বৈরী আবহাওয়ায় পদ্মা নদী উত্তাল হয়ে ওঠায় মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি ও মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া নৌপথে সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
Advertisement
এ অবস্থায় ঘাট এলাকায় যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়। যাত্রী চাপ সামাল দিতে পরিবহনের স্থলে যাত্রী পারাপার করছে ফেরিগুলো। ফলে ঘাট এলাকায় দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা।
বুধবার সকাল থেকে পদ্মা নদীতে প্রবল স্রোত থাকায় লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়। দুপুর ১২টা থেকে আবহাওয়া আরও খারাপ হলে ফেরিসহ সব ধরনের নৌযান চলাচল সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করে ঘাট কর্তৃপক্ষ।
বিআইডব্লিউটিসি সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে বৈরী আবহাওয়ায় শিমুুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌপথের পদ্মা নদী উত্তাল হয়ে উঠলে নৌযান পারাপার বিলম্ব হচ্ছিল। ঝোড়ো হাওয়ার গতিবেগ বেড়ে গেলে রাত ১২টা থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। ঘাট এলাকায় যাত্রী চাপ বাড়তে থাকলে যাত্রী পারাপারের জন্য ফেরি চালু করা হয়।
Advertisement
এদিকে লৌহজং টার্নিংয়ের বিকল্প চ্যানেলটি সরু হওয়ার কারণে যাত্রী পারাপারে দীর্ঘসময় লাগছিল। নদীর পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ায় বুধবার দুপুর ১২টা থেকে আবারও সব ধরনের ফেরি চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।
এ অবস্থায় ঘাট ও ফেরিগুলোতে হাজার হাজার যাত্রী আটকে পড়ে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েন। অচল অবস্থার কারণে আগেভাগে বাড়ি রওনা দেয়া দক্ষিণাঞ্চলের ঘরমুখো যাত্রীরা দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন সবচেয়ে বেশি।
ফেরিঘাট সূত্র জানায়, উভয় ঘাটে সহস্রাধিক গরুর ট্রাকসহ যানবাহনের দীর্ঘ সারি রয়েছে। আবহাওয়ার কারণে ফেরি বন্ধ রাখলেও ঘাট এলাকায় যাত্রীদের অনুরোধে কিছু ফেরি যাত্রী পারাপার করছে। ঢাকামুখী অসংখ্য গরুবোঝাই ট্রাক আটকে পড়েছে কাঁঠালবাড়ি ঘাটে। দীর্ঘসময় ঘাটে আটকে অসুস্থ হয়ে পড়ছে কোরবানির পশুগুলো। অসুস্থ হয়ে কাউসার মিয়া নামে এক ব্যবসায়ীর একটি গরু মারা যায়। সেই সঙ্গে গরু নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।
বরিশাল থেকে ঢাকাগামী যাত্রী সাকিবুল হাসান বলেন, ঢাকায় জরুরি কাজ রয়েছে। বাড়ি থেকে বুধবার সকালে রওনা হয়েছি। দুপুর ১২টার ঘাটে পৌঁছেছি। কিন্তু কাঁঠালবাড়ি ঘাটে লঞ্চ, স্পিডবোট চলাচল বন্ধ থাকায় পদ্মা পার হতে পারছি না। ফেরিতে যাওয়ার কোনো উপায় দেখছি না। ফেরি চলছে সীমিত।
Advertisement
বিআইডব্লিউটিসির কাঁঠালবাড়ি ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক মো. আব্দুস সালাম বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে নদীতে প্রবল স্রোত। এ অবস্থায় নৌপথে দুর্ঘটনা এড়াতে সকাল থেকে কোনো লঞ্চ ও স্পিডবোট ছাড়া হয়নি। সকালে দুটি ফেরি ছাড়া হলেও আবহাওয়া বেশি খারাপ হলে দুপুরে ফেরিসহ সব নৌযান চলাচল সাময়িক বন্ধ করা হয়। তবে ঘাটে যাত্রী চাপ সামাল দিতে সীমিত আকারে যাত্রীদের অনুরোধে ফেরিতে করে অল্প অল্প যাত্রী পারাপার করা হচ্ছে।
শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আসাদুজ্জামান বলেন, প্রবল বাতাস থাকায় মাঝ নদীতে বড় বড় ঢেউয়ের সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় নৌযান চলাচল করলে যেকোনো সময় বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই নৌযান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গরুবোঝাই ট্রাক ও যাত্রী পারাপার করা হবে।
এ কে এম নাসিরুল হক/এএম/এমএস