আইন-আদালত

হাইকোর্টে মিন্নির জামিন শুনানি পেছাল

বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী থেকে আসামি আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির জামিন আবেদনের ওপর শুনানি না করে নতুন করে বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিন ঠিক করেছেন হাইকোর্ট।

Advertisement

মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) শুনানির নির্ধারিত দিনে আদালত মিন্নির আইনজীবীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, এ মামলায় জামিনের বিষয়ে শুনতে অনেক সময় লাগবে। আমরা যদি আজ (মঙ্গলবার) এ মামলা শুনানি করি তাহলে অন্য মামলাগুলো শোনার সময় পাব না। তাই এ মামলা শুনানির জন্য আমরা সপ্তাহের শেষ দিন রাখলাম।

হাইকোর্টের বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ দিন ঠিক করে আদেশ দেন। এ সময় আদালতে মিন্নির জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী জেড আই খান পান্না এবং তার সঙ্গে ছিলেন আইনুন নাহার সিদ্দিকা, মাক্কিয়া ফাতেমা ইসলাম ও জামিউল হক ফয়সাল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রেজাউল করিম।

এছাড়া মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোরও এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এর আগে সোমবার (৫ আগস্ট) জামিন শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজকের (৬ আগস্ট, মঙ্গলবার) দিন ঠিক করেছিলেন।

Advertisement

ওই দিন শুনানিতে মিন্নির পক্ষে আইনজীবী জেড আই খান পান্না আদালতকে বলেন, ‘এটি খুবই দুঃখজনক একটি ঘটনা। এ মামলায় আমি চাক্ষুষ সাক্ষী অথচ মামলার ১২ নম্বর আসামির বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আমাকে আসামি করা হয়েছে। অবশ্যই এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মামলা।’

এ পর্যায়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আদালতের কাছে সময় আবেদন করে বলেন, ‘এ মামলায় অ্যাটর্নি জেনারেল বক্তব্য রাখবেন। এ জন্য সময় প্রয়োজন।’ পরে এ জামিনের বিষয়ে শুনানির জন্য মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) দিন ঠিক করেন আদালত। আজ তা শুনানি না করে আদালত নতুন করে দিন ঠিক করে আদেশ দিলেন।

এর আগে সোমবার (৫ আগস্ট) সকালে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় মিন্নির পক্ষে জামিন চেয়ে আবেদন করেন তার বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর।

গত ২৬ জুন সকাল সাড়ে ১০টায় বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে রামদা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে রিফাত শরীফকে। তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি হামলাকারীদের সঙ্গে লড়াই করেও তাদের দমাতে পারেননি। গুরুতর আহত রিফাতকে ওইদিন বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ ঘটনায় রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ ও পাঁচ-ছয়জনকে অজ্ঞাত আসামি করে বরগুনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

Advertisement

এরপর গত ১৬ জুলাই সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বরগুনার মাইঠা এলাকার বাবার বাসা থেকে বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোরসহ মিন্নিকে জিজ্ঞাসাবাদ ও তার বক্তব্য রেকর্ড করতে বরগুনা পুলিশ লাইন্সে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর দীর্ঘ ১০ ঘণ্টার জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাত ৯টায় মিন্নিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

আলোচিত এ হত্যা মামলায় এখন পর্যন্ত ১৫ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এদের মধ্যে মিন্নিসহ ১৫ জন অভিযুক্তই রিফাত হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এ মামলার প্রধান অভিযুক্ত নয়ন বন্ড ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন। এছাড়া মামলার এজাহারভুক্ত চার আসামি এখনও পলাতক।

এফএইচ/আরএস/পিআর