশ্রয়ীটা সবচেয়ে বড় জায়গা তৈরি করছে। কত এফিশিয়েন্টলি ওয়েতে আমরা চলতে পারি। পাওয়ার প্ল্যান্টগুলো আমরা নিচ্ছি এবং আরও এফিশিয়েন্টলি কীভাবে গ্যাস ব্যবহার করতে পারি।’
Advertisement
‘যে গ্যাসে যানবাহন চলে আমরা দেখেছি সেটার এফিশিয়েন্সি মাত্র ১৭ থেকে ২১ শতাংশ। সেই গ্যাস দিয়ে যদি বিদ্যুৎ উৎপাদন করি, সেই বিদ্যুৎ দিয়ে যানবাহন চালাই, সেটার এফিশিয়েন্সি ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ। এখানেও কিন্তু ভবিষ্যতে একটা ট্রনজিশন হবে হয়তো। আমরা চেষ্টা করছি বিদ্যুৎচালিত যানবাহনগুলোকে আরও সহজতর করা যায় কিনা। এগুলো অনেক কিছু এক্সপেরিমেন্ট চলছে।’
জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, পরিবেশকে সাথে রেখে সবকিছু করতে হবে। সুতরাং আমাদের কোনো নতুন টেকনোলজি যদি থাকে, সেটা যদি পরিবেশকে সাথে নিয়ে কাজ করা যায় তাহলেই কেবল আমরা কয়লা উত্তোলনে যাব।’
তিনি বলেন, ‘আমরা দেখছি ভবিষ্যতে আরও গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার করা যায় কিনা। সেখানেও একটা সম্ভাবনা দেখা গেছে। আমরা নতুন নতুন টেকনোলজি নিয়ে আসার চেষ্টা করছি।’
নসরুল হামিদ বলেন, ‘ভোলাতে গ্যাসের একটা বড় সম্ভাবনা দেখা গিয়েছে। ভোলার গ্যাসকে আমরা আরও বড়ভাবে কীভাবে ব্যবহার করতে পারি আমরা...আমরা সেটাকে দক্ষিণ দিকে গ্যাস লাইন নির্মাণ করে, কীভাবে পটুয়াখালী পর্যন্ত নিয়ে আসতে পারি, সেটারও সম্ভাবনাও যাচাই-বাছাই চলছে।’
Advertisement
‘আমরা মধ্যাঞ্চলে যেভাবে গ্যাস বিতরণ করেছি, আমরা চিন্তা করেছি দক্ষিণ ও দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে কীভাবে গ্যাস দেয়া যায়। অর্থাৎ খুলনা ও যশোর- এই অঞ্চলে। এছাড়া উত্তরের দিকেও কীভাবে গ্যাস নেয়া যায়।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘খুলনায় ইকোনমিক জোন হচ্ছে। খুলনা, যশোর, বরিশাল, পটুয়াখালী- এই অঞ্চলে কর্মসংস্থান তৈরি করতে হবে। সেখানে জ্বালানি নিরাপত্তা তৈরি করতে হবে।’ পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে গ্যাস আনা লাভজনক কিনা, তা যাচাই করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন নসরুল হামিদ।
নিরবচ্ছিন্ন ও সাশ্রয়ী জ্বালানির জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আশা করছি জ্বালানি ক্ষেত্রে আগামী ২-৩ বছরের মধ্যে একটা ভালো জায়গায় আমরা যাব।’ সরকারি বিভিন্ন সংস্থার কাছে জ্বালানি বিভাগ ৫ হাজার কোটি পাবে। সেগুলো আদায় চলছে বলেও জানান তিনি।
তিতাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আয়কর বিবরণী চাওয়া হয়েছে, এটা প্রকাশ করা হবে কিনা- জানতে চাইলে নসরুল হামিদ বলেন, ‘তিতাসের আয়কর বিবরণী আমরা চেয়েছি, এটা নিজেদের যাচাই-বাছাইয়ের জন্য। আমরা এটা প্রকাশ করতে পারব না, আয়কর বিভাগ থেকে নেয়া বেটার হবে। কারণ এটা তাদের ব্যক্তিগত তথ্য।’
বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থাগুলোকে একসঙ্গে কেন্দ্রীয়ভাবে একটি কল সেন্টার করার জন্য বলা হয়েছে। পেশাদার লোকদের দিয়ে এটা করার জন্য বলা হয়েছে বলেও জানান জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী।
এ সময় জ্বালানি ও খনিজসম্পদ সচিব আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরএমএম/এমএসএইচ/জেআইএম