দেশে প্রথমবারের মতো বিভাগীয় ও জেলা শহরের পাশাপাশি ৮৬ উপজেলায় একযোগে আয়কর মেলা অনুষ্ঠিত হবে। ফলে ষষ্ঠবারের মতো আয়োজিত এ আয়কর মেলা হবে এ যাবৎকালের সর্ববৃহৎ। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এবিআর) চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান এ কথা জানান।নজিবুর রহমান বলেন, আয়কর আদায় বাড়াতে জনসচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়োজন। আর এ উদ্দেশ্য নিয়ে এনবিআর জাতীয় আয়কর দিবস ও আয়কর মেলা উদযাপন করছে। কর পরিসর বৃদ্ধি করতে এবারই প্রথমবারের মতো ৮৬ উপজেলায় আয়কর মেলা অনুষ্ঠিত হবে।জাতীয় আয়কর দিবস উদযাপনের পাশাপাশি ২০১০ সাল থেকে ১৬ থেকে ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিভাগীয় শহরে সাতদিনব্যাপি আয়কর মেলার আয়োজন করছে এনবিআর। এবছর জেলা শহরে চারদিন ও প্রথমবারের মতো ২৯টি উপজেলায় দুইদিন এবং ৫৭টি উপজেলায় একদিনের ভ্রাম্যমাণ আয়কর মেলা অনুষ্ঠিত হবে। আজ (মঙ্গলবার) রাজধানীর অফিসার্স ক্লাবে আয়োজিত ‘আয়কর মেলা-২০১৫’ উদ্বোধন করবেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু।রাজধানীসহ বিভাগীয় ও জেলা শহরের পাশাপাশি যে ৮৬ উপজেলায় আয়কর মেলা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সেগুলো হলো ঢাকার সাভার ও আশুলিয়া, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ ও আড়াইহাজার, গাজীপুরের শ্রীপুর, কালীগঞ্জ, কালিয়াকৈর ও কাপাসিয়া, টাঙ্গাইলের মির্জাপুর, মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর ও সাটুরিয়া, নরসিংদীর মাধবদী, পলাশ, মনোহরদী, রায়পুরা ও শিবপুর, মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর ও টঙ্গীবাড়ি, গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া ও মুকসুদপুর, রাজবাড়ির পাংশা, ফরিদপুরের বোয়ালমারী, ভাঙ্গা ও সদরপুর, মাদারীপুরের রাজৈর ও শিবচর, শরীয়তপুরের জাজিরা ও নড়িয়া, চট্টগ্রামের হাটহাজারী, রাউজান, লোহাগাড়া, চন্দনাইশ, পটিয়া, সীতাকুণ্ড, সাতকানিয়া, বোয়ালখালী ও আনোয়ারা, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ, লক্ষ্মীপুরের রায়পুর, চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাডিয়ার আশুগঞ্জ, ফেনীর দাগনভূঞা, কক্সবাজারের চকরিয়া ও টেকনাফ, সুনামগঞ্জের ছাতক, হবিগঞ্জের মাধবপুর, মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল, সিলেটের গোলাপগঞ্জ ও বালাগঞ্জ, নীলফামারীর সৈয়দপুর, ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ, রংপুরের বদরগঞ্জ, দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ ও ফুলবাড়ি, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ, বগুড়ার দুপচাঁচিয়া, শেরপুর ও গাবতলী, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর, রাজশাহীর ভবানীগঞ্জ ও বাঘা, চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ, পাবনার ঈশ্বরদী, সাথিয়া ও কাশিনাথপুর, নওগাঁর মহাদেবপুর, নাটোরের সিংড়া, পটুয়াখালীর খেপুপাড়া ও গলাচিপা, পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি, ভোলার লালমোহন, ঝালকাঠির নলছিটি, কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ, যশোরের ঝিকরগাছা ও নোয়াপাড়া, বাগেরহাটের মংলা, সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ, নেত্রকোণার কেন্দুয়া, কিশোরগঞ্জের ভৈরব ও হোসেনপুর, জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ, ময়মনসিংহের ভালুকা ও মুক্তাগাছা এবং শেরপুরের নালিতাবাড়ি।২০১০ সাল থেকে এনবিআর কর প্রদানে উৎসাহিত করতে আয়কর মেলা চালু করে। প্রথম দিকে ঢাকা ও চট্টগ্রামে ওই মেলা আয়োজন করা হয়। পরবর্তীতে জেলা পর্যায়ে মেলা সম্প্রসারণ করা হয়। মেলায় বড় অংকের রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যে কর তথ্য ও সেবা, ই-টিআইএন রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা করা হয়।এবারের আয়কর মেলায় ১৭২টি বুথ থাকবে। এর মধ্যে বৃহৎ করদাতা, প্রতিবন্ধী, সিনিয়র সিটিজেন, মুক্তিযোদ্ধা ও নারীদের জন্য পৃথক বুথ থাকবে। ৫৬টি হেল্প ডেস্ক, সোনালী ও জনতা ব্যাংকের ছয়টি বুথ থাকবে। ব্যাংকের বুথের মাধ্যমে করদাতা তৎক্ষণাৎ কর পরিশোধ করতে পারবেন।এছাড়া করদাতাদের সুবিধার্থে এ বছরই প্রথম আয়কর মেলায় শুল্ক, ভ্যাট ও জাতীয় সঞ্চয় পরিদফতরের পৃথক বুথ থাকছে আয়কর মেলায়।সর্বশেষ ২০১৪ সালের পঞ্চমবারের মতো আয়োজিত মেলায় এক হাজার ৬৭৫ কোটি ৩০ লাখ ৭৩ হাজার ৪৫১ টাকার আয়কর আদায় করে প্রতিষ্ঠানটি। ওই মেলায় প্রায় সাড়ে ছয় লাখ করদাতাকে সেবা প্রদান করা হয়।এসআই/বিএ
Advertisement