কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে জয়পুরহাটের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে চোরাই পথে ভারতীয় গরু আসা শুরু করেছে। ফলে ভারতীয় গরুতে সয়লাব হয়ে গেছে পশুরহাট। আর এতে করে বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় খামারিরা।জানা গেছে, জয়পুরহাটসহ দেশের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে জেলার কোরবানির বাজারে ভারতীয় গরু আসায় গতবারের তুলনায় এবার প্রতিটি দেশীয় গরু বিক্রি করতে হচ্ছে ৭ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা কমে। আর এ কারণে এখানকার হাট-বাজারগুলোতে দেশীয় গরু বিক্রি করতে হিমশিম খাচ্ছেন স্থানীয়রা। জয়পুরহাট সদর উপজেলার শ্যামপুর গ্রামের আফছার আলী, বামনপুর গ্রামের মজিবুর রহমান, আমদই গ্রামের ছবির উদ্দিনসহ বেশ কয়েকজন খামারির সঙ্গে কথা হয় নতুনহাট গো-হাটি বাজারে। তারা বলেন, কোরবানিকে সামনে রেখে জয়পুরহাটসহ বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে আসা ভারতীয় গরুতে ছেয়ে গেছে জয়পুরহাটের হাট-বাজার। ফলে স্থানীয় খামারীরা বিপাকে পড়েছেন। স্থানীয় হাট-বাজারগুলোতে বিক্রি ছাড়াও এখানকার হাট-বাজার থেকে কিনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। এসব গরু দেশে আসার কারণে বাজার বেশ স্থিতিশীল বলে জানান ভারতীয় গরু ব্যাবসায়ীরা। চট্টগ্রামের বাছেদ আলী, সিলেটের আব্দুর রহিম, গাইবান্ধার কামাল হোসেনসহ বেশ কয়েকজন গরু ব্যবসায়ী জাগো নিউজকে জানান, ভারত থেকে গরু আসার কারণে গরুর বাজার দর কিছুটা কম। তবে এ কারণে এক দিকে ব্যবসায়ীরা লাভবান হচ্ছেন, অন্যদিকে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের কোরবানি দাতারা অল্প মূল্যে তাদের পছন্দসই কোরবানির পশু কিনতে পারছেন। জয়পুরহাটের দরিদ্র, গৃহস্থ পরিবার ও ছোট ছোট গরু খামারীরা কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে সারা বছর দেশীয় গরু পালন করেন একটু লাভের আশায়। তবে দেশের বিভিন্ন সীমান্ত হয়ে জয়পুরহাটের হাট-বাজারগুলোতে ভারত থেকে গরু আসায় বেশ বিপাকে পড়েছেন দেশীয় গরুর খামারিরা। এ ব্যাপারে জেলা প্রাণি সম্পদ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. রুস্তম আলী জাগো নিউজকে জানান, জেলায় ৬০২টি গরুর খামারসহ প্রায় ১১ হাজার কৃষক গরু পালন করছেন। চলতি বছরের হিসেব মতে, জেলার এসব খামারি ও কৃষক পরিবার ২ লাখ ৬৮ হাজার ৩ শত গরু পালন করছেন। এর মধ্যে একটি বড় অংশই কোরবানির বাজারে গরু বিক্রি করে লাভের আশা করেন। তবে ভারতীয় গরু বিষয়ে কোনো মন্তব্য না করে তিনি আরো বলেন, জেলায় যে পরিমাণ গরু আছে, তাতে গরু পালনকারী কৃষক ও খামারিদের লাভের পাশাপাশি ক্রেতাদের সামর্থ্য সব মিলিয়ে বাজারে ভারসাম্য বজায় থাকত। জয়পুরহাট-৩ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্নেল আব্দুর রাজ্জাক তরফদার জাগো নিউজকে বলেন, বিজিবির কঠোর অবস্থানের কারণে এ সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে গরু আসা বন্ধ রয়েছে। তবে বিচ্ছিন্ন দু একটি ঘটনা ঘটলেও খবর পাওয়া মাত্র ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।ভারত থেকে গরু আসা বন্ধ করা না গেলে দেশীয় গরু পালনে বিরূপ প্রভাব পড়ার আশঙ্কা করছেন জেলার গরু খামারি ও গরু পালনকারী কৃষকরা।এসএস/এমএস
Advertisement