দেশজুড়ে

পাটের দাম পাচ্ছেন না মেহেপুরের চাষিরা

পাটের আঁশের স্থায়ীত্ব কম এবং রং খারাপ হওয়ায় কাঙ্খিত বাজার দর পাচ্ছেন না মেহেরপুরের কৃষকেরা। উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের প্রতি মণ পাট ১৮ থেকে ১৯শ টাকায় বিক্রি হলেও মেহেরপুরের পাট বিক্রি হচ্ছে ১৪ থেকে ১৫শ টাকা দরে। কৃষকরা বলছেন, কাদা মাটি দিয়ে পাট জাগ দেয়ায় এখানকার পাটের রং কালো হচ্ছে। ফলে ব্যবসায়ীরা এ পাট বেশি দামে কিনতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। কী পদ্ধতিতে পাট জাগ দিলে পাটের রং ভাল হবে সেটাও জানা নেই তাদের।জানা গেছে, কৃষি সম্প্রসারণ অধিফতরের হিসেবে মেহেরপুর জেলায় এবার পাটের আবাদ হয়েছে ২৩ হাজার ৩৯৫ হেক্টর জমিতে। যা থেকে ৭০ হাজার ১৮৫ মেট্রিক টন পাট উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু উৎপাদিত পাট থেকে কাঙ্খিত অর্থ পাচ্ছেন না কৃষকেরা। উত্তর-দক্ষিণবঙ্গের পাট বেশি দামে বিক্রি হলেও সে তুলনায় এ জেলার পাটের দাম অনেক কম। বদ্ধ পানিতে কাদা মাটি দিয়ে পাট জাগ দেয়ার ফলে এখানকার পাটের রং কালো হয়। ফলে ব্যাবসায়ীরা বেশি দামে কিনতে চায় না কৃষকের পাট। কৃষকদের অভিযোগ, বছরের পর বছর ধরে এ ধরনের সমস্যা থাকলেও সমস্যা সমাধানে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগ নেয়া হয় না। বাপ দাদার আমল থেকে দেখে আসা পদ্ধতিতে পাট জাগ দিয়ে আসছেন তারা। কারও কারও পাটের রং ভাল হলেও সেই একই দরে পাট বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। ফলে পাট জাগের ক্ষেত্রে বেশি পরিশ্রম বা বাড়তি অর্থ খরচ করতে চায় না কৃষক। তবে ব্যবসায়ীরা ভাল রংয়ের পাটগুলো ঠিকই গ্রেডিং করে বেশি দামে বিক্রি করছে। মাঝখান থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কৃষক।মেহেরপুরের পাট চাষিরা জানিয়েছেন, সাধারণত গম আবাদের পর কিছুদিন জমে পড়ে থাকে। এ সময় কৃষকরা পাটের চাষ করে থাকে। বিঘা প্রতি জমিতে ৮ থেকে ১০ হাজার খরচ হলেও পাট বিক্রি করে জমে ১১ থেকে ১২ হাজার টাকা। শুধুমাত্র পাট খড়ির জন্য তারা পাটের আবাদ করে থাকেন। যা জ্বালানি হিসেেে ব্যবহার করা যায়।ব্যবসায়ীরা বলছেন, সোনালি আঁশ বলতে যে পাট সেটি উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গে পাওয়া যায়। সেখানে গ্রেড অনুযায়ী পাট কেনা হয়। জুট মিলগুলোতে এসব পাটের চাহিদাও বেশি। ওই সকল এলাকার পাট মণ প্রতি ১৮০০ থেকে ১৯০০ টাকা দরে কিনছেন তারা। কিন্তু মেহেরপুর জেলার পাটের রং কালো, আঁশের স্থায়ীত্ব কম হওয়ায় এবং ময়েশ্চার বেশি থাকায় এখানকার পাট কিনে লোকসান গুণতে হয় তাদের। ফলে এখানকার পাটের বাজার দর মণ প্রতি ১৪০০ থেকে ১৫০০ টাকা।মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক এসএম মোস্তাফিজুর রহমান সমস্যার কথা স্বীকার করে জাগো নিউজকে বলেন, কাদামাটি দিয়ে পাট জাগ না দিয়ে পাটের জাগের উপর ইট অথবা পলিথিনে মাটি ভর্তি করে জড়িয়ে জাগের উপর দিতে হবে। এছাড়াও দুই দিকে বাঁশ পুঁতে দড়ি দিয়ে টেনে পাটের জাগ পানির নিচে রাখলে পাটের রং ভাল হবে। এতে কৃষকরা ন্যায্য মূল্য পাবেন।এসএস/এমএস

Advertisement