মতামত

সবিনয়ে নগরপিতা

অবশেষে উত্তরের নগরপিতা ক্ষমা চাইলেন । ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে যারা মারা গেছেন তাদের পরিবারের কাছে । সপ্তাহ খানেক তিনি বলেছিলেন - আন্তরিকতার অভাব নেই, ঘাটতি আছে অভিজ্ঞতার । দেখলাম অভিজ্ঞতা নিতে নগরীর

Advertisement

একাংশের নগরপিতা কলকাতার ডেপুটি মেয়রের সঙ্গে দৃশ্য সংলাপে অংশ নিয়েছেন । তারও আগে দেখেছি ঝাড়ু নিয়ে সাবেক তারকাদের নিয়ে পরিচ্ছন্নতা অভিযানে অংশ নিচ্ছেন । এবিষয় গুলো নিয়ে কোন মন্তব্য করতে যাবোনা, বিষয় গুলো তিনি আন্তরিকতার সঙ্গেই করেছেন হয়তো। অভিজ্ঞতার ঘাটতির কারণেই এমন সংকট ও দুর্যোগে নগরপিতার কি আচরণ করতে হয়, এবং তার প্রতিষ্ঠানকে নগরবাসীর পাশে কিভাবে থাকতে হয় তা তিনি বুঝে ওঠতে পারেননি। ফলে মশক নিধনের পূর্ব প্রস্তুতি বা হোম ওয়ার্কটিও করতে ভুল হয়ে গেছে। তার দক্ষিণের সহকর্মীরও তাই। নগর বিভক্ত হবার পর দক্ষিণ তাকিয়ে থাকতো উত্তরের দিকে, এখন উত্তর তাকিয়ে থাকে দক্ষিণের দিকে। কারণ দিবস হিসেবে অভিজ্ঞতায় দক্ষিণের নগরপিতা এগিয়ে আছেন। তবে এবার বুঝি উত্তর আবার এগিয়ে গেল।

এই যে ডেঙ্গুর কারণে মৃতদের পরিবারের কাছে ক্ষমা চাওয়া, একে নগরবাসী খানিক দায় স্বীকার করে নেয়া হিসেবেই দেখছে ।এই বিবেচনায় উত্তরপ্রান্তের নগরপিতা ধন্যবাদ দাবি করতে পারেন। নগরবাসী কর হিসেবে অগ্রিম সেটা প্রদান করে জানতে চাওয়ার অধিকার রাখে- তাদের ওয়ার্ড কাউন্সিলররা কেন নিখোঁজ। এমন সংকটকালে তাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা কেন। র‌্যালি, সেমিনার, ঝাড়ু, ফটোসেশনে নগরপিতা কেন একলা? এই প্রশ্ন দক্ষিণের নগরপিতার প্রতিও তার নাগরিকদের।

ওয়ার্ড কাউন্সিলররা যদি দলীয় কর্মী, সুশীল সমাজ এবং বিভিন্ন সংগঠন নিয়ে একেকটি বহুতল আবাসিক ভবন, গলি-মহল্লায় হানা দিতেন, তাহলে লার্ভা প্রজনন কেন্দ্র ধ্বংস নিয়ে এতো ভাবতে হতো না। ঔষধ কার্যকর কিনা, সেই লজ্জার পরীক্ষার মুখেও পড়তে হতো না নগরপিতাদের। ওয়ার্ড কাউন্সিলররা ডেঙ্গু সনাক্তের জন্য মহল্লা ভিত্তিক সেবা কেন্দ্র খুলতে পারতেন। তাহলে হাসপাতাল ক্লিনিক পর্যন্ত আতঙ্কিত মানুষদের দৌড়ে যেতে হতো না। আসলে ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের নেতৃত্বে পরিচ্ছন্নতা অভিযান চললে, ডেঙ্গু এভাবে আতঙ্ক হিসেবেও আবির্ভূত হতো না।

Advertisement

তাই নগরবাসীবাসী মনে করছেন, ফগার মেশিনে ছিটানো ঔষুধের মতোই নগরপিতাদের আন্তরিকতার সঠিক ব্যবহার হয়নি। আগামীতে তারা এবারের বাস্তবতার কথা স্মরণে রেখে আন্তরিকতা এবং অভিজ্ঞতার সমন্বয় ঘটাবেন, এই দাবি করপ্রদানকারী নগরবোসীদের।

লেখক: বার্তাপ্রধান, সময় টিভি।

এইচআর/জেআইএম

Advertisement