আইন-আদালত

ঠাকুরগাঁওয়ের আবেদ হোসেনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত অপহরণ, হত্যা, গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের তিনটি অভিযোগে ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীর আবেদ হোসেনের (৬৫) বিরুদ্ধে তদন্ত চূড়ান্ত করে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।

Advertisement

বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাজধানীর ধানমন্ডির আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থার প্রধান সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান খান এ তথ্য জানান।

এ সময় জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এম সানাউল হক, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) হরি দেবনাথসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। প্রতিবেদনটি আজই ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনের কাছে জমা দেয়া হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

২০১৮ সালের ২৯ জুলাই থেকে এ মামলার তদন্ত শুরু করে ২০১৯ সালের ৮ আগস্ট শেষ করা হয়। আবেদন হোসেন একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন মে থেকে ২২ নভেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের অপরাধ সংঘটিত করেন বলে মামলায় বলা হয়েছে।

Advertisement

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আব্দুল হান্নান খান বলেন, ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী থানার বোবড়া এলাকার আবু তৈয়বের ছেলে আবেদ হোসেন (৬৫)। তাকে চলতি বছরের ২৫ জুন গ্রেফতার করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, আসামির বিরুদ্ধে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকলীন সময়ে হত্যা, গণহত্যা, আটক, অপহরণ,নির্যাতন ও জোরপূর্বক শ্রমের মোট তিনটি অভিযোগ আনা হয়েছে।

অভিযোগে বলা হয়েছে, একাত্তরে মে মাসের শেষের দিকে ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী থানাধীন আধারিদিঘীর পাড়ে পাকিস্তান আর্মি ও তাদের দোসর স্থানীয় রাজাকার আবেদ হোসেনসহ অন্য রাজাকাররা আধারদিঘীর পাশ্ববর্তী বোবড়া ও অন্য গ্রাম থেকে সাতজন নিরীহ লোককে আটক করে জোরপূর্বক ব্যাংকার তৈরির কাজে শ্রমসাধ্য মাটি খননের কাজ করায়। ব্যাংকার তৈরির কাজে যেতে না চাইলে তখন আসামি মো. আবেদ হোসেন ও তার সহযোগীরা নির্যাতন করে জোরপূর্বক কাজে যেতে বাধ্য করতো।

দ্বিতীয় অভিযোগে বলা হয়, একাত্তর সালে যুদ্ধচলাকালীন সময়ে পাকিস্তানি আর্মি ও রাজাকারদের অবস্থান সম্পর্কে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের খোঁজ খবর দিয়ে সহায়তা করার কারণে পবেদ আলী, দুমপেল ও মজনুকে ধরে নিয়ে তীরনই নদীর পাড়ে গুলি করে লাশ পানিতে ফেলে দেয়। ওই ঘটনায় পবেদ আলী হাতে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় জীবিত উদ্ধার হলেও বাকী দুজনের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।

Advertisement

তৃতীয় অভিযোগে বলা হয়েছে, আহত পবেদ আলীকে আবার ধরে নিয়ে তীরনই নদীর পাড়ে নিয়ে গুলি করে লাশ পানিতে ফেলে দেয়। পরে পবেদ আলীর লাশের সন্ধান পাওয়া যায়নি। এ আসামির বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই থেকে তদন্ত শুরু হয়। আসামির রাজনৈতিক পরিচয়ে জামায়াতে ইসলামীর সমর্থক বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

এফএইচ/এমএসএইচ/এএইচ/জেআইএম