‘আয় বৃষ্টি আয়, আরও জোরে আয়। ডেঙ্গু থেকে রক্ষা কর।’ রাজধানীর আজিমপুরে ভিকারুননিসা নূন স্কুলের সামনে দাঁড়িয়ে একজন ছাত্রীর অভিভাবক এ কথা বলছিলেন। এ সময় বেশ জোরে বৃষ্টি হচ্ছিল। অদূরেই দাঁড়িয়ে থাকা আরেক অভিভাবক জোরে বৃষ্টি চাওয়ার কারণ জানতে চাইলে বলেন, ‘আরে ভাই, চাইছি কী আর শখে! জানেনতো ডেঙ্গু মশার লার্ভা স্বচ্ছ পানিতে জন্মে। মুষলধারে বৃষ্টি হলে লার্ভা ধুয়ে মুছে শেষ হয়ে যাবে। ডেঙ্গুর প্রকোপ কমে যাবে। বাসাবাড়ির কোথাও পানি জমতে দিই না, তবুও পরিবারে ডেঙ্গু আতঙ্ক বিরাজ করছে।’
Advertisement
আবহাওয়া অধিদফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, গতকাল বুধবার দিবাগত রাত থেকেই রাজধানীতে বৃষ্টি হচ্ছে। সকাল ৯টার পরও দুই তিন দফা কখনও কম আবার কখনও মুষলধারে বেশ কিছুক্ষণ বৃষ্টি হয়েছে। আজ আরও বৃষ্টি হতে পারে বলে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে।
এদিকে রাজধানীসহ সারাদেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ ক্রমশই বাড়ছে। সরকারি হিসেবে স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশনস সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুমের তথ্যানুসারে, গত ১ জানুয়ারি থেকে ৭ আগস্ট পর্যন্ত সারাদেশের সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ৩২ হাজারেরও বেশি ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে সরকারি হিসাবে মৃতের সংখ্যা ২৩ জন। কিন্তু বেসরকারি হিসাবে এ সংখ্যা তিন গুণেরও বেশি।
আক্রান্তদের মধ্যে ইতোমধ্যে হাসপাতাল থেকে রিলিজ পেয়েছেন ২৩ হাজার ৬১০ জন। বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৮ হাজার ৭০৭ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২ হাজার ৪২৮ জন। অর্থাৎ প্রতি মিনিটে ১ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন।
Advertisement
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা.আবুল কালাম আজাদ বলেন, তীব্র গরমে ও মুষলধারে বৃষ্টির কারণে ডেঙ্গুবাহী এডিস মশার লার্ভা মরে যায়। বর্তমানে দেশব্যাপী ডেঙ্গুর প্রকোপ কমাতে মশক নিধন কর্মসূচি পরিচালিত হলেও, মুষলধারে বৃষ্টিতে লার্ভা ধুয়ে মুছে গেলে মশা কম জন্মাবে। ফলে ধীরে ধীরে হ্রাস পাবে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা।
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, ডেঙ্গুর প্রকোপ কমাতে ব্যাপক জনসচেতনার বিকল্প নেই। তিনি বলেন, এডিস মশার উৎপত্তিস্থল আপনার আমার বাড়ি ঘর আঙ্গিনার কোথাও স্বচ্ছ পানি জমতে না দিলে, এডিস মশার ডিম, পিউপা, লার্ভা ও মশা জন্মাবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এমইউ/এমএসএইচ/জেআইএম
Advertisement